ভূমিদস্যুদের হামলায় সাংবাদিক আহত, ক্যামেরা ভাঙচুর
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৫৩
ঢাকার কেরানীগঞ্জে অবৈধভাবে ভরাট হওয়া টোটাইল বিলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) উচ্ছেদ অভিযানে হামলা চালিয়েছে স্থানীয় ভূমিদস্যুরা। এ সময় হামলাকারীদের ইটপাটকেল ও দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে বেসরকারি মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিক মাজহার মিলন, ক্যামেরা পারসন জহিরুল ইসলাম ও রাজউকের এসকেভেটর চালক আহত হয়েছেন। আহতরা ঢাকার কুর্মিটোলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কারণে ভূমিদস্যুদের আক্রমণের শিকার হয়েছেন সাংবাদিক ও রাজউক কর্মচারীরা।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় টোটাইল বিলে উচ্ছেদ অভিযানে যান রাজউকের একটি দল। তিন দিন আগে অবৈধভাবে ভরাট হওয়া বিলে উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে পুলিশ না থাকায় ভূমিদস্যুদের লোকজন জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে সেখানে আসেন শতরূপা হাউজিংয়ের কর্ণধার নুরুল মোমিন। তিনি মোবাইল ফোনে কথা বলে চলে যাওয়ার পর সেখানে পুলিশ আসে সাড়ে ১২টার দিকে। এরপর রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল ইসলামের উপস্থিতিতে অভিযান পরিচালনা করলে সন্ত্রাসীরা উচ্ছেদ অভিযানে এসে বাধা দেয়। একপর্যায়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই মাছরাঙা টেলিভিশনের সাংবাদিক মাজহার মিলনকে পেছন থেকে কিল-ঘুষিসহ ইটপাটকেল ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। একইভাবে ক্যামেরা পারসন জহিরুল ইসলামকে বেধম মারধরের পর ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। সেখান থেকে রাজউকের এসকেভেটর চালককেও মারধর করে।
আহত মাজহার মিলন জানান, গত কয়েক বছরে সবার চোখের সামনে ভরাট করা হয়েছে কেরানীগঞ্জের সবচেয়ে বড় জলাধার টোটাইল বিল। মাছরাঙা টেলিভিশনের অনুসন্ধানমূলক অনুষ্ঠান উন্মোচনে তিন পর্বে এই অবৈধ দখল এবং ভরাটের চিত্র উঠে আসে। শতরূপা হাউজিং এবং মিলেনিয়াম সিটি পুরো বিল ভরাটের পর এটি নিয়ে হাইকোর্টে রিট করে পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা। বিল ভরাটের প্রক্রিয়াকে অবৈধ ঘোষণা করে ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। ভরাট হওয়া বিলকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে তৎপর হয় কর্তৃপক্ষ। সকালে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে উচ্ছেদ অভিযানে যায় রাজউক। তবে সেখানে পুলিশ আসে অন্তত ঘণ্টা দেড়েক পর। এরই মধ্যে সেখানে আসেন শতরূপা হাউজিংয়ের কর্ণধার নুরুল মোমিন, ৫ আগস্টের আগে-পরে যার নেতৃত্বে ভরাট হওয়া বিলের বিক্রি চলছে, চলছে অবকাঠামো নির্মাণ। মোবাইল ফোনে তার নির্দেশনার পরপরই সেখানে জড়ো হতে থাকে কিছু লোকজন।
উচ্ছেদ শুরুর পরপরই মিলেনিয়াম সিটি এবং নুরুল মোমিনের লোকজন হামলা চালায় রাজউকের উচ্ছেদ দলের ওপর। মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রতিবেদনের কারণে এই উচ্ছেদ অভিযান- এমন অভিযোগ তুলে হামলা চালায় তাদের প্রতিবেদক ও ক্যামেরা ম্যানের ওপর। একপর্যায়ে অভিযান থামাতে বাধ্য হয় রাজউকের উচ্ছেদ দল। সেনাবাহিনীর সহায়তা ছাড়া উচ্ছেদ অভিযান প্রায় অসম্ভব। শিগগিরই ফের অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন রাজউক ম্যাজিস্ট্রেট।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা