২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

প্রাইমারি পর্যায়ে ইসলাম শিক্ষার নতুন বই

-

কিন্ডারগার্টেন ও প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের উপযোগী ইসলাম শিক্ষার নতুন বই লিখেছেন বিশিষ্ট গবেষক ও আহকামে যিন্দেগী, আহকামুন নিছা, ইসলামী মনোবিজ্ঞান প্রভৃতি গ্রন্থের লেখক মাওলানা মুহাম্মদ হেমায়েত উদ্দীন।
বই সম্পর্কে লেখক জানান, আজকের শিশু-কিশোর আগামী দিনের দেশ ও জাতির পরিচালক। কিন্ডারগার্টেন ও প্রাইমারি স্কুলগুলো এ শিশু-কিশোরদের মৌলিক শিক্ষা দিয়ে গড়ে তুলছে। এটা জাতির এক মহান সেবা। প্লে গ্রুপ থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়ার পর তথা শুরু থেকে প্রাইমারি শিক্ষা সম্পন্ন করার পর অনেক কিশোর কিশোরীর আর বেশি লেখাপড়ার সুযোগ হয় না। তাই এ পর্যন্ত শিক্ষার মধ্যে যথাসম্ভব এমন বিষয় অন্তর্ভুক্ত রাখা প্রয়োজন, যা শিক্ষার্থীদের পরবর্তী জীবনের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের সহায়ক হয়। আমাদের দেশের কিন্ডারগার্টেন ও প্রাইমারি স্কুলগুলোতে এ পর্যায়ের বৈষয়িক অনেক কিছুই শিশু-কিশোরদের শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। তবে আরেকটি মৌলিক বিষয় সিলেবাসে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন বললে যথেষ্ট হবে না, বরং অপরিহার্য বলা প্রয়োজন। তা হলো- ‘ইসলাম ও আরবী শিক্ষা’। এটার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্লাসের সময়ে মাত্র ২০-৩০ মিনিটের একটা পিরিয়ড বের করে নিলেই যথেষ্ট হবে। প্লে গ্রুপ, নার্সারি এবং ১ম ও ২য় শ্রেণীর ক্ষেত্রে ২০ মিনিট হলেও চলবে। তার ওপরের শ্রেণীগুলোর ক্ষেত্রে ৩০ মিনিট হলে ভালো। এ সময়ে থাকবে ‘ইসলাম ও আরবী শিক্ষা’-এর একটি পিরিয়ড। এ সময়ের মধ্যেই সংক্ষেপে মৌলিক ৬টি বিষয় শিক্ষা দেয়া সম্ভব হবে, যেগুলো শিশু-কিশোরদের ভবিষ্যৎ জীবনের ৬টি মৌলিক চাহিদা পূরণ করবে। সেগুলো হলো-
(১) মুসলমান হিসেবে একজন মানুষের মৌলিক আকীদা-বিশ্বাস শিক্ষা দেয়া। এই মৌলিক শিক্ষা থাকলে শিক্ষার্থীরা প্রাইমারির পর আর লেখাপড়া না করলেও সারাজীবন তারা মুসলমান হিসেবে চলতে সক্ষম হবে। শিশু-কিশোর মনে ইসলামের মৌলিক আকীদা-বিশ্বাস বদ্ধমূল হয়ে থাকলে, আশা করা যায় ভবিষ্যতে তারা নাস্তিক বা একেবারে বেদ্বীন হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে।

(২) মৌলিক ইবাদত-বন্দেগী ও সেগুলোর জরুরি মাসায়েল শিক্ষা দেয়া। তাহলে তাদের ভবিষ্যৎ জীবনের ইবাদত-বন্দেগী শুদ্ধ হবে।
(৩) মৌলিক ইসলামী আদর্শ ও কৃষ্টি-কালচার শিক্ষা দেয়া। তাহলে তারা অমুসলিম কৃষ্টি-কালচারের অনুবর্তী হওয়া থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করতে পারবে।
(৪) পুরো কুরআন মাজীদ শুদ্ধভাবে পড়তে শেখানো। তাহলে তাদের সারা জীবনের কুরআনের তেলাওয়াত সঠিক হবে এবং নামাযের কেরাত শুদ্ধভাবে হওয়ার মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ ইবাদত নামাযও শুদ্ধ হবে।
(৫) বিশেষ উপদেশমূলক কমপক্ষে চল্লিশটি আয়াত ও চল্লিশটি হাদীছ অর্থসহ মুখস্থ করিয়ে দেয়া, যা সারা জীবন তাদের মস্তিষ্কে সুপ্রভাব ফেলতে থাকবে।
(৬) প্রাথমিক পর্যায়ের আরবি কথোপকথন শিক্ষা দেয়া। দেশের প্রচুর সংখ্যক মানুষ যারা আরব দেশসমূহে কাজের জন্য যায়, তারা আরবি কথোপকথন জানা থাকার কারণে
সেখানে ভালো অবস্থান করে নিতে পারবে। সেইসঙ্গে আরবী জানা থাকার কারণে ভবিষ্যতে তারা ইসলামিয়াত বিষয়ে ভালো নম্বর করাসহ উচ্চতর ধর্মীয় শিক্ষার অনুপ্রেরণাও লাভ করবে এ ভেবে যে, আমি তো আরবী কিছুটা জানিই, আরো একটু জানলেই তো আমি অগ্রসর হতে পারি। এভাবে আরবী ভাষায় কথোপকথন জানা তাদের বৈষয়িক ও ধর্মীয় উভয় দিকের কল্যাণ বয়ে আনবে।
উপরে উল্লিখিত বিষয়গুলো সামনে রেখে মাওলানা হেমায়েত উদ্দীন এ বই তৈরি করেছেন। তাই আমাদের কিন্ডারগার্টেন ও প্রাইমারি পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য বইটি উপকারী হবে বলে আশা করা যায়।

 


আরো সংবাদ



premium cement