সৈয়দপুরে মাদরাসার নামে জমি দখলের অভিযোগ
আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও মামলা চলমান সত্ত্বেও স্থাপনা নির্মাণ- সৈয়দপুর (নীলফামারী) সংবাদদাতা
- ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:১৬
কাদেরিয়া তাহেরিয়া সাবেরিয়া সুন্নীয়া মাদরাসার নামে নীলফামারীর সৈয়দপুরে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি দখল করে আদালতের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মামলা চলমান জমিতে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্মীয় অনুভূতি ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থে লাভবান হওয়ার লক্ষ্যে ক্ষমতা ও লোকবলের দাপট দেখিয়ে এই অবৈধ কাজ করছেন একটি চক্র। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা সত্ত্বেও কোনো সুরাহা হয়নি, বরং উল্টো তাকে হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। ফলে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের হাঙ্গামার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জমির মালিক ঢাকার মিরপুরের ব্যবসায়ী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ২০১৬ সালের বায়নানামা মূলে ২০২২ সালে মূল মালিক শেখ হাবিবুর রহমানের কাছ থেকে সৈয়দপুর শহরের কয়া গোলাহাট ইসলামবাগ এলাকায় কয়া মৌজাধীন ১০২ শতক জমি ক্রয় করি। এর মধ্যে ১০ শতক জমি আমি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দান করার মনস্থ করি। এমনকি প্রয়োজনে মাদরাসার আশপাশে আমার ক্রয়কৃত সব জমি মাদরাসার নামে দান করার জন্যও প্রস্তুতি নেই। একই সাথে আরো দুজন মালিক মাদরাসায় ১০ শতক করে জমি দান করার কথা জানান। তারা হলেন আব্দুর রউফ ও সাহেদ আলী। তাদের ২০ শতকসহ মোট ৩০ শতক জমিতে কাদেরিয়া তাহেরিয়া সাবেরিয়া সুন্নীয়া মাদরাসা নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়। প্রথম শ্রেণী থেকে ৫ শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদানের জন্য ৬ কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনশেড ঘরও করে দেই আমার নিজ খরচে। কিন্তু কিছু দিন পর মাদরাসার আয়-ব্যয় সংক্রান্ত গরমিলের বিষয়ে প্রতিবাদ করায় তারা আমাকে মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার করে।
এদিকে পাশের থিম পার্ক তৈরির সময় আমার ২৮ শতক জমি তাদের সীমানার মধ্যে পড়ে। এদিকে সীমানার বাইরে আমার ক্রয়কৃত জমির সাথে তাদের সমপরিমাণ জমি থাকায় এবং জমিগুলো একই মালিকের হওয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে একটি চুক্তিনামা অনুযায়ী পরস্পরের মধ্যে জমিটুকু অদলবদল করা হয়। সেই মোতাবেক দীর্ঘদিন থেকে পার্ক ও মাদরাসা নিজ নিজ জমিতে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। কিন্তু সাহেদ আলী সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে খেয়াল খুশিমতো প্রতিষ্ঠানটির নামে অর্থ আদায় করে চলেছে। এমনকি থিমপার্ক ও মাদরাসার মাঝামাঝি শেখ হাবিবুর রহমানের ঘরটি হেফজখানার ছাত্রদের আপাতত থাকার বলে পরে দখল করে নিয়েছে। এর প্রতিবাদ করায় সেই ঘরে মাইক টানিয়ে মসজিদ বানানোর ঘোষণা দিয়ে ধর্ম অবমাননার নাটক সাজিয়েছে। এতে বাধ্য হয়ে জমির মালিক আদালতে মামলা দায়ের করেন। এতে আদালত এ সংক্রান্ত সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত উক্ত ঘরসহ সকল প্রকার স্থাপনা নির্মাণসহ নতুন করে কোনো কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন।
কিন্তু সম্প্রতি সাহেদ আলী গং আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাদরাসার পাশে আবু বাশার মোহাম্মদের জমিতে নতুন করে স্থাপনা নির্মাণ শুরু করেছে। ্এতে বাধা দেয়ায় তার নিযুক্ত জাফর আলী রমজানীকে তারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করাসহ প্রাণনাশের হুমকি ধামকিও দিয়েছেন। ফলে জাফর আলী রমজানী সৈয়দপুর থানায় গত ১ জানুয়ারি অভিযোগ দায়ের করেন। এর প্রেক্ষিতে থানায় উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতার জন্য গত ২ জানুয়ারি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সেখানে সাহেদ আলী গংরা মাদরাসা কমিটির সাথে আমার জমির অদলবদল সংক্রান্ত তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে উপস্থিত করতে না পারায় বৈঠকটি অসম্পন্ন রয়ে যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা