২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৩ রজব ১৪৪৬
`

খোলাবাজার থেকে ‘বিনামূল্যের’ ১০ হাজার বইসহ গ্রেফতার ২

-


নতুন বছরের প্রথম মাস পেরিয়ে গেলেও সারা দেশে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছাতে না পারার মধ্যেই প্রায় ১০ হাজার বই খোলাবাজারে বিক্রি করতে নিয়ে গেছে একটি চক্র। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর সূত্রাপুরের বাংলাবাজার ইস্পাহানি গলির বিভিন্ন গোডাউনে অভিযান চালিয়ে জব্দ করা এসব বই প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের। এ ঘটনায় জড়িত চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন- ৫৫ বছর বয়সী সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল ও ৫৬ বছর বয়সী দেলোয়ার হোসেন। এ দু’জন ছাড়াও এমন আরো বেশ কয়েকটি চক্রের তথ্য ডিবির কাছে রয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারে ডিবির তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, নতুন বছরের প্রথম দুই দিনে ৪১ কোটি বইয়ের মধ্যে ১০ কোটি বই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এনসিটিবি। বাকি বই ৩০ জানুয়ারির মধ্যেই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়ার আশা করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সব বই না পাওয়া পর্যন্ত এনসিটিবির ওয়েবসাইটে আপলোড করা বইয়ের পিডিএফ কপি নিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, একটি চক্র বাংলাবাজারের ইস্পাহানি গলিতে বিভিন্ন গোডাউনে প্রথম থেকে দশম শ্রেণীর বিনামূল্যে বিতরণের সরকারি পাঠ্যবই বিক্রয়ের উদ্দেশে মজুদ করা হয়েছে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে দুই ট্রাক বই জব্দ। জব্দ করা বইগুলোর মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীর প্রায় ১০ হাজার কপি রয়েছে। তিনি বলেন, জব্দ করা বইগুলোর বিষয়ে আদালতকে ‘অবগত’ করা হবে, আদালতের ‘নির্দেশনা’ অনুযায়ী এনসিটিবিকে হস্তান্তরের কথাও জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বইগুলো পরিবহনের জন্য যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়, তাদের একটা চক্র বইগুলো নিয়ে যায়। এরপর অতিরিক্ত বইগুলো এনে খোলা বাজারে বিক্রি করে দেয় বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি।’
অতিরিক্ত বই ছাপানোর সুযোগ রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ১১৬টি প্রেসে বই ছাপানো হয়। ঢাকার বাংলাবাজার এবং ঢাকার বাইরেও কয়েকটি প্রেসে ছাপানো হয়। অতিরিক্ত বই ছাপানোর সুযোগ আছে কি না বিষয়টা তদন্তাধীন।
এনসিটিবি অথবা মাউসির কেউ জড়িত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এনসিটিবির গোডাউন রয়েছে একটা তেজগাঁও ও আরেকটা টঙ্গীতে। সেখানেই বইগুলো সংরক্ষণ করা হয়, এর বাইরে কোথাও সংরক্ষণের সুযোগ নেই। ভেতরের কারো সংশ্লিষ্টতা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গ্রেফতার সিরাজুল ইসলাম উজ্জ্বল ১০ বছর আগে একই অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন জানিয়ে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, এবার তার গোডাউন থেকেই বইগুলো উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি ১০-১২ টাকা করে বইগুলো কিনে ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি করে আসছিল। বিতরণ ও পরিবহনের অনিয়মে কার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন আরো কিছু নাম আমরা পেয়েছি। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া আরো কিছু জায়গায় বিনামূল্যের এসব বই বিক্রির তথ্য পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত ও নিয়মিত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement