১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩ আশ্বিন ১৪৩১, ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

ঠিকাদারের অস্থায়ী কর্মীদের প্রশিক্ষণ অপরিণামদর্শী ও দুরভিসন্ধিমূলক : পবিস

- ছবি : সংগৃহীত

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ঠিকাদারের অস্থায়ী লোকবলকে সিস্টেম পরিচালনা ও উপকেন্দ্র নির্মাণ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের আয়োজনকে অপরিণামদর্শী ও দুরভিসন্ধিমূলক সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

বৈষম্যবিরোধী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারীদের অভিযোগ, শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক পল্লী বিদ্যুৎ সিস্টেমের সংস্কারসহ অন্যান্য সমস্যার যৌক্তিক সমাধানের জন্য নয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হলেও এতে সহযোগিতা না করে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড টালবাহানা করছে।

শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব অভিযোগ করা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১২ সেপ্টেম্বর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড একটি অফিস আদেশ জারি করেন।

এতে বলা হয়েছে, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ঠিকাদার/উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠানের লোকবলকে উপকেন্দ্র নির্মাণ কাজের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং উপ-কেন্দ্রের পরিচিত করণ বিষয়ে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। যা একটি বাস্তবতা বিবর্জিত ও অপরিণামদর্শী পদক্ষেপ।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি, ঠিকাদারের লোকবল সাধারণত লাইন নির্মাণ সংক্রান্ত কাজ করে থাকেন। উপ-কেন্দ্র নির্মাণের সাথে তাদের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই। উপ-কেন্দ্র নির্মাণ কাজের ঠিকাদার আলাদা এবং অভিজ্ঞ লোকবল। সমিতিতে বর্তমানে চুক্তিবদ্ধ কোনো উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান নেই‌। এমনকি বিগত ৪৭ বছরেও উপ-কেন্দ্রে এই ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করার কোনো নজিরও নেই।

এছাড়া ঠিকাদারের শ্রমিকরা যেমন সমিতির নিয়মিত বা চুক্তিভিত্তিক লোকবল নয়, তেমনি ঠিকাদারেরও নিয়মিত বা চুক্তিভিত্তিক লোকবল নয়। ঠিকাদাররা যখন যাকে পান তাকে দিয়েই কাজ করান। এমনকি এই লোকবলের সাথে কাজের বিষয়ে আরইবি বা পবিসের কোনো চুক্তি বা অনুমতিপত্রও নেই। ফলে সিস্টেমের প্রতি তাদের কোনো দায়বদ্ধতা নেই।

এভাবে বিচ্ছিন্ন লোকবলকে সরকারের কেপিআইভূক্ত স্পর্শকাতর একটা সিস্টেম পরিচালনা করার প্রশিক্ষণ দিলে যেকোনো মুহূর্তে বিদ্যুৎ খাতে অস্থিতীশলতা ও বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া ঠিকাদারের লোকবলকে সাবস্টেশন অপারেশনের প্রশিক্ষণ দিলে ভবিষ্যতে যদি কোনো বিক্ষুদ্ধ জনতার সাথে বিদ্যুৎ বিভাগের কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির উদ্রেক ঘটে তখন তারা সাবস্টেশনে প্রবেশ করে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার বিপর্যয় ঘটানোর আশঙ্কামূলক নয়। তখন এই দায় কে নেবে?

বিজ্ঞপ্তিতে পবিস কর্মকর্তা কর্মচারীরা বলেন, এই একটি সিদ্ধান্তে বোঝা যায় বিআরইবি কতটা বাস্তবতা বিবর্জিত, অদক্ষ এবং অদূরদর্শী প্রতিষ্ঠান। আরইবির কর্মকর্তাদের বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকায় এমন হঠকারী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে স্পষ্টত প্রতীয়মান।

বিজ্ঞপ্তিতে কর্মকর্তা কর্মচারীরা আরো অভিযোগ করে বলেন, সারাদেশে বর্তমানে ভয়াবহ লোডশেডিং চলছে। মাঠ পর্যায়ে সরাসরি গ্রাহক সেবায় নিয়োজিত নয় বিধায় বিআরইবি লোড বরাদ্দের বিষয়ে উদাসীন। লোডশেডিং এর ফলে ব্যাপক জনরোষ সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিনিয়ত সমিতির বিভিন্ন অফিসে বিক্ষোভ ও হামলার ঘটনা ঘটছে। এতে সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এমনিতেই জীবনশঙ্কা নিয়ে কর্মক্ষেত্রে অবস্থান করে গ্রাহক সেবা দিচ্ছেন, তদুপরি এই সঙ্কটকালীন সময়ে সাবস্টেশনে প্রশিক্ষণ আয়োজন করে কৃত্রিমভাবে ফোর্সশেড করলে গ্রাহক অসন্তোষ তীব্র আকার ধারন করবে এবং যেকোনো মুহূর্তে অপ্রীতিকর ঘটনার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।

এমতাবস্থায় আরইবি কর্তৃক পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে জনস্বার্থবিরোধী দপ্তরাদেশ চাপিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপপ্রয়াস বলেই প্রতীয়মান হয়। গ্রাহক সেবার স্বার্থে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সকল অফিস এবং উপ-কেন্দ্রসমূহে বিশেষ নিরাপত্তার জন্য সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সজাগ থাকার আহ্বান জানান তারা। ফলে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্ম পরিবেশ মারাত্মকভাবে বিনষ্ট হওয়াসহ বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং গ্রাহক সেবায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে তার দায় দায়িত্ব আরইবির ওপর বর্তাবে বলেও হুঁশিয়ারি করা হয়।

এমতাবস্থায়, দেশের সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায় বিদ্যমান সকল বৈষম্য অতি দ্রুত নিরসনের মাধ্যমে সুষ্ঠু কর্ম পরিবেশ নিশ্চিতের লক্ষ্যে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক গঠিত রিফর্ম কমিটির সুপারিশমালা প্রস্তুত এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো) কর্তৃক সকল চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিত করণের মাধ্যমে দুই দফা দাবি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ অতীব জরুরি বলে মনে করছি। অন্যথায় পরিস্থিতির শিকার হয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে পূর্বাপেক্ষা কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা ও বাস্তবায়ন ছাড়া গত্যন্তর থাকবে না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন পবিস কর্মকর্তা কর্মচারীরা।


আরো সংবাদ



premium cement