১০ লাখ গার্মেন্টকর্মী টিসিবির পণ্য পাবেন
১,২৬৮ কোটি টাকার কেনাকাটার প্রস্তাব অনুমোদন- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০২:০৩
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারের বাইরে আরো ১০ লাখ গার্মেন্টশ্রমিক পরিবারকে এই কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। তারাও ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য পাবেন। এই বিষয়ে টিসিবিকে উদ্যোগ নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
গতকাল বুধবার অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিজিএমইএ আওতাভুক্ত টিসিবির পণ্য বিক্রির নীতিগত অনুমোদন’ বিষয়ের প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। বৈঠকে বলা হয়, এই ধরনের কোনো প্রস্তাব নতুন করে উত্থাপনের কোনো প্রয়োজন নেই।
অনুমোদনের ফলে টিসিবির আগামী পণ্য বিক্রির কার্যক্রমে গার্মেন্টশ্রমিকরাও যুক্ত হবেন বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। গার্মেন্টশ্রমিক পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে অর্থ উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করা হয়- ১০ লাখ গার্মেন্টশ্রমিক পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রির একটি প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটিতে ওঠার কথা ছিল। এর উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, টিসিবি ওটা করবে। টিসিবির রেগুলার যে প্রোগ্রাম আছে এক কোটি পরিবারের জন্য, ওরা মনে হয় ওখান থেকে সংস্থান করতে পারবে।
এই ১০ লাখ গার্মেন্টশ্রমিক কি এক কোটির বাইরে থাকবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এক কোটির ভেতরে আছে। কারণ এক কোটি সব তো আমরা ইস্যু করতে পারিনি। আমরা বলেছি আপাতত আপনারা এটা করেন। পরে শুধু গার্মেন্ট নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রে আমরা দেখব। আপাতত আমরা গার্মেন্টে দেয়ার অনুমোদন দিয়েছি, ওদের দেবে।
কবে নাগাদ গার্মেন্টশ্রমিকদের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, টিসিবি যখনই বিক্রি কার্যক্রম শুরু করবে, এটা করব। টিসিবির পরবর্তী বিক্রি কার্যক্রমের মধ্যে গার্মেন্টশ্রমিকরা সংযুক্ত থাকবেন। এটা ঢাকার আশপাশের বিশেষ এলাকার জন্য।
এ দিকে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, নিম্ন আয়ের মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য ক্রয়ের সুযোগ দিতে টিসিবির ফ্যামিলি কার্ডধারী এক কোটি পরিবারের কাছে ভর্তুকি মূল্যে ভোজ্যতেল, মসুর ডাল ও চিনি বিক্রি করছে সরকার। সেই সাথে খাদ্য অধিদফতরের মাধ্যমে পাঁচ কেজি চাল বিক্রির কার্যক্রম চলমান।
সূত্রটি জানিয়েছে, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবের ডিও’র ভিত্তিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টঙ্গী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, আশুলিয়া, সাভারসহ ঢাকার সন্নিকটের শিল্পগুলোর গার্মেন্টশ্রমিকদের মধ্যে টিসিবির নির্ধারিত পণ্য ভর্তুকি মূল্যে বিক্রয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
সূত্রটি আরো জানিয়েছে, ১০ লাখ গার্মেন্টশ্রমিকের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে চিনি, ভোজ্যতেল ও মসুর ডাল বিক্রি বাবদ মাসিক সম্ভাব্য ব্যয় হবে ৩১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। প্রতি মাসে খাদ্য অধিদফতরের মাধ্যমে প্রায় পাঁচ হাজার মেট্রিক টন চালের প্রয়োজন হবে।
এক হাজার ২৬৮ কোটি টাকার কেনাকাটার অনুমোদন : এ দিকে দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ভোজ্যতেল, চিনি ও মসুর ডাল ক্রয় এবং গম আমদানিসহ ১১টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে প্রায় এক হাজার ৩৬৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। এর বাইরে আরো দু’টি ক্রয় প্রস্তাবের দরপত্র বাতিল এবং প্রস্তাব পুনঃপ্রক্রিয়াকরণের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে ক্রয় কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সারা দেশে নিম্ন আয়ের এক কোটি পরিবারের মধ্যে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির লক্ষ্যে পাঁচটি ক্রয় প্রস্তাবের বিপরীতে ৫৫ লাখ লিটার সয়াবিন তেল, ২০ হাজার টন চিনি ও ২০ হাজার টন মসুর ডাল কিনবে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। স্থানীয় পর্যায়ে উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এসব পণ্য কেনা হচ্ছে।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম আমদানি করবে সরকার। সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স অ্যাগ্রোকর্প ইন্টারন্যাশনাল এ গম সরবরাহ করবে। প্যাকেজ-৩-এর আওতায় এ গম কেনা হচ্ছে। প্রতি মেট্রিক টন গমের দাম ধরা হয়েছে ২৮৬ দশমিক ০৮ ডলার। এতে বাংলাদেশী মুদ্রায় মোট ব্যয় হবে ১৭১ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) ও সৌদি আরবের সাবিক অ্যাগ্রো-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার কিনবে শিল্প মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে কাফকো থেকে অষ্টম লটে কেনা হবে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার। প্রতি মেট্রিক টন ৩৩৫ দশমিক ৬২৫ ডলার দরে এতে মোট ব্যয় হবে ১২০ কোটি ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। সূত্র জানায়, এ ছাড়া আরেকটি প্রস্তাবে সৌদি আরবের সাবিক অ্যাগ্রো-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে কেনা হবে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার । প্রতি মেট্রিক টন ৩৪৬ দশমিক ৭৫ ডলার দরে এতে মোট ব্যয় হবে ১২৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা