১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

মহাকাশযান গ্রহাণুর কক্ষপথ পরিবর্তন করতে সফল হয়েছে : নাসা

মহাকাশযান গ্রহাণুর কক্ষপথ পরিবর্তন করতে সফল হয়েছে : নাসা -

পৃথিবী থেকে লাখ লাখ মাইল দূরে অবস্থিত ছোট এক গ্রহাণুকে এর নিজ কক্ষপথ থেকে সরাতে সক্ষম হয়েছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থার (নাসা) মহাকাশযান। শুধু সরিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, ছোট ছোট টুকরায় ধ্বংসও করেছে। ‘সেভ দ্য ওয়ার্ল্ড’ বা পৃথিবীকে রক্ষার এই পরীক্ষামূলক অভিযান থেকে কী ফল পাওয়া গেছে তা মঙ্গলবার নাসা জানিয়েছে।

দুই সপ্তাহ আগে চালানো অভিযানটিতে মূলত দেখা হয়েছে যে ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে গ্রহাণু বা মহাকাশীয় বস্তু ধেয়ে এলে তা মোকাবেলায় কী করা যেতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত মহাকাশ সংস্থার সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলেন, ‘এই অভিযানটি প্রমাণ করে যে মহাবিশ্ব পৃথিবীর দিকে যাই ছুঁড়ে দিক না কেন তা প্রতিহতে নাসা প্রস্তুত হচ্ছে।’

ডার্ট (ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্ট) মহাকাশযানটি ২৬ সেপ্টেম্বর ডিমরফোস নামের গ্রহাণুতে ধাক্কা খেলে সেখানে গর্ত তৈরি হয়। এতে ধুলা ও ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে পড়ে, যা দেখতে অনেকটা ধূমকেতুর মতো। যার থেকে আলোর ঝলকানিও দেখা গেছে।

৫২৫ ফুটের গ্রহাণুতে কী প্রভাব পড়ল তা পর্যবেক্ষণ করতে চিলি ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে টেলিস্কোপের সাহায্যে বেশ সময় নিয়ে দেখতে হয়েছে নাসাকে।

ঘটনাটির আগে ছোট এই গ্রহাণু-এর প্রধান গ্রহাণুকে প্রদক্ষিণ করতে ১১ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট সময় নিয়েছিল। বিজ্ঞানীরা চেয়েছিলেন গ্রহাণুটির প্রদক্ষিণ সময় ১০ মিনিট কমিয়ে আনতে, কিন্তু নেলসন বলছেন গ্রহাণুটির কক্ষপথ প্রায় ৩২ মিনিট কমে গেছে।

নাসার গ্রহ বিজ্ঞানের পরিচালক লরি গ্লেজ বলেন, ‘আমরা পুরা বিষয়টি হজম করতে কিছুটা সময় নেই… কারণ এই প্রথমবারের মতো মানুষ কোনো গ্রহাণুর কক্ষপথে পরিবর্তন আনতে পেরেছে।’

অলাভজনক বি-৬১২ ফাউন্ডেশনের একজন সহপ্রতিষ্ঠাতা, গ্রহাণুর আঘাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষা করার জন্য নিবেদিত অ্যাপোলো মহাকাশচারী রাস্টি শোয়েইকার্ট বলেন যে তিনি স্পষ্টতই আনন্দিত। ফলাফল ও মিশনটির মাধ্যমে যে এই ক্ষেত্রে মনোযোগ এনেছে তা নিয়ে তার কোনো প্রশ্ন নেই।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিদ্যা গবেষণাগারের অধ্যাপক ও এই অভিযানের নেতৃত্বদানকারী ন্যান্সি চ্যাবট বলেন, এ ধরনের কৌশল প্রয়োগের জন্য আমাদের অবশ্যই উপযুক্ত সময় আসতে হবে যাতে তা কার্যকর হয়।

বলে রাখা ভালো, বিজ্ঞানীরা অদূর ভবিষ্যতে পৃথিবীর দিকে কোনো মহাকাশীয় বস্তুর আঘাত হানার সম্ভাবনা দেখছে না।

মহাকাশযান তৈরি ও অভিযান পরিচালনায় ৩২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে।
সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement