চাঁপাই সীমান্তে আবারো বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী আহত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে আবারো ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশী আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার তেলকুপি সীমান্তে ওই ব্যক্তিকে গুলি করা হয়। বিজিবি ৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আহত বাংলাদেশীর নাম হাবিল উদ্দীন। তিনি একই উপজেলার তেলকুপি গ্রামের বেলাল উদ্দীনের ছেলে। তার বয়স প্রায় ২৫ বছর।
বিজিবি ও স্থানীয়রা জানান, রাতে হাবিলসহ ৭-৮ জন বাংলাদেশী তেলকুপি সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন হাবিল। তার পিঠে গুলি লেগেছে। হাবিলকে চিকিৎসার জন্য গতকাল শনিবার ভোরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাবিলের পরিবারের সদস্যরা জানান, হাবিল চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ত নন। সীমান্তসংলগ্ন গম ক্ষেতে সেচ দিতে গেলে বিএসএফ সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
হাবিলের সাথে থাকা তার ভাবি সুলেখা খাতুন বলেন, আমার দেবর কৃষিকাজ করেন। কৃষিকাজের জন্যই সীমান্তসংলগ্ন জমিতে যান। তাকে ভোর ৫টার দিকে গুলি করা হয়। রাতে সে বাড়িতেই ছিল। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ ডা: শংকর কে বিশ্বাস বলেন, হাবিলের শরীরে গুলি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করা হয়েছে। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বর্তমানে সে আশঙ্কামুক্ত।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ বিজিবির ৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, রাত সাড়ে ৩টার দিকে সীমান্তের ওপারে দুই থেকে তিন রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা গেছে। এ ব্যাপারে তারা সকালে পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফকে আহ্বান জানান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সীমান্তের ১৮০ নম্বর পিলারসংলগ্ন এলাকায় বিজিবি-বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ের পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠক উদ্ধৃত করে বিজিবি অধিনায়ক বলেন, রাত সাড়ে ৩টার পরে সাত-আটজন বাংলাদেশী চোরাচালানি ঘন কুয়াশার সুযোগে ভারতে প্রবেশ করে। সীমান্ত থেকে ১৫০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে বিএসএফ। এতে হাবিল আহত হয়েছেন।
হাবিলের ভাবি সুলেখা খাতুনের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, হাবিল চিহ্নিত চোরাকারবারি। আর রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে তেলকুপি বিওপির দায়িত্বপূর্ণ ৫ কিলোমিটার এলাকায় বাংলাদেশী কোনো কৃষক অবস্থান করছিলেন না। ওই এলাকায় বিওপি কমান্ডারের নেতৃত্বে বিজিবির দু’টি দল টহল দিচ্ছিল। তবে পতাকা বৈঠকে বিএসএফের গুলি চালানোর ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে বলে দাবি করেন বিজিবি অধিনায়ক।