২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯ মাঘ ১৪৩১, ২২ রজব ১৪৪৬
`

রোম থেকে আসা উড়োজাহাজে বোমা হামলার হুমকি

৬ ঘণ্টার অভিযানে কিছুই মেলেনি
-


ইতালির রোম থেকে ঢাকাগামী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি দেয়ার ঘটনায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘটে তুঘলকি কাণ্ড। গতকাল সকাল ৯টা ২০ মিনিটে ওই ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণ করে। তারপর বেলা ১টা ২০ মিনিটে প্রায় চার ঘণ্টা পর যাত্রীরা বিমানবন্দর থেকে বের হন।
একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফোন করে ওই ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি দেয়া হয়। এ ঘটনার পর বিজি-৩৫৬ নম্বর ফ্লাইটটি সকাল ৯টা ২০ মিনিটে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের জরুরি অবতরণ করে। এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় বোমা ডিসপোজাল ইউনিট প্লেনটির ভেতর প্রবেশ করে। পরে বিমানবন্দরে কর্মরত নিরাপত্তা সংস্থার কর্মকর্তারা যাত্রীদের নিরাপদে বের করে আনেন। সেই সাথে বিমানে তল্লাশি চালানো হয়। দীর্ঘ প্রায় ছয় ঘণ্টা এই অভিযান চললেও বোমাসদৃশ কিছুই পাওয়া যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভোরের দিকে বিমানবন্দরের কন্ট্রোল রুমে একটি বার্তা আসে। ওই বার্তায় বলা হয়, রোম থেকে আসা বাংলাদেশ বিমানের বিজি-৩৫৬ ফ্লাইটটিতে বোমা রাখা আছে। তা যেকোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এমন অবস্থায় কন্ট্রোল রুম থেকে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়।

এদিকে খবর পাওয়ার পরপরই বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ারভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া ও বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই বিমানবন্দরে ছুটে আসেন। সকাল ৯টা ৩৫ মিটিটে ফ্লাইটটি জরুরি অবতরণের পরপরই গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে বিমানবাহিনীর একটি দল, কুইক রেসপন্স ফোর্সসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ব্যাপক প্রস্তুতি নেন। পরে ফ্লাইটের ভেতর থেকে আড়াই শ’ যাত্রী ও ৯ ক্রুসহ সবাইকে নিরাপদে বের করে সরিয়ে নেয়া হয়।
এ ঘটনায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর চৌধুরী বলেছেন, আমাদের আভিযানিক কার্যক্রমের সময় বিমানবন্দরে রেড অ্যালার্ট জারি ছিল। আভিযানিক ওই কার্যক্রমের সময় কেউ যেন বিশৃঙ্খলা না ঘটাতে পারে সে জন্য আমরা সতর্ক ছিলাম।
গতকাল হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, বিস্ফোরক থাকার তথ্য প্রথম আসে এপিবিএনের কাছে। সেখান থেকে অপারেশন কন্ট্রোল রুমে জানানো হলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া শুরু করি। আমি এয়ার চিফকে বিষয়টি অবহিত করার পরপরই সেখান থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পেয়েছি। এ ছাড়াও অ্যাভসেকসহ বিমানবন্দরে কর্মরত অন্য সব সংস্থা অত্যন্ত আন্তরিকতা ও সাহসিকতার সাথে কাজ করেছে।

তিনি বলেন, যেকোনো ধরনের হুমকি এলে আমাদের এরকমই পদক্ষেপ নিতে হয়। আমাদের কাছে একজন যাত্রীর জীবন অনেক মূল্যবান। যদি ওই ফ্লাইটে একজনও যাত্রী থাকতো আমরা একই ধরনের পদক্ষেপ নিতাম। আমরা দীর্ঘ তল্লাশির পরও কোনো কিছুই পাওয়া যায়নি। প্রতিটি যাত্রী সহযোগিতা করেছেন। তাদের কোনো কিছু খোয়াও যায়নি। খুব সুন্দরভাবে এই কার্যক্রম আমরা পরিচালনা করেছি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, এপিবিএনের কন্ট্রোল রুমে পাকিস্তানি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে এই মেসেজ দেয়া হয়। এ বিষয়ে এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর চৌধুরী আরো বলেন, এ ধরনের তথ্য দিয়ে আমাদের একদিকে ব্যস্ত রেখে অন্যদিকে কেউ যেন কোনো অঘটন ঘটাতে না পারে, সে কারণে পুরো বিমানবন্দরজুড়ে রেড অ্যালার্ট জারি ছিল। এ সময় ইমিগ্রেশন-কাস্টম সবকিছুই সচল ছিল। ওঠানামাও স্বাভাবিক ছিল।
তিনি আরো বলেন, আমরা আমাদের এই বিমানবন্দরকে নিরাপদ রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যদিও কোনো কিছু পাওয়া যায়নি, তারপরও ঘটনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমাদের ব্যবস্থা রাখব।

 


আরো সংবাদ



premium cement