সীমান্ত সম্ভারে ৮ মিনিটে দিন-দুপুরে ১৫৯ ভরি স্বর্ণ চুরি

রাজধানীর ধানমন্ডির সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্সে স্বর্ণের দোকানে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা হলো- মো: রুবেল (২৮), সফিক ওরফে সোহেল (৩৫) ও সাদ্দাম হোসেন (৩১)। গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে কক্সবাজার ও কুমিল্লা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি লালবাগ বিভাগ। এ সময় তাদের কাছ থেকে চুরি করা সাড়ে ৫০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করা হয়। তবে এখনো ১০৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কারের হদিস পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় জড়িত আরো ৮-১০ জন পলাতক রয়েছে। গতকাল দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ডিবি দক্ষিণের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।
ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বলেন, গত ৩ জানুয়ারি আনুমানিক বেলা ১টায় ধানমন্ডি ২নং সড়কের বিজিবি সীমান্ত সম্ভার শপিং কমপ্লেক্সের গ্রাউন্ড ফ্লোরের ‘ক্রাউন ডায়মন্ড অ্যান্ড জুয়েলার্সে’ (দোকান নং ১৪ ও ১৫) চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই দোকানের মালিক কাজী আকাশ বাদি হয়ে ধানমন্ডি মডেল থানায় একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করেন অজ্ঞাত চোরেরা শোরুমের তালা কেটে ভেতরে ঢুকে বিভিন্ন ধরনের ১৫৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে নিয়ে গেছে। যার আনুমানিক মূল্য ২ কোটি ৫০ লাখ ২৮ হাজার ৮০০ টাকা।
যুগ্ম কমিশনার আরো বলেন, ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় দেখা যায়, দুবৃর্ত্তরা এক অভিনব পদ্ধতিতে শোরুমের সাটার কেটে ভেতরে ঢুকে মাত্র ৮ মিনিটের মধ্যে স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে পালিয়ে গেছে। ওই দলের একজন একটি চাদর দিয়ে দোকানের সামনে শেড তৈরি করে এবং অপর একজন দ্রুত সাটারের তালা কাটে। তৃতীয় এক ব্যক্তি শোরুমে ঢুকে ডিসপ্লে থেকে স্বর্ণালঙ্কার বের করে একটি হ্যাভারসেক ব্যাগে ভর্তি করে দ্রুত বের হয়ে আসে। এ ছাড়া আরো কয়েকজনকে শোরুমের চারপাশে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।
তিনি আরো বলেন, ভিডিও ফুটেজ থেকে নেয়া ছবির সাথে প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ এবং অন্যান্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ গত ৯ জানুয়ারি অভিযান চালিয়ে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম আসার পথে রুবেল নামে একজনকে হেফাজতে নেয়। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে পরে কুমিল্লার দেবীদ্বার বাজার সংলগ্ন নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোহেলকে হেফাজতে নেয়া হয়। এরপর তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লার মুরাদনগরের কোম্পানীগঞ্জ বাজারের একটি জুয়েলারি দোকান থেকে ২৮ ভরি ১৪ আনা চোরাই স্বর্ণালঙ্কার এবং ২১ ভরি ১০ আনা চুরি যাওয়া স্বর্ণালঙ্কারের গলিত স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। এ সময় সেখান থেকে সাদ্দাম হোসেন নামে আরো এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের আনুমানিক মূল্য ৭০ লাখ টাকা।
এ পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হলেও ৮-৯ জন এতে জড়িত। চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতার এবং চুরি যাওয়া অবশিষ্ট স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।