২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯ মাঘ ১৪৩১, ২২ রজব ১৪৪৬
`

রাজউকের ২০ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা জাপান সফরে

ফাইল জট সৃষ্টির আশঙ্কা
-

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ২০ গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা এক সাথে জাপান গেছেন। উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণের মতো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ডেস্কের দুই পরিচালকই এখন জাপানে। তাদের সাথে আছেন আরো ১৮ জন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, এত কর্মকর্তা এক সাথে বিদেশ ভ্রমণে যাওয়ায় রাজউকের কাজে স্থবিরতা দেখা দেবে। কারণ উন্নয়ন-নিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাথে সংশ্লিষ্ট আছেন অথরাইজড অফিসাররা। এমনিতেই সরকারি এই অফিসের বদনামের শেষ নেই। এখানে কোনো সেবা-ই সময় মতো পাওয়া যায় না। একটি ফাইল অনুমোদন পেতে মাসের পর মাস চলে যায়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো সেবাগ্রহীতা রাজউকের সেবা পেয়েছেন এমন রেকর্ড নেই বললেই চলে। সেবাগ্রহীতারা বলেন, রাজউক একটি ফাইল জটের অফিস। এত অফিসার এক সাথে বিদেশ সফরে যাওয়ায় ফাইল জট আরো বাড়বে।

কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জাপানে যাওয়া কর্মকর্তার সংখ্যা ২০ জন বললেও রাজউকের সংশ্লিষ্ট অফিস অবশ্য বলছে, তথ্যটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে জাপানে একটি প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ থেকে মোট ১৫ জন প্রকৌশলী গিয়েছেন। এ ব্যাপারে রাজউকের সদস্য (উন্নয়ন-নিয়ন্ত্রণ) মোহা: হারুন-অর-রশীদ জানান, জাপানে প্রশিক্ষণে যারা গেছেন তাদের মধ্যে রাজউকের কর্মকর্তা ১০ জন। অন্য পাঁচজনের মধ্যে দু’জন সরকারি অর্থাৎ মন্ত্রণালয় থেকে, দু’জন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের এবং অন্য একটি পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণে গিয়েছেন একজন। কী প্রশিক্ষণে অফিসাররা জাপান গিয়েছেন, জানতে চাইলে তিনি জানান, ভূমিকম্প ও অগ্নিদুর্ঘটনার ব্যাপারে শিখতে গেছেন। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি-জাইকার আমন্ত্রণে তারা গেছেন। এখানে রাজউকের কোনো খরচ নেই, সম্পূর্ণ খরচ জাইকা বহন করবে। এত অফিসার কেন এক সাথে জাপান গেছেন, তাদেরকে কি আরো ছোট গ্রুপে পাঠানো যেত নাÑ এমন প্রশ্নে তিনি জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে জাইকার ভূমিকম্প ও অগ্নিদুর্ঘটনা সংক্রান্ত কোর্সটির সময়সীমা শেষ হয়ে যাবে। যেহেতু জাইকার অর্থায়নেই এই প্রশিক্ষণ সে কারণে রাজউক থেকে ১০ জন কর্মকর্তা পাঠানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে একজন প্রকৌশলী নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, এটা এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল না। রাজউক ইচ্ছা করলে আরো কম লোক পাঠাতে পারতো। ১০ জনই হোক অথবা ২০ জনই হোক যারা গেছেন তারা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে নিয়োজিত। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গেলে বিশেষ করে রাজউকের কাজ সংক্রান্ত সব ইঞ্জিনিয়ারই পড়াশোনাকালীনই ভূমিকম্প ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট অগ্নিদুর্ঘটনা সম্বন্ধে বিস্তর পড়েই পাস করে আসেন। এজন্য জাপানে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, এটা হলো জাপান ঘুরে আসা। আমরা যেমন বিদেশ সফরের সুযোগ কম পাই আবার বিদেশ সফরের সুযোগ পেলে আমরা কেউ হাতছাড়া করি না। কারণ সরকারি খরচে অথবা বিদেশের কোনো সংস্থার খরচে বিদেশ যেতে পারলে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বাড়তি কিছু ডলার পকেটে আসে। বিদেশ ঘুরে আসাও হলো আবার বিদেশ থেকে কিছু কিনে নিয়েও আসা হলো। এ ধরনের প্রশিক্ষণ না নিলেও তেমন কিছু আসে-যায় না।
ওই প্রকেশৗলী আরো বলেন, রাজউক ইচ্ছা করলে ভূমিকম্প ও অগ্নিদুর্ঘটনায় জাপানি বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষক ঢাকায় এনে আরো অনেককে প্রশিক্ষণ দিতে পারতো। জাইকাকে বললেই তারা এ ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিতে পারতো।
রাজউকের সদস্য মোহা: হারুন-অর-রশীদ জানান, জাইকার প্রশিক্ষণ আগামী ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। এরপর কর্মকর্তারা দেশে ফিরে আসবেন। যারা জাপান গেছেন তাদের কাজ করতে ওই সময়ের জন্য অধস্তনদের দায়িত্ব দেয়া আছে। রুটিন কাজগুলো দায়িত্বপ্রাপ্তরা করতে পারবেন। তারা জাপান গিয়েছেন বলে রাজউকের স্বাভাবিক কাজে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না।


আরো সংবাদ



premium cement