২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পা নেই তবুও দৌড়ে প্রথম

পা নেই তবুও দৌড়ে প্রথম - ছবি: সংগৃহীত

প্যারিসের মূল ফুটবল স্টেডিয়াম স্টাডিও ডি ফ্রান্স। এটি ফ্রান্সের জাতীয় স্টেডিয়াম। পরশু এই স্টেডিয়ামের অ্যাথলেটিক্স ট্র্যাকের রাতটি ছিল নেদারল্যান্ডসের অ্যাথলেটিদের জন্য। প্যারালম্পিকে মহিলাদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টের টি-৬৪ ক্যাটাগরীতে স্বর্ণ, রৌপ্য এবং ব্রোঞ্জ তিনটি পদকই গেছে ডাচদের দখলে।

লক্ষ্যণীয় বিষয় এই ইভেন্টে অংশ নেয়া সাতজনের মধ্যে তিন জনেরই দুই পায়ের একটিও নেই। আর যিনি প্রথম হয়েছেন সেই ডাচ মহিলা ফ্লেউর জংয়েরও কোনো পা নেই। নকল পা লাগিয়েই স্বর্ণ জিতেছেন তিনি। পুরো ক্যারিয়ারে স্পিন্ট ইভেন্টে এটি তার পঞ্চম স্বর্ণ। ধরে রেখেছেন টোকিও প্যারালম্পিকে পাওয়া খেতাব। প্যারিসে সময় নেন ১২ দশমিক ৫০ সেকেন্ড।

এছাড়া বিশ্ব প্যারা অ্যাথলেটিক্স এবং ইউরোপিয়ান প্যারা অ্যাথলেটিক্সেও স্বর্ণ গলায় তুলেছেন। ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিকেও তিনি দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। তবে সেবার টি-৪৪ ক্যাটাগরিতে ১০০ ও ২০০ মিটারে ব্যর্থ ছিলেন। স্প্রিন্টের বাইরে তার ২০২১ সালে প্যারালম্পিকে স্বর্ণ জয় করা লং জাম্পে। তা নতুন বিশ্ব রেকর্ড গড়ার মাধ্যমে। সেই অলিম্পিকে তিনি ছিলেন দেশের পতাকা বহনকারী।

২৮ বছর বয়সী ১ দশমিক ৮৩ মিটার উচ্চতার ফ্লেউর জং ১৩ বছর বয়সে দুই পাই হারান। তবে তা কোনো দুর্ঘটনায় নয়। রক্তে জীবানুর উপস্থিতি এবং এর সংক্রমণের কারণে তার দুই পাই কেটে ফেলতে হয়। এরপর ডাচ প্যারা কোচ বিবিয়ান মেন্টালের অধীনে তাকে পুরোপুরি সুস্থ করার চেষ্টা চলতে থাকে। ২০১৩ সালে প্যারা অ্যাথলেট প্রতিভা হিসেবে তাকে মনোনীত করে ডাচ অলিম্পিক কমিটি। পরবর্তীতে কোচ মারলন ভ্যান হিজি তাকে আরো ঘঁষা মাজা করেন।

পরশু তখন তার স্প্রিন্ট চলছিল তখন সেই দৃশ্য দেশে বেশ উৎফুল্ল এক ডাচ স্বেচ্ছাসেবক। একেতো তিনটি পদকই গেছে তার দেশের দখলে। সে সাথে ওই স্বেচ্ছাসেবক যে ট্রেনিং সেন্টারে চাকরি করতেন সেই সেন্টারেরই শিক্ষার্থী ছিলেন ফ্লেউর।

নেদারল্যান্ডসের আর্নহেমের পাপেনডলে অবস্থিত ন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির অফিস। সেখানে হ্যান্ডবল, আরচারী, হুইলচেয়ার বাস্কেটবল, অ্যাথলেটিক্স, জুডো, সাইক্লিং, ভলিবল, ব্যাডমিন্টনে খেলোয়াড়দের সারা বছরব্যাপী ট্রেনিং হয়। সেখানে এই পঙ্গু হয়ে যাওয়া ক্রীড়াবিদরা সব ধরনের প্রশিক্ষণ পান স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য। রান্না বান্নাও শেখানো হয়। যাতে করে তারা অনুশীলন শেষে শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার খেতে পারেন। বারণ করা হয় বাইরের রেস্টুরেন্টের খাবার খেতে। জানান সেই স্বেচ্ছাসেবক।

এবারের প্যারালম্পিকে ফ্লেউরদের এই সাফল্যটা সেই ট্রেনিং সেন্টারের ইমেজটা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। জানান ওই ভলিন্টিয়ার।


আরো সংবাদ



premium cement