ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা খালেদা জিয়ার

বিদেশযাত্রার আগে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গত রাতে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতারা সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন বেগম জিয়া। এ উপলক্ষে গতকাল রাত সোয়া ৯টায় চেয়ারপারসনের গুলশানের বাসভবন ফিরোজায় বেগম জিয়াকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাতে যান দলটির শীর্ষ নেতারা। প্রায় আধঘণ্টা তারা সেখানে অবস্থান করেন। সাক্ষাৎকালে তারা বেগম জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। পরে বেগম জিয়ার বাসা থেকে বেরিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ম্যাডাম নির্দেশনা দিয়েছেন যে, এক সাথে কাজ করো, জনগণের পক্ষে কাজ করো, গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করো। তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আমাদের দেশের গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী জনগণের সবচাইতে প্রিয় নেত্রী চিকিৎসার জন্য আগামী ৭ জানুয়ারি রাতে লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। আমরা জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। সেই সাথে আমরা তার সাথে আলাপ করেছি, কথা বলেছি। পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করেছি আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ করে আবার আমাদের মাঝে, দেশের মানুষের মাঝে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন। গণতন্ত্রের জন্য আমাদের যে সংগ্রাম চলছে সেই সংগ্রামে আবারো তিনি যেন নেতৃত্ব দিয়ে সেই সংগ্রামকে সফল করতে পারেন। বাংলাদেশের মানুষেরও সেই প্রত্যাশা।

কবে নাগাদ বেগম জিয়া ফিরবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা চিকিৎসকরা বলতে পারেন। আমরা তো বলতে পারি না। আমরা আশা করি উনি চিকিৎসা শেষে খুব শিগগিই দেশে ফিরে আসবেন।
সাক্ষাৎকালে স্থায়ী কমিটির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড.আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, কিডনি সমস্যাসহ নানা স্বাস্থ্য জটিলতায় দীর্ঘদিন ভুগতে থাকা ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া মঙ্গলবার রাতে প্রথমে লন্ডনে তার ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে যাবেন।
লন্ডনে কয়েক দিন থাকার পর বিএনপি চেয়ারপারসন লিভারের উন্নত চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন। যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি হসপিটালের মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি কেয়ার ইউনিটে খালেদা জিয়া লিভার ট্রান্সপারেন্টের চিকিৎসা নেবেন। ইতোমধ্যে তার যাবতীয় চিকিৎসার কাগজপত্র, বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্টগুলো সেখানে পাঠানো হয়েছে। এই হাসপাতালের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গত ২৬ অক্টোবর ঢাকায় এসে এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়ার লিভার ও পেটের ফ্লুইড জমা ও রক্তক্ষরণ রোধে চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিশেষ পদ্ধতি টিআইপিস-টিপস সম্পন্ন করেছিলেন। তাদের নেতৃত্বে একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিম বিএনপি চেয়ারপারসনের লিভার ট্রান্সপারেন্ট চিকিৎসাকার্যক্রম পরিচালনা করবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সাক্ষাতের আগে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-এলডিপির চেয়ারম্যান অলি আহমেদ বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে দেখা করেন।