উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারে বিআইআইটির ২৮ প্রস্তাবনা
- ঢাবি প্রতিনিধি
- ২৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার পুনর্গঠনের মাধ্যমে একটি শিক্ষিত, নৈতিক এবং দক্ষ প্রজন্ম গড়ে তোলার লক্ষ্যে উচ্চ শিক্ষার আমূল সংস্কারসহ শিক্ষা কমিশন গঠনে ২৮ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট (বিআইআইটি)।
গতকাল বিকেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান বিআইআইটির মহাপরিচালক, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি), ওআইসির ভিজিটিং প্রফেসর মুহাম্মদ আবদুল আজিজ।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিআইআইটির ডেপুটি ডিরেক্টর ড. সৈয়দ শহীদ আহমেদ, বিআইআইটির কো-অর্ডিনেটর আনিসুর রহমান এরশাদ, বিআইআইটির সিনিয়র অ্যাসিসটেন্ট ডিরেক্টর মো: লোকমান হোসাইন। এতে শিক্ষানীতি সম্পর্কিত ১০টি, পাঠ্যক্রমসংক্রান্ত ৪টি, শিক্ষক প্রশিক্ষণসংক্রান্ত ২টি, মূল্যায়নসংক্রান্ত ২টি, ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত ৩টি, বিবিধ ৭টিসহ মোট ২৮টি প্রস্তাবনা পেশ করা হয়।
শিক্ষানীতিসংক্রান্ত প্রস্তাবনাগুলো হলো ১. জাতীয় আশা-আকাক্সক্ষা ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে শিক্ষাদর্শন, ভিশন-মিশন, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য ঠিক করতে হবে। দেশীয় সত্তা ও মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিয়ে, কল্যাণমুখী রাষ্ট্র বিনির্মাণে, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধসম্পন্ন, দক্ষ এবং ভালো মানুষ গড়ে তোলাই প্রাধান্য পাওয়া উচিত জাতীয় শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে। ২. শিক্ষায় যেকোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে শহর-গ্রামীণ ভেদাভেদ দূর করে ভারসাম্যপূর্ণ উদ্যোগ নিতে হবে। ৩. বিগত বছরগুলোতে উচ্চশিক্ষিত বেকারদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বিধায় উচ্চশিক্ষার মান ধরে রাখার জন্য সংখ্যা না বাড়িয়ে গুণগত মানের দিকে নজর দেয়া উচিত। এ লক্ষ্যে ঢাকা ও জেলার পরিবর্তে বিভাগীয় শহরে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন/অনুমোদন দেয়া যেতে পারে। জেলায় জেলায় প্রতিষ্ঠিত সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব কলেজে অনার্স-মাস্টার্স খোলায় উচ্চশিক্ষার অবনতি ঘটেছে, সেসব বন্ধ করে দিতে হবে। ৪. কারিগরি ধারায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করার জন্য কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সম্প্রসারণ, গবেষণা কার্যক্রম এবং শিক্ষা মানোন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ লক্ষ্যে জেলায় জেলায় প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে কারিগরি শিক্ষার বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা উচিত।
৫. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বাছাইকৃত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে রিসার্চ বেজড ইউনিভার্সিটিতে উন্নীত করা যায়। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ৬০% টিচিং বেজড ও ৪০% রিসার্চ বেজডে উন্নীত করা। ৬. কৃষিনির্ভর দেশ বিবেচনায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করার পাশাপাশি উন্নত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ব্যাপক ভিত্তিতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে। ৭. জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো অ্যাফিলিয়েটিং ইউনিভার্সিটির মান কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা, যাতে যত্রতত্র কলেজ-মাদরাসা গড়ে উঠতে না পারে এবং দক্ষ গ্র্যাজুয়েট বের হতে পারে। ৮. সব স্তরের শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের মাধ্যমে শিক্ষকদের উপযুক্ত বেতন ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া মেধাবীরা যাতে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, এ লক্ষ্যে জেএসসি, পিএসসির আদলে ‘এডুকেশন সার্ভিস কমিশন’ (ইএমসি) গঠন করতে হবে, যা অন্যান্য কর্মক্ষেত্রের তুলনায় সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং বৈষম্যবিহীন হবে। ৯. ১ম-৪র্থ আন্তর্জাতিক মুসলিম শিক্ষা সম্মেলনে গৃহীত (১৯৭৭-১৯৮৩) এবং ওআইসির উদ্যোগে মক্কা ডিক্লেয়ারেশনে বাংলাদেশ একটি স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে গৃহীত সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের অঙ্গীকারবদ্ধ, যা বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা