শুধু একটা নির্বাচনের জন্য এত রক্ত দেইনি : শহীদ আলভীর বাবা
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৭
কিছু রাজনৈতিক দল সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে দাবি করেছেন গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্বজন ও আহতরা।
নিহত শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান বলেছেন, শুধু একটি নির্বাচনের জন্য জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতরা এত রক্ত দেয়নি। শুক্রবার সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ‘ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে তিনি এ কথা বলেন। এ সম্মেলনটির আয়োজন করে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজের (এফবিএস)।
সকালে শুরু হওয়া জাতীয় সংলাপের উদ্বোধন করেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে রাজধানীর ফার্মগেটে নিহত নাফিসের বাবা গোলাম রহমান। সংলাপে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলা নিউজ।
সংলাপের শুরুতে কথা বলেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুলিবিদ্ধ ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আবু বকর, শহীদ ইমাম হোসেনের ভাই রবিউল ইসলাম, উত্তরা চব্বিশের সংগঠক মনিশা মাফরুহা, শহীদ শাহরিয়ার হাসান আলভীর বাবা আবুল হাসান।
সংলাপে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্বজন ও আহত ব্যক্তিরা জানান, সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলো দায়ী।
একই সাথে গণহত্যায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের গ্রেফতার করার দাবি জানান তারা।
এর আগে মঞ্চে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নিহত ব্যক্তিদের স্বজন ও আহত ব্যক্তিদের মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়। পরে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
ছেলের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করে আবেগাপ্লুত আবুল হাসান বলেন, ছেলের নামাজে জানাজা এলাকায় দিতে দেয়া হয়নি। দুটো মসজিদে লাশের গোসল করাতে দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, এত রক্ত শুধু একটা নির্বাচনের জন্য দিইনি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে হতাহতের ঘটনায় আদৌ বিচার হবে কি না, প্রশ্ন তোলেন রবিউল ইসলাম।
বিষয়টিকে জাতির জন্য ব্যর্থতা ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের জন্য অপমানজনক বলে দাবি করেন আবু বকর।
তিনি বলেন, একটি হত্যাকাণ্ডে একজন করে পুলিশ জড়িত থাকলে এক হাজার পুলিশ গ্রেফতার হতো। দু’জন করে জড়িত থাকলে দুই হাজার পুলিশ গ্রেফতার হতো। কিন্তু গ্রেফতার হয়েছে ২৩ জন পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ছাত্রলীগের কতজন গ্রেফতার হয়েছে? তাহলে আমরা বিশ্বাস করব কিভাবে বিচার হবে? আপনারা সংস্কারের কথা বলেন, কিন্তু বিচারের কথা জোর দিয়ে বলেন না।
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, যাত্রাবাড়ীতে গণহত্যায় ডিএমপি কমিশনারের (নাম বলেননি) ভাগনে এডিসি জড়িত। তাকে গ্রেফতারের কথা বললেও হয়নি।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, দেশের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে আক্রমণের বিষয়ে একটা জাতীয় ঐক্য দেখা গেছে। এখন বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা কী হবে, সেই ঐক্য দরকার। গত ১৫-১৬ বছরে ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত ছিল। রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও জনগণকে ঐক্যের মাধ্যমে সংস্কারের পথে নিয়ে যাবে।
তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ, আপনি যত ভালো সংবিধান তৈরি করেন না কেন, রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে সেই সংবিধান আবার ভাঙা হবে। প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পাশাপাশি রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তনের জোর দিতে হবে।
বাংলা একাডেমির চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, আমাদের জাতীয় জীবনের দুর্বলতা হচ্ছে রাজনীতি। এ দেশে অনেক ক্ষেত্রে উন্নতি সাধিত হয়েছে, কিন্তু রাজনীতিতে সেভাবে এগোতে পারি নাই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা