২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সরকারকে এস আলমের হুমকি

-

সম্পদ জব্দ ও বিনিয়োগে ক্ষতি করার অভিযোগে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছেন বাংলাদেশে অন্যতম ধনী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সাইফুল আলম (এস আলম)। তিনি সিঙ্গাপুরের নাগরিকও। সে দেশের নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশে তার ক্ষতি পুনরুদ্ধারে ব্যবস্থা নিয়েছেন। অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টাদের কাছে তিনি একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন। এতে তার আইনজীবীরা ছয় মাসের মধ্যে উভয়পক্ষ বিরোধ নিষ্পত্তি না করলে আন্তর্জাতিক আইনিব্যবস্থা শুরু করার হুমকিও দিয়েছেন। ১৮ ডিসেম্বর পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, ২০১১ সালে সিঙ্গাপুরে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমোদন পায় মোহাম্মদ সাইফুল আলমের পরিবার। ২০২১ ও ২০২৩ সালের মধ্যে তারা সেখানে নাগরিকত্ব পান। তারা ২০২০ সালে বাংলাদেশের জাতীয়তা ত্যাগ করেন। ফলে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে ২০০৪ সালে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগবিষয়ক যে চুক্তি হয়েছে, তার অধীনে তার আইনজীবীরা এ বিষয়ে মামলা করছেন। ২৩ ডিসেম্বর এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। এতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর এস আলমের যেসব সম্পদ ঢাকার সরকার জব্দ করেছে এবং এতে তার বিনিয়োগের যে ক্ষতি হয়েছে, তা পুনরুদ্ধার করতে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেছেন বর্তমানে সিঙ্গাপুরে বসবাস করা এই নাগরিক।

বাংলাদেশে শিল্পবিষয়ক প্রতিষ্ঠান এস আলমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম। অভিযোগ আছে, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার শাসনামলে তিনি দেশ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার পাচার করেছেন। তার পর বাংলাদেশে যে অন্তর্র্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তারা সেই সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনতে চাইছেন। কিন্তু এস আলম ও তার পরিবার যে আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন, তাতে অন্তর্র্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্য হুমকিতে পড়তে পারে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে এস আলমের পক্ষে চিঠি পাঠিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনি সহায়তাবিষয়ক প্রতিষ্ঠান কুইন ইমানুয়েল আরকুহার্ট অ্যান্ড সুলিভানের আইনজীবীরা। এই চিঠিটি দেখেছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, এস আলম পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। তাদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তারা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন। অফিসিয়াল কোনো নোটিশ ছাড়াই অর্থপাচারের বিষয়ে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সেখানে তদন্ত করছে। এতে আরো অভিযোগ করা হয়েছে, এস আলমের মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে ঋণ দেয়া সীমাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাদের ব্যবস্থাপনা টিমকে পরিবর্তন করা হয়েছে। একই সময়ে তাদের করা চুক্তিগুলোকে ‘খেয়ালখুশিমতো এবং যথাযথ প্রক্রিয়া ছাড়াই’ সরকার বাতিল করেছে।
কুইন ইমানুয়েলের চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের ভ্যালু একেবারে অথবা আংশিক বিভিন্ন এজেন্সি এবং তার আনুষঙ্গিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কর্মকাণ্ড এবং বর্জনের মাধ্যমে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এসব কর্মকাণ্ড ও বর্জনের ঘটনা চলমান। এর মাধ্যমে বিনিয়োগবিষয়ক চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে। বিনিয়োগবিষয়ক এসব চুক্তি এবং বাংলাদেশের আইনের অধীনে বিনিয়োগকারীদের অধিকারকে অব্যাহতভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এর ফলে এই বিরোধের সৃষ্টি হয়েছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস লিখেছে, চিঠির বিষয়ে মন্তব্য চাইলে বাংলাদেশ সরকার কোনো সাড়া দেয়নি।

 


আরো সংবাদ



premium cement