২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯ ফাল্গুন ১৪৩০, ২২ শাবান ১৪৪৬
`

শিশুর ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ কমাচ্ছে প্রথম প্রজন্মের ৩ অ্যান্টিবায়োটিক

প্রজন্ম ফাউন্ডেশনের গবেষণা
-

গুরুতর ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ থেকে ২ মাসের কম বয়সী শিশুদের জীবন বাঁচাতে প্রথম প্রজন্মের তিন অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে। এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সহায়তায় সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলা হাসপাতাল এবং জকিগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে শিশুদের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে এ তথ্য মিলেছে।
গবেষকরা বলেন, শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করে যে চিকিৎসা দেয়া হয় একই ধরনের ফল পাওয়া যায় বাড়িতে রেখে মুখে খাওয়ার ওষুধ দিলে। ফলে হাসপাতালে অবস্থানের ঝামেলা থেকে অভিভাবকরা মুক্তিপান এবং আর্থিক খরচও কমে যায়।
গবেষণার ফলাফল থেকে জানা যায়, দুই মাসের কম বয়সের শিশুর জ্বর হলে, শরীরের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) পর্যন্ত উঠলে, বুক দেবে গেলে, ঘন ঘন শ্বাস নিলে ও শ্বাসকষ্ট হলে ধরে নিতে হবে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণে ভুগছে। এ অবস্থায় মুখে খাওয়ার অ্যান্টিবায়োটিক দিলেই শিশু সুস্থ হয়ে যায়। ডব্লিউএইচও বা বাংলাদেশের চিকিৎসা গাইডলাইন অনুসারে, এ অবস্থায় শিশুকে হাসপাতালে রেখে দেয়া হতো এবং ইনজেক্টেবল অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হতো।

আবার উল্লেখিত লক্ষণগুলো থাকা শিশুর দেহে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি (৯৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) সেলসিয়াসে নেমে হাইপোথার্মিয়া হয়ে গেলে এবং খাওয়া বন্ধ করে দিলেও সে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণে ভুগছে বুঝতে হবে। এ ক্ষেত্রে শিশুকে সিআরপি (রক্তের প্রোটিন টেস্ট) টেস্ট করতে হয়। এই টেস্ট নেগেটিভ হলে শিশুকে হাসপাতালে দুইদিন ভর্তি রেখে ইনজেক্টেবল অ্যান্টিবায়োটিক দেয়ার পর তৃতীয় দিন বাসায়/বাড়িতে নিয়ে মুখে খাওয়ার অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হলেও সুস্থ হয়ে যাবে। বাংলাদেশে এক হাজার ২০৫ শিশুর ওপর প্রথম পরীক্ষাটি এবং দ্বিতীয়টি করা হয় ৮১৯ শিশুর ওপর। অবশ্য বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, নাইজেরিয়া ও তাঞ্জানিয়া এই ছয় দেশে প্রথম পরীক্ষাটি করা হয় মোট ৭ হাজার শিশু এবং দ্বিতীয়টি করা হয় ৫ হাজার ২৫০ শিশুর ওপর। এই ছয় দেশে একই ধরনের ফলাফল আসে।

শিশুদের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এমপিসিলিন, এমোক্সাসিলিন ও জেন্টামাইসিন ব্যবহার করা হয়। এ তিনটি প্রথম প্রজন্মের অর্থাৎ অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের প্রথম দিকে এ তিনটি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেই সব ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের বিরুদ্ধে চিকিৎসা দেয়া হতো। তবে নির্বিচার ব্যবহারের কারণে এগুলো রেজিস্ট্যান্ট হয়ে যায়। কিন্তু নতুন গবেষণায় এ তিনটি অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে বলে প্রমাণ হয়েছে। আমেরিকার জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির সাথে ডব্লিউএইচওর সহায়তায় পরীক্ষাটি চালিয়েছে প্রজন্ম ফাউন্ডেশন। রাজধানীর রেডিসন ওয়াটার ব্লু হোটেলে গতকাল এই গবেষণার ফলাফল উপস্থাপনা করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক মো: সায়েদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফরসহ নেতৃস্থানীয় চিকিৎসকরা।

 


আরো সংবাদ



premium cement