২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

গর্ভাবস্থায় করোনা টিকা জন্মের পর শিশুদের সুরক্ষা দেয় : গবেষণা

গর্ভাবস্থায় করোনা টিকা জন্মের পর শিশুদের সুরক্ষা দেয় : গবেষণা - ছবি : সংগৃহীত

করোনাভাইরাস মহামারী মোকাবিলায় কোভিড-১৯ টিকার গুরুত্ব অপরিসীম। একইভাবে গর্ভবতী নারীদের জন্যও টিকার প্রয়োজনীয়তার কথা অতীতের অনেক গবেষণায় উঠে এসেছে। আর এবার সর্বশেষ একটি গবেষণা বলছে, গর্ভাবস্থায় করোনা টিকা নিলে তা জন্মের পর শিশুদের সুরক্ষায় বেশ কার্যকর হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকদের প্রকাশিত একটি গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে বলে বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভবতী নারীরা করোনা টিকা নিলে জন্মের পর শিশুর সুরক্ষায় সেটি বেশ কার্যকর হয়। আরো স্পষ্ট করে বললে, গর্ভাবস্থায় মায়ের করোনা টিকা জন্মের পর সদ্যোজাত শিশুরা কোভিডে আক্রান্ত হলেও তাদের হাসপাতালে ভর্তির আশঙ্কা কমিয়ে দেয়। বিশেষ করে গর্ভকালীন সময়ের শেষের দিকে যদি নারীরা করোনা টিকা নিয়ে থাকেন, তাহলে জন্মের পর শিশুরা এই সুবিধা পায়।

মহামারী মোকাবিলায় করোনা টিকা গর্ভবর্তী নারীদের জন্য যে উপকারী সেটি আগেই জানা গিয়েছিল। কিন্তু গর্ভাবস্থায় নারীরা টিকা নিলে সেটির প্রভাব শিশুর ওপর পড়ে কি না সেটি যাচাই করতেই এই গবেষণা পরিচালনা করেন মার্কিন গবেষকরা। কারণ সদ্যোজাত শিশুরা টিকা গ্রহণের জন্য খুবই কমবয়সী।

সর্বশেষ গবেষণার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিষয়ক প্রধান সরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং দেশটির বেশ কয়েকটি শিশু হাসপাতালের গবেষকরা ২০২১ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত ছয় মাসের কমবয়সী শিশুদের স্বাস্থ্যের ওপর নজর রেখেছিলেন।

রয়টার্স বলছে, এই সময়ের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ৩৭৯ জন সদ্যোজাত শিশুর শারীরিক তথ্য বিশ্লেষণ করেন গবেষকরা। এই শিশুদের মধ্যে ১৭৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে এবং বাকি ২০৩ জন অন্যান্য জটিলতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় যেসব নারী করোনা টিকা নিয়েছেন, জন্মের পর তাদের শিশুরা অসুস্থ হলেও হাসপাতালে ভর্তি ঠেকাতে মায়ের নেওয়া ভ্যাকসিন সার্বিকভাবে ৬১ শতাংশ কার্যকর হয়েছে। এছাড়া গর্ভে সন্তান আসার ২১ সপ্তাহ থেকে ডেলিভারির ১৪ দিন আগে যেসব নারী টিকা নিয়েছেন তাদের শিশুদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে এই হার ৮০ শতাংশ।

অন্যদিকে গর্ভধারণের শুরুর দিকে যেসব নারী করোনা টিকা নিয়েছেন তাদের শিশুদের ক্ষেত্রে সুরক্ষার এই হার নেমে গেছে ৩২ শতাংশে। গবেষকরা বলছেন, প্রেগন্যান্সির শুরুর দিকে নেয়া টিকার কার্যকারিতা ব্যাখ্যা করার সময় সতর্ক থাকতে হবে, কারণ সেসময় গর্ভস্থ শিশু থাকে খুবই ছোট।

সিডিসি’র ডানা মিয়ানে-ডেলম্যান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এটিই নিশ্চিত করতে চাচ্ছি যে, টিকার মাধ্যমে আমরা এখন মা ও শিশু উভয়কেই সুরক্ষা দিচ্ছি। আর তাই কোনো গর্ভবতী নারী টিকা নিতে চাইলে দেরি না করে দ্রুতই নিয়ে নেওয়া উচিত।’

সিডিসি’র তথ্য অনুযায়ী, করোনায় গর্ভবতী নারীদের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া গর্ভকালীন সময়ে করোনায় আক্রান্ত হলে অপরিণত শিশুর জন্ম, মৃত শিশুর জন্মসহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।

আর তাই, গর্ভবতী নারী, সন্তানকে বুকের দুধ পান করাচ্ছেন এমন নারী, যারা গর্ভবতী হওয়ার চেষ্টা করছেন এমনকি ভবিষ্যতে যারা গর্ভবতী হতে পারেন, এমন সব নারীকেই করোনা টিকা নেয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছে সংস্থাটি।

 


আরো সংবাদ



premium cement