১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

৫ মিলিয়ন ডলারের লোভ দেখিয়ে ১৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ প্রতারক গ্রেফতার

-


যুক্তরাষ্ট্রে মারা যাওয়া কথিত ব্যক্তির বিমার পাঁচ মিলিয়ন ডলার পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে ১৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের একজনকে গ্রেফতার করেছে নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। তার নাম আজিজ মোল্লা। গতকাল রোববার সকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রাজধানীর খিলগাঁও থানা পুলিশের সহায়তায় বনশ্রীর মডেল এজেন্সি নামের একটি অফিস থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার হেফাজত থেকে ৯টি ব্যাংকের ৯টি চেক বই, তিনটি এটিএম কার্ড, দু’টি ভিসা কার্ড ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দু’টি মোবাইল জব্দ করা হয়।
ডিএমপির ডিসি (মিডিয়া) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গত ২৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে ‘অহহধ ঐধৎৎরংড়হ’ নামের ফেসবুক আইডির সঙ্গে ভুক্তভোগী নুরুজ্জামানের যোগাযোগ হয়। ওই ব্যক্তি নুরুজ্জামানকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দিয়ে কথা বলতে বলেন। হোয়াটসঅ্যাপে তিনি নুরুকে জানান, বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মোহাম্মদ বেলটন নামে এক ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে মারা যান এবং যুক্তরাষ্ট্রের এলাইনস ব্যাংকে বেলটনের পাঁচ মিলিয়ন ডলার জমা রয়েছে। তিনি বাদিকে মৃত ব্যক্তির আত্মীয় পরিচয় দেওয়ার জন্য বলে এবং এলাইনস ব্যাংক ম্যানেজারের আরেকটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর দেন। এরপর নিজেই একটি মেসেজ লিখে ওই ব্যাংক ম্যানেজারকে সেন্ট করতে বলেন।

এরপর কথিত আইন উপদেষ্টা বিমার টাকা পাওয়ার জন্য ভুক্তভোগীকে ৭৬ হাজার মার্কিন ডলার পাঠাতে বলেন। ৭৬ হাজার মার্কিন ডলার পরিশোধের একটি পেমেন্ট স্লিপ দিলে কথিত ব্যাংক ম্যানেজার বিমার ৫ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশে পাঠানোর জন্য একটি শিপিং কোম্পানির কাছে দু’টি লাগেজ পাঠানোর ভিডিও পাঠায়। ব্যাংক ম্যানেজার বিমা খরচ এবং ডেলিভারি খরচ বাবদ এক লাখ ৮৫ হাজার টাকা প্রদান করার কথা বললে নুরু তার কথামতো ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের উত্তরা শাখার একটি অ্যাকাউন্টে তা প্রদান করে। এরপর গত ৩ অক্টোবর সকাল আটটায় একটি নম্বর থেকে অজ্ঞাতনামা একজন ফোন করে নিজেকে ঢাকা বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে দু’টি লাগেজ কাস্টমসে আটকে আছে বলে জানায়। লাগেজ দু’টি ছাড়াতে চার লাখ সাত হাজার টাকা দেয়ার কথা বললে বাদি তাদের কথা মতো ইসলামী ব্যাংকের একটি অ্যাকাউন্টে তা দেন। এরপর আয়কর ও ট্যাক্স বাবদ আরো ১১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ইসলামী ব্যাংকের আরেকটি অ্যাকাউন্টে দেন। এসব টাকা প্রদান করার পরও তারা বাদির কাছে আরো ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা চাওয়া হয়। এভাবে বারবার টাকা চাওয়ায় বাদির সন্দেহ হলে তিনি বিমানবন্দর কাস্টমসের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারেন এটি একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের কাজ। এভাবে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রটি বাদির কাছ থেকে সব মিলিয়ে ১৭ লাখ ৬৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় ১২ অক্টোবর নিউমার্কেট থানায় একটি প্রতারণার মামলা করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আজিজ মোল্লা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন তালেবুর রহমান। একই সাথে এর সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

 


আরো সংবাদ



premium cement