১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

ঈশিতা রানির ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প

-


নিভৃত গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দা ঈশিতা রানি। পেশায় গৃহিণী। স্বামী পরিমল চন্দ্র দিনমজুর। দুই সন্তানসহ চার সদস্যের টানাপোড়েনের সংসার। একমাত্র স্বামীর আয় দিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে চোখে ঘোর অন্ধকার নেমে আসে ঈশিতার। সংসারের অভাব এবং হতাশার হাতছানিকে উপেক্ষা করে স্বপ্ন দেখেন নিজে কিছু করার। তাই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে ২০০১ সালে হাঁস পালন করে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠার স্বপ্ন দেখেন ঈশিতা।
ঈশিতার বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া ইউনিয়নের মুসুল্লি পাড়া গ্রামে। প্রথমে ধারদেনা করে ৫০টি হাসের বাচ্চা দিয়ে শুরু করেন ছোট একটি খামার। বিলের কিনারায় নেট জাল দিয়ে বেড়া দিয়ে সেখানে হাস রাখেন। পাশেই বাঁশের চাটাই এবং পলিথিনে ঘেরা টং ঘরে রাতে থেকে হাস পাহারা দেয় ঈশিতা এবং তার স্বামী। তাকে দেখে এলাকার অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন হাঁস পালনে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ধলাপাড়া ইউনিয়নের মুসুল্লি পাড়া গ্রামটি নিচু এলাকা হওয়ায় প্রায় সারা বছর পানি থাকে। এখানে বাস করে ৯০ ভাগ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। গত শুক্রবার হাঁসের খামারে গিয়ে ঈশিতার সাথে কথা হলে তিনি জানান, ‘ধারদেনা সব পরিশোধ করেছি। লাভের জমানো ১৫ হাজার টাকা দিয়ে এ বছর খামারে ৩০ টাকা দরে ৫০০ দেশী হাসের বাচ্চা তুলেছি। বর্তমানে খামারে প্রায় ৪০০ হাস ডিম দিচ্ছে। কিছু হাঁস মারা গিয়েছে। বাকিগুলো পুরুষ হাঁস। হাসের ডিমের বাজার ভালো থাকায় প্রতিদিন ডিম বিক্রি করে আয় হচ্ছে প্রায় চার হাজার টাকা। মাসে আয় এক লাখ বিশ হাজার টাকা। সারাদিন হাসগুলো উন্মুক্ত জলাশয়ে খাবার খেয়ে নির্দিষ্ট সময়ে খামারে ফিরে আসে। মাঝে মাঝে হাঁসের ছোটখাটো রোগবালাই হলে ওষুধ দিতে হয়। তাছাড়া অন্য কোনো খরচ নেই। আবার ডিম পাড়া শেষ বা বয়স হলে প্রতিটি হাস ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে বিক্রি করা যায়। হাঁস বিক্রি করেও দুই লাখ টাকার মতো আয় হবে বলে জানান ঈশিতা।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার সংসারে আর অভাব নেই।’
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: বাহাউদ্দিন সারোয়ার রিজবী বলেন, ঈশিতা রানি উপজেলার একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। আমরা আশা করছি তার সফলতা দেখে এ উপজেলার অন্যান্য নারী-পুরুষ অনুপ্রোনিত হয়ে খামারি হয়ে আত্মকর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবেন বলে আমার বিশ্বাস।


আরো সংবাদ



premium cement