কবি হেলাল হাফিজের নামাজে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২০
দুই দফায় নামাজে জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে কবি হেলাল হাফিজকে। গতকাল প্রথমে বাংলা একাডেমি ও পরে জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তাকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
বাদ জোহর জাতীয় প্রেস ক্লাবে কবি হেলাল হাফিজের দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা সংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন ও কবি সাহিত্যিকদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
নামাজে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া, আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকীসহ সাহিত্যিক সাংবাদিক ও কবির পরিবারের সদস্য এবং ভক্ত-অনুরাগীসহ বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।
জানাজার নামাজের আগে কবি হেলাল হাফিজের বড় ভাই দুলাল হাফিজ বলেন, আপনারা সবাই আমার ভাইয়ের জন্য দোয়া করবেন। হেলালের কোনো আচরণে কেউ দুঃখ পেয়ে থাকলে তাকে ক্ষমা করে দেবেন।
কবি হাসান হাফিজ বলেন, হেলাল ভাইয়ের মৃত্যু আমার অঙ্গ হানির সমান। আমার কবি হওয়ার পেছনে তার বড় ভূমিকা ছিল। তিনি অসাধারণ একজন মানুষ ছিলেন। তিনি ছিলেন প্রেম ও দ্রোহের কবি।
এর আগে বেলা ১১টায় বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চ প্রাঙ্গণে কবির প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিকেলে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নামাজে জানাজা শেষে কবি হেলাল হাফিজকে মরণোত্তর রাষ্ট্রীয় পদক দেয়ার ইঙ্গিত দেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা। তিনি বলেন, মরণোত্তর পদক দেয়ার ব্যাপার আছে। এখনই কিছু ঘোষণা করতে চাই না। কিন্তু আপনারা নিশ্চয়ই আমাদের কাজের মধ্য দিয়ে সেটা জানবেন।
হেলাল হাফিজের জন্ম ১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোণায়। তার প্রথম কবিতার বই ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। এ পর্যন্ত বইটির মুদ্রণ হয়েছে ৩৩ বারেরও বেশি। লেখালেখির পাশাপাশি হেলাল হাফিজ দৈনিক যুগান্তরসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা করেন। ১৯৮৬ সালে প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জ্বলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশের পর জনপ্রিয়তার শীর্ষে চলে আসেন কবি।
দেশে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় হেলাল হাফিজের ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’র পঙ্ক্তি ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ উচ্চারিত হয় মিছিলে, স্লোগানে, কবিতাপ্রেমীদের মুখে মুখে। ২০১৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। তার আগে খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা পান তিনি।