অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ ৪ বছরের কথা বলেননি প্রধান উপদেষ্টা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৫
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ চার বছর হবে- এমন কথা বলেননি বলে জানিয়েছেন তার প্রেসসচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, পুরো ইন্টারভিউ ভালো মতো শোনে আমরা ফেস করছি, দেখছি যে, ভালো মতো না শুনে হেডলাইন দিয়ে দিচ্ছে। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ভালো করে দেখেন না এখানে চার বছরের কথা বলা হয়নি। চার বছরের প্রসঙ্গ এসেছে যে কারো কারো ডিমান্ড ছিল পার্লামেন্টটা চার বছর হোক। একটা গভর্নমেন্টের ক্ষেত্রে এটা (চার বছরের প্রশ্ন) আসছে। এটা ইন্টারিম গভর্নমেন্টের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার) জন্য না।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে নির্বাচনের রূপরেখা নেই, আশাহত হয়েছে- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্য প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে উপ-প্রেসসচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা মনে করি যে, আরো আগে থেকেই নির্বাচনী রোডম্যাপ দেয়া আছে। নির্বাচন কমিশন সিলেক্ট করা, কমিশনার সিলেক্ট করা এটাও তো রোডম্যাপের একটা অংশ। উনি (মির্জা ফখরুল) উনার মতামত দিয়েছেন।
মোহাম্মদপুর থানায় পতিত স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সাথে ৭৬ জন বিসিএস কৃষি ক্যাডার কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে উপ-প্রেসসচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, আমরা বারবার বলেছি যে, এভাবে ঢালাওভাবে মামলা না দেয়ার। মামলা দেয়াটা একজনের অধিকার, মামলা দিতেই পারে। কিন্তু, যার বিরুদ্ধে কোনো এভিডেন্স (প্রমাণ) নেই, সেক্ষেত্রে আমরা বারবার বলছি তাদেরকে যাতে মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়। আমাদের স্ট্যান্ডটা এখনো এটাই। কিন্তু, মামলা যে দিচ্ছেন, এটা তার সম্পূর্ণ নিজস্ব অধিকার।
এক প্রশ্নের জবাবে প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেন, ইন্ডিভিজুয়াল ভিক্টিম যদি মামলা দেয়, তাকে তো বলা যায় না যে, মামলাটা দিয়েন না। আমরা যেটা করতে পারি, সেটা হলো পুলিশকে বলে দেয়া হয়েছে যে, এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অর্ডার দেয়া হয়েছে খুব দ্রুত এটা তদন্ত করে এই নামগুলো যাতে বাদ দেয়া যায়। এখানে হ্যারেজমেন্ট-এর কথা উঠেছে, হ্যারেজ করার জন্য যাদের নাম এসেছে দ্রুত যাতে, যাদের বিরুদ্ধে কোনো এভিডেন্স (প্রমাণ) নেই তাড়াতাড়ি যেন নামগুলো বাদ দেয়া হয়। তিনি বলেন, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা একটা বক্তব্য দিয়েছেন যে, যারা এগুলো করছে, এই ধরনের মামলা করছে হ্যারেজমেন্ট করার জন্য, তাদের বিষয়েও উনি কিন্তু বলেছেন।
কয়েক দিন আগে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দটা বাদ দেয়া হবে- এটা সরকারের স্ট্যান্ড কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেসসচিব বলেন, সরকার এ বিষয়ে একটি (সংবিধান সংস্কার) কমিশন করে দিয়েছে। তারা ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট দিবেন। সেই রিপোর্টটি দিয়ে সরকার বাংলাদেশের সব পলিটিক্যাল পার্টির সাথে কথা বলবে। পলিটিক্যাল পার্টিগুলোকে আমরা মনে করি অংশীজন। পলিটিক্যাল পার্টিগুলোর সাথে বসে ডিসাইড (সিদ্ধান্ত) হবে যে, বাংলাদেশের ১৯৭২ সালের যে সংবিধান, সেটা অ্যামেন্ডমেন্ট হবে নাকি কী হবে, সেটা ওরা (রাজনৈতিক দলগুলো) সিদ্ধান্ত নেবে। সরকারের এ বিষয়ে সুস্পষ্ট অবস্থান, গত মাস থেকে এটা আমরা জানাচ্ছি যে, সংবিধান সংস্কার কমিশন যখন হয়েছে তাদের কাজটাই এটা। তারা স্টেকহোল্ডারদের সাথে বসবেন।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনে সাংবাদিকদের মধ্যে যারা আছেন তারা বস লেবেলের, মাঠের কর্মী নেই। কমিশনে অনেক মুজিববাদী লোকও আছে যেমন অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন, টিটু দত্ত গুপ্ত এবং জিমি আমির যিনি এনজিওকর্মী। তারা এই কমিশনে কিভাবে এলো, মুজিববাদকে পুনর্বাসন করা হলো কিনা- জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেসসচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, কমিশনের প্রধানকে ফুল ফ্রিডম দেয়া হয়েছে মেম্বর কারা হবেন। কমিশনের কাছে এ প্রশ্ন করার কথা জানান তিনি। এ বিষয়ে প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেন, যাদেরকে নেয়া হয়েছে তারা একটা ব্রড বেইজড প্যানেলকেই নেয়া হয়েছে বলে আমাদের বিশ^াস। জিমি আমির অনেক দিন সাংবাদিকতা করেছেন। ইদানীং ডিডব্লিউ-এর সাথে উনি সম্পর্কিত। উনার জার্নালিজম অনেক দিনের। এর বাইরে কমিশনে মোস্তাফা সবুজ মাঠের সাংবাদিক। অন্যদেরও সলিড ব্যাকগ্রাউন্ড আছে এটুকু বলতে পারি। সবাই মিলে আমরা কাঠামোগত চেইঞ্জ যেটা চাচ্ছি, মিডিয়ার সংস্কার চাচ্ছি-সেটার ভালো একটা রিপোর্ট তারা তৈরি করতে পারবেন বলে মনে করেন প্রেসসচিব।
জেনেভায় ড. আসিফ নজরুলের হেনস্তাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা প্রসঙ্গে অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার। এ বিষয়ে তদন্ত হচ্ছে। যারা যারা এর সাথে জড়িত ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নতুন দু’জন উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে আপত্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মানুষ ওপেনিয়ন দিচ্ছে, আমরা দেখছি।
কলেজ শিক্ষার্থীরা রাজধানীতে গতকাল রাস্তা অবরোধ এবং ট্রেনে হামলা প্রসঙ্গে প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেন, আমরা তো ওদের (আন্দোলনকারী) সাথে কথা বলছি। অনেক প্রবলেম আছে যেগুলো একদিনে শেষ হয় না। আপনারা জানেন শ্রমিক আন্দোলন হচ্ছিল, সবার সাথে কথা বলে ১৮ দফা একটা চুক্তিও হয়েছে। এখন দুয়েকটি ফ্যাক্টরি ছাড়া তেমন কোনো ইয়ে... নেই। গত মাসে প্রায় ২১ শতাংশের মতো গ্রথ।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিনের অর্জন নিয়ে টিআইবির অবজারভেশন প্রসঙ্গে শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা চেষ্টা করছি নিত্যপণ্যের দাম কতটা কমানো যায়। ডিমের দাম কমেছে। আমরা আরো যেগুলো মনিটরিং করছি সেগুলোর দামও নিম্নমুখী। গত বছর কিন্তু ১২ শ’ টাকা পর্যন্ত মরিচের (কাঁচা) দাম উঠেছিল। আমাদের চেষ্টার কিন্তু অন্ত নাই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা