সম্প্রীতি নষ্ট করার ঘটনাগুলোর ৯৯ শতাংশই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে : চবি ভিসি
- চট্টগ্রাম ব্যুরো
- ০২ নভেম্বর ২০২৪, ০২:২৮
দেশে সম্প্রীতি নষ্ট করার ছোট ছোট যে ঘটনগুলো হয়ে থাকে, তার ৯৯ শতাংশ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়। সনাতন ধর্মপরিষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘শ্যামাপূজা ও দীপাবলী উৎসব’-২০২৪ এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় চবি ভিসি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার এ কথা বলেন।
গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মন্দির প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে চবি ভিসি সনাতন ধর্মাবলম্বীসহ উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
তিনি বলেন, জগতের সব অন্ধকারকে পরাজিত করে সত্য, সুন্দর, ন্যায় ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় আলোর প্রজ্ব¡লন ঘটানোর অভিপ্রায় নিয়ে আমাদের তরুণ-মেধাবী শিক্ষার্থীরা জ্ঞান-শক্তিতে বলীয়ান হয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে দেশ-জাতির কল্যাণে নিজেদের আত্মনিয়োগ করবে- এটাই প্রত্যাশিত। ধর্মীয় সম্প্রীতি ও পারস্পরিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের নিজ নিজ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন ও চর্চার মাধ্যমে সুন্দর মনের পরিশীলিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে তিনি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, পৃথিবীতে অনেক ধর্ম রয়েছে। কিন্তু সব ধর্মের উদ্দেশ্য হচ্ছে মানবকল্যাণ, যা মানুষের নৈতিক মনোবলকে জাগ্রত করে। তিনি আরো বলেন, একজন গর্ভবতী মায়ের চিন্তাধারা তার সন্তানের ওপর পড়ে। সে জন্য গর্ভবতী মায়েরা বেশি বেশি সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য লাভে আগ্রহী থাকেন। এটা একটা সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের অন্যতম হাতিয়ার। আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, সারা বাংলাদেশে আদিকাল থেকে বিরাজমান। বিভিন্ন স্বার্থে স্বার্থন্বেষী মহল সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। পরস্পর মিলে মিশে থাকার মধ্যে শান্তি নিহিত রয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হয়নি। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, একজন প্রকৃত মানুষ কোনো দুর্নীতি করতে পারে না। কারণ অন্যায়, দুর্নীতি, ব্যভিচার ইত্যাদি নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের জন্য রয়েছে চরম শাস্তি।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (অ্যাকাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম বলেন, আমরা আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি। আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধের পর মনে করছি যে, বাংলাদেশে আগে যে জঞ্জাল ছিল, সে জঞ্জালকে পরিষ্কার করে ভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারব। তিনি আরো বলেন, আমরা জাতিগত ভেদাভেদ চাই না, আমরা চাই বাংলাদেশী মানুষ, আমরা চাই সুন্দর একটি উন্নয়নমূলক বাংলাদেশ, আমরা চাই বাংলাদেশের উন্নতি। এ উন্নতির ক্ষেত্রে আমরা যাতে সবাই একাকার হয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে পারি, সে জন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। একই সাথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার ক্ষেত্রে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সনাতন ধর্ম পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. তাপসী ঘোষ রায়। সনাতন ধর্ম পরিষদ, চবির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. সজীব কুমার ঘোষের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- সনাতন ধর্ম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক (ছাত্র) প্রবীণ সেন।