সিলেটে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার দাবি
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৪
দীর্ঘ ৭ বছর ধরে বৃহত্তর সিলেটের সব পাথর কোয়ারি ও বিভিন্ন বালু মহাল থেকে বন্ধ থাকা পাথর ও বালু উত্তোলন যৌক্তিক সমাধানের মাধ্যমে পুনরায় চালুর দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘পাথর শ্রমিক বাঁচাও আন্দোলন’ আয়োজিত সেমিনারে তারা এ মত দেন আলোচকরা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে শ্রমজীবী মানুষের জীবন রক্ষায় আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে পাথর উত্তোলন কার্যক্রম চালুর দাবি জানিয়ে বলেন, চলমান সমস্যার সমাধানে একটি স্থায়ী কাঠামো প্রয়োজন। যাতে করে পরিবেশও রক্ষা হয় এবং কার্যক্রমও স্বাভাবিক থাকে। তাই এখন উচিত একটি যৌক্তিক সমাধান। এতে করে জীবন জীবিকা রক্ষা পাবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধে সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় এ অঞ্চলের প্রধানতম বারকী পেশায় সম্পৃক্ত ২০ লাখের বেশি মানুষ ও ২০ হাজার ব্যবসায়ী আয়-রোজগার হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ইতোমধ্যে শত শত ব্যবসায়ী ব্যাংক ঋণে জর্জরিত হয়ে দেউলিয়া হয়ে গেছেন। বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ঋনের বোঝা সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন এবং অনেকে প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় ছটফট করছেন। অনেক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী দেশ ছেড়ে বিদেশে পালিয়েছেন। শ্রমিকরা কর্মসংস্থান হারিয়ে দিশেহারা হয়ে বিভিন্ন এনজিও থেকে ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে পরিবার চালাচ্ছে। কিন্তু এলাকায় কাজকর্ম না থাকায় ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে হাজার হাজার শ্রমিক পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
গত কয়েক বছরে সিলেট অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় মানুষের জান মাল, ভিটে বাড়ি, রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ করে আমাদের শ্রমজীবীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারছে না। এ ছাড়া কোভিড-১৯ এবং সাম্প্রতিক প্রলয়ঙ্করী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বৃহত্তর সিলেটের মানুষের জীবন ও জীবিকা মারাত্মক সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়েছে। আয় রোজগার না থাকায় প্রান্তিক এ শ্রমজীবী মানুষগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সিলেটের পাথর ও বালু মহাল অধ্যুষিত এলাকা গুলোতে বর্তমানে নীরব দুর্ভিক্ষ বিরাজ করছে।
দেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকটের এ ক্রান্তিলগ্নে আয়-রোজগার বঞ্চিত সিলেটের কয়েক লাখ মানুষ। পাথর ও বালু উত্তোলনে জড়িত লাখ লাখ শ্রমিক, হাজার হাজার ট্রাক মালিক-শ্রমিক, স্টোন ক্রাশার মিল মালিক, ব্যবসায়ী, বেলচা শ্রমিক, হেমার শ্রমিক ও লোড আনলোড শ্রমিক পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন যাপন করছেন।
তিনি জানান, গত ১৪ অক্টোবর গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন টাস্কফোর্সের অভিযানের নামে জাফলং নদীর ঘাটে বেঁধে রাখা নিরীহ শ্রমিকদের ৭০০ বারকি নৌকা জব্দ করে। অন্যদিকে ২০ অক্টোবর গভীর রাতে ধলাই নদীর ঘাটে বেঁধে রাখা ১৩৬টি নৌকা উপজেলা প্রশাসন জব্দ করে। ২৫ অক্টোবর গভীর রাতে জাফলং বল্লাঘাট থেকে আরো ৩০টি বারকি নৌকা জব্দ করে। গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন বারকি শ্রমিকদের একমাত্র সম্বল বারকি নৌকা আটক করেই ক্ষান্ত হয়নি শতাধিক নিরীহ শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। প্রতিনিয়ত এ নির্যাতন অব্যাহত রয়েছে। এমতাবস্থায় যত দ্রুত পাথর উত্তোলন শুরুর দাবি জানোনো হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা