আন্টার্কটিকার তুষারভূমিতে কিচেন গার্ডেন! ফলছে টমেটো, ব্রকোলি
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৩ ডিসেম্বর ২০২১, ০৭:৪১
তুষারভূমিতে ‘কিচেন গার্ডেন’! পুরু বরফের চাদরে মোড়া আন্টার্কটিকায় এখন শীতের সব্জির সমারোহ। এর আগে মহাকাশে কাঁচা মরিচ ফলিয়ে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন নাসার বিজ্ঞানীরা। আর এবার সূর্যের আলো ও মাটি ছাড়াই পূর্ব আন্টার্কটিকায়চাষ হলো হরেক সব্জির। কী নেই সেই তালিকায়? মরিচ, টমেটো থেকে বিট, শসা, ব্রকোলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুস এমনকি ফলছে মশলাও। অত্যাধুনিক গ্রিনহাউস তৈরি করে তার ভেতরে ফলানো হয়েছে এসব সব্জি।
কার্যত অসম্ভবকে সম্ভব করে এই সব্জিবাগান গড়ে তুলেছে জার্মান এরোস্পেস সেন্টার (ডিএলআর)। এমনিতেই বছরের ছয় মাস সূর্য ওঠে না আন্টার্কটিকায়। বাকি ছয় মাসও যাতে ওই গ্রিনহাউসে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে না পারে, তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে নানা রঙের কৃত্রিম আলো। যা গাছে ফুল-ফল হতে সাহায্য করেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
যেহেতু বরফ রাজ্যে মাটি নেই। তাই চাষের জন্য প্রয়োগ করা হয়েছে বিশেষ প্রযুক্তি। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এরোপনিক্স প্রযুক্তির মাধ্যমে গাছের শিকড়ে নির্দিষ্ট সময় অন্তর স্প্রে করা হয়েছে পুষ্টি উপাদনের দ্রবণ। আর তাতেই ফুলে-ফলে ভরে উঠেছে গোটা বাগান। বরফের সাম্রাজ্যে সবুজে ঘেরা এই বাগানের পোশাকি নাম ‘ইডেন আইএসএস’। বাগানটি গড়ে তোলা হয়েছে আন্টার্কটিকার পূর্ব উপকূলে ‘এক্সট্রম আইস সেল্ফ’-এর ওপর জার্মানির মেরু গবেষণা কেন্দ্র নওমেয়ার ত্রি স্টেশনের কাছেই।
এর আগে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে সব্জি ফলেছে। তার সাথে আন্টার্কটিকায় উৎপাদিত সব্জির তুলনা করে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কয়েক মাস আগে জার্মান এরোস্পেস সেন্টারে কাজে যোগ দেন জেস বানচেক নামে নাসার এক বিজ্ঞানী। নিজেদের খাওয়াদাওয়ার জন্য সেখানে কোনো শাকসব্জি ফলানোর চিন্তাভাবনা প্রথম তার মাথাতেই আসে। তারপরই শুরু হয় চেষ্টা।
ইডেন আইএসএস প্রকল্পের প্রধান ড্যানিয়েল শ্যুবার্ট এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই গবেষণা তাদের অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে। তার মতে, বিজ্ঞানীদের এই সাফল্য মহাকাশ, চাঁদ কিংবা লালগ্রহ মঙ্গলে পরবর্তী সময়ে আরো নতুন নতুন ফসল ফলাতে সাহায্য করবে।
সূত্র : বর্তমান