দুর্নীতির দায়ে কেরানীগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ
- কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি
- ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০৫
কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকার কামুচান শাহ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কানিজ ফাতেমা পদত্যাগ করেছেন। তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যাপক দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হন। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গঠিত তিন সদস্যের অডিট কমিটির তদন্তে প্রায় ২২ লাখ টাকার দুর্নীতি প্রমাণিত হলে তিনি তা অস্বীকার করে চ্যালেঞ্জ করেন। কিন্তু এ সময় তিনি নিজের পক্ষে উপযুক্ত প্রমাণাদি দেখাতে না পারায় পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। গত সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) আড়াইটার দিকে তিনি পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। এ সময় উপস্থিত শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা তাকে বিদায় শুভেচ্ছা জানান। এর আগে তার পদত্যাগ দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকরা প্রায় এক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন।
অডিট কমিটির তদন্ত সূত্রে জানা যায়, কানিজ ফাতেমা সহকারী শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়টিতে ১৯৯১ সালে যোগ দেন। এরপর কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলেও তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন তৎকালীন ম্যানেজিং কমিটি। এ ক্ষেত্রেও অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ওঠে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব নেয়ার আগে তিন বছর সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদে দায়িত্ব পালন করতে হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি।
এরপর ২০০৪ সালে তাকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে তিনি দীর্ঘসময় দায়িত্ব পালনকালে নানান অনিয়মে জড়িয়েছেন। আত্মসাৎ করেছেন মোটা অঙ্কের টাকা। শিক্ষকদের হয়রানি, অতিরিক্ত ফিস আদায়, অনুদান আত্মসাৎ, ছাত্র বেতন আত্মসাৎ, নিয়মিত অডিট না করানো ইত্যাদি অনিয়মের মাধ্যমে বিদ্যালয়ে রামরাজত্ব কায়েম করেন।
এ ছাড়াও উপবৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সরকারিভাবে দেয়া টিউশন ফির টাকাও আত্মসাৎ করেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকদের এমপিওর কথা বলে লাখ লাখ টাকা অনৈতিকভাবে নিয়েছেন। নীতিমালাবিরোধী শিক্ষাজীবনে দুইটি তৃতীয় বিভাগের সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি করা এই শিক্ষক বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাব সভাপতির পরিবর্তে দাতা সদস্যকে সহসভাপতি বানিয়ে তার নামে করেছেন। গত ১৫ বছর টিউশন ফির টাকা শিক্ষকদের দেয়া হয়নি। আরো জানা যায়, ৯ম, ৮ম ও ৬ষ্ঠ শ্রেণীর রেজি: ফি যথাক্রমে, ১৭১ টাকা, ৭৪ টাকা ও ৫৮ টাকার স্থলে আদায় করা হয় যথাক্রমে ৫০০ টাকা, ৩০০ টাকা ও ২০০ টাকা। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফিস আদায় করা ছিল তার অভ্যাস।
প্রতি বছর সিটি পরীক্ষার সময় দুই লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি। এ রকম আরো অনেক অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অডিট কমিটির মুখপাত্র ফানিজ সালমা রিমি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিন সদস্যবিশিষ্ট অডিট কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পাই। ২ বছর ৭ মাসের হিসাব করা হলে ২৩ লাখ ৭৩ হাজার ৪৭৭ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ মেলে। এর সাথে একমত পোষণ করে অডিট কমিটির আরেক সদস্য সহকারী শিক্ষক মো: তরিকুল ইসলাম বলেন, তিনি রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। কাউকে পরোয়া করতেন না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা