ফাইজারের টিকা নিয়ে নিউজিল্যান্ডে নারীর মৃত্যু
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ৩০ আগস্ট ২০২১, ১৮:১১
নিউজিল্যান্ডে এই প্রথম ফাইজারের কোভিড টিকা নেয়ার পর একজনের মৃত্যু ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
টিকার নিরাপত্তা স্বাধীনভাবে যাচাই করে এমন একটি বোর্ড বলেছে, টিকা নেয়ার পর একজন নারী `সম্ভবত' মায়োকার্ডাইটিসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। মায়োকার্ডাইটিস হৃদযন্ত্রের পেশির এক ধরণের প্রদাহ। তবে বোর্ডের পক্ষ থেকে এও বলা হয়েছে যে এখানে হয়তো অন্য অনেক সমস্যা ছিল, যা টিকা দেয়ার পর তার স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলেছে।
ইউরোপের ঔষধ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মতে, মায়োকার্ডাইটিসের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই বিরল, এবং কোভিডের টিকা নেয়ার সুফলের কথা বিবেচনা করলে এই ঝুঁকি একেবারেই কম। তবে নিউজিল্যান্ডে এই মৃত্যুর কারণ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারণ করা হয়নি।
এক বিবৃতিতে নিউজিল্যান্ডের এই বোর্ড বলেছে, ‘ফাইজারের টিকা নেয়ার পর কারও মৃত্যু ঘটেছে, এ রকম ঘটনা নিউজিল্যান্ডে এটাই প্রথম। সেন্টার ফর অ্যাডভার্স রিয়েকশন্স মনিটরিং এর আগেও সম্প্রতি টিকা নেয়া মানুষের মৃত্যুর কিছু রিপোর্ট পেয়েছে, তবে এর কোনোটাই টিকা নেয়ার সাথে সম্পর্কিত ছিল না।’
এই নারীর মৃত্যুর ব্যাপারে আরো তদন্ত চালানো হচ্ছে। একজন তদন্তকারী এ বিষয়ে তার মতামত জানাবেন। কর্মকর্তারা এই ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানাননি। এই নারীর বয়স কত ছিল, সেটাও বলা হয়নি।
ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সির মতে, ফাইজার এবং মডার্নার কোভিড টিকার খুবই বিরল এক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে মায়োকার্ডাইটিস হতে পারে। তবে তরুণ পুরুষদের মধ্যেই এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশংকা বেশি।
যেমন, যুক্তরাজ্যে ফাইজারের টিকা নেয়া ১৯৫ জনের মধ্যে মায়োকার্ডাইটিসের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। ফাইজারের টিকা নেয়া প্রতি ১০ লাখ মানুষের মধ্যে পাঁচজনের ক্ষেত্রে এটি ঘটেছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খুব মৃদু উপসর্গ দেখা গেছে।
ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি এরপরও সবাইকে কোভিড টিকা নেয়া তাগিদ দিয়েছে, কারণ কোভিডে গুরুতর অসুস্থ হওয়া থেকে এই টিকা ভালো সুরক্ষা দেয়। মায়োকার্ডাইটিসের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে নতুন করে বুকের ব্যাথা শুরু হওয়া, ঘন ঘন নিশ্বাস নেয়া এবং হৃদপিন্ডের স্পন্দন অনিয়মিত হয়ে পড়া।
টিকা নেয়ার পরের কয়েকদিনের মধ্যে কেউ এ রকম লক্ষণে আক্রান্ত হলে বিশেষজ্ঞরা সাথে সাথে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তবে নিউজিল্যান্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা এরপরও ফাইজারের টিকা ব্যবহারের ওপর আস্থা রাখেন।
জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসেবে, নিউজিল্যান্ডে এ পর্যন্ত তিন হাজার ৪৬৫ জনের কোভিড ধরা পড়েছে এবং ২৬ জনের মৃত্যু ঘটেছে। নিউজিল্যান্ড শুরুতে যেভাবে করোনাভাইরাস মহামারীর মোকাবেলা করে, তা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল। তবে সেখানে টিকাদান কার্যক্রম চালু হয়েছে বেশ ধীর গতিতে। তবে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এই কার্যক্রম জোরদার হয়েছে।
দেশটিতে এ পর্যন্ত ৩০ লাখ ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে এবং মোট জনসংখ্যার ২৩ শতাংশ এখন পর্যন্ত পূর্ণ ডোজের টিকা পেয়েছে।
সম্প্রতি নিউজিল্যান্ডে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের কারণে কোভিড সংক্রমণ বেড়ে যায়, যার কারণে দেশের বিরাট অংশ জুড়ে লকডাউন জারি করা হয়। সবচেয়ে বড় নগরী অকল্যান্ড ছাড়া দেশের অন্যান্য স্থানে লকডাউন মঙ্গলবার হতে শিথিল করার কথা রয়েছে।
সূত্র : বিবিসি