টিকটকে ভিডিও দেখে পুরস্কার, প্রভাব ফেলছে মানসিক স্বাস্থ্যে
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ২৩:১৫
টিকটক লাইট অ্যাপে ভিডিও দেখে পুরস্কার জেতার দিকটি ব্যবহারকারীদের মানসিক স্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলবে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে ইউরোপিয়ান কমিশন।
মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সংস্থা টিকটক তার ‘লাইট রিওয়ার্ডস’ প্রকল্পের বিষয়ে একটি ঝুঁকি মূল্যায়ন প্রতিবেদন ইউরোপিয়ান কমিশনের কাছে জমা দেয়। এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য কমিশন টিকটককে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল।
গত মাসে এই তথ্য জমা দিতে না পারায় কমিশন টিকটককে এমন নির্দেশ দেয়।
কমিশনের এক মুখপাত্র বলেন, ‘এটা নিশ্চিত করছি যে আমরা টিকটকের উত্তর পেয়েছি।’
ইউরোপিয়ান কমিশন এখন তাদের এই উত্তরের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করবে।
টিকটক লাইটকে ঘিরে উদ্বেগে স্পেন ও ফ্রান্স
ফ্রান্সে ও স্পেনে চালু হওয়া টিকটক লাইট, যা মূল টিকটকের সীমিত সুবিধাযুক্ত অ্যাপ। ফোনে কম মেমোরি ব্যবহার করে ও ধীরগতির ইন্টারনেট সংযোগেও চলে এটি। অ্যাপে কাটানো সময়ের বিনিময়ে পাওয়া ‘রিওয়ার্ড’ বা পুরস্কারমূলক পয়েন্ট দিয়ে বিভিন্ন দোকান বা অনলাইন ব্যবসার ভাউচার বা উপহার কার্ড কিনতে পারে ব্যবহারকারীরা।
এই চীনা মালিকানায় থাকা অ্যাপটির রিওয়ার্ড ব্যবস্থাটি কিভাবে আসক্তিতে পরিণত হবে না বা মানসিক স্বাস্থ্যে এর কেমন ঝুঁকি রয়েছে, বিশেষ করে শিশুদের ওপর তা অ্যাপ প্রকাশ হওয়ার আগেই জানতে চায় ইউরোপিয়ান কমিশন।
খতিয়ে দেখা ঝুঁকি
এছাড়া এই কমিশন তদন্ত করে দেখছে, এই অ্যাপটি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ডিজিটাল পরিষেবা আইন ভঙ্গ করেছে কিনা।
এই আইন অনুযায়ী, সকল বড়মাপের অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে তাদের ‘সম্ভাব্য ঝুঁকি’ খতিয়ে দেখতে হয়।
ইউরোপিয়ান কমিশনার থিয়েরি ব্রেটন বলেন, ‘ছোট, দ্রুত ভিডিওর অনিঃশেষ ধারায় টিকটক মানুষকে নিজের পরিচিত গণ্ডীর বাইরের দুনিয়ার সাথে যুক্ত হওয়ার একটি মজাদার উপায় দেয়। কিন্তু তার সাথে আসে ঝুঁকিও, বিশেষ করে আমাদের সন্তানদের জন্য। যেমন আসক্তি, ভয়, অবসাদ, খাবারের অনিয়ম, মনযোগের অভাব।’
একটি বিবৃতিতে টিকটক বলে যে অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য থাকছে না টিকটক লাইটের ব্যবহার। এবং রিওয়ার্ড পাওয়ার মতো ভিডিও যত খুশি দেখতে পারবেন না ব্যবহারকারী। তাতেও বেঁধে দেয়া হচ্ছে দৈনিক সর্বোচ্চ ভিডিওর সংখ্যা।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা এই সিদ্ধান্তে অখুশি, যেখানে বলা হচ্ছে যে ১৮ বছরের কম বয়সীদের জন্য টিকটক লাইট রিওয়ার্ডস হাব চালু হচ্ছে না ও দিনের ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে সীমা বেঁধে দেয়া হচ্ছে। আমরা কমিশনের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাবে।’
ডিজিটাল পরিষেবা আইনের আওতায় যদি দেখা যায় যে টিকটক ঝুঁকি মূল্যায়নে খামতি রেখেছে, তাহলে কমিশন তাদের গোটা বিশ্বে যত আয়, সেই আয়ের ছয় শতাংশের সমমূল্যের জরিমানা করতে পারে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে