বজ্রপাতে সারাদেশে ৫ জনের মৃত্যু
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৫ জুন ২০২১, ১৯:৪৪, আপডেট: ০৫ জুন ২০২১, ১৯:৪৫
বজ্রপাতে শনিবার সারাদেশে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে নয়া দিগন্তের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী পাঠকদের জন্য তা তুলে ধরা হলো।
শরীয়তপুর সংবাদদাতা
বজ্রপাতে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় তাইজুল ইসলাম খলিফা (৬২) ও আব্দুল মালেক পেয়াদা (৪০) নামের দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
জাজিরা থানা সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বেলা দেড়টার দিকে মূলনা ইউনিয়নের জয়সাগর গ্রামের মৃত ফেলু খলিফার ছেলে তাইজুল ইসলাম খলিফা (৬২) বাড়িতে যাওয়ার সময় বজ্রপাতের শিকার হন।
অপর দিকে একই ইউনিয়নের ডা: মফিজুল ইসলাম রাড়ীকান্দি গ্রামের হুজুর পেয়াদার ছেলে আব্দুল মালেক পেয়াদা (৪০) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতের শিকার হন। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জাজিরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: মাহবুবুর রহমান জানান, বজ্রপাতে দু’জন নিহতের ঘটনায় থানায় একটি ডায়েরি করা হয়েছে।
আরো পড়ুন : রাজধানীতে বৃষ্টির সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু
পাবনা সংবাদদাতা
পাবনার বেড়ায় দুলাল মোল্লা (৪০) নামের একজন বজ্রপাতে মারা গেছেন। শনিবার ভোর ৬টার দিকে চাকলা ছোন্দহ ব্রিজ নামক স্থানে ফসলি মাঠে বজ্রপাতে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত দুলাল মোল্লা উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চাকলা মোল্লা পাড়া গ্রামের মৃত আবুসমা মোল্লার ছেলে। তিনি চাকলা মোল্লাবাড়ি বাসস্ট্যান্ডের সোহান ডেকোরেটরের মালিক ছিলেন।
বেড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবিন্দ সরকার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়রা জানায়, দুলাল প্রতিদিন ভোরে তার নিজের জমিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি তুলতে মাঠে যান। প্রতিদিনের মতো শনিবার ভোরে তিনি জমিতে শসা তুলতে গেলে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়। তার কিছুক্ষণ পর বজ্রপাতে তিনি আহত হন। এ সময় একটু দূরে থাকা তার আপন ছোট ভাই মিলনসহ কয়েকজন মিলে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে পাবনা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় বেড়া উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো: শহিদুল্লাহ জানান, পাবনা জেলা প্রশাসকের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল থেকে মৃতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেয়া হবে।
বেলাব (নরসিংদী) সংবাদদাতা
নরসিংদীর বেলাবতে বজ্রপাতে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। ওই নারী উপজেলার চরউজিলাব গ্রামের কাছু মিয়ার স্ত্রী।
এলাকাবাসী জানায়, শনিবার তিনি আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ের জমিতে সিম উঠাতে গেলে বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে কাছু মিয়া জানান, সকাল বেলা তার স্ত্রীর সিম আনতে আড়িয়াল খা নদীর তীরের জমিতে যান। এ সময় প্রচণ্ড ঝড়, শীলা বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। বৃষ্টির পর তিনি জমির দিকে রওনা হলে পথে জানতে পারে তার স্ত্রী বজ্রপাতে মারা গেছে। খবর পেয়ে বেলাব থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
ভোলা সংবাদদাতা
ভোলার লালমোহন উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নে বজ্রপাতে মাসুমা বেগম (২৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন নুরে আলম নামের আরো একজন।
এদিকে মনপুরায় বাড়ির সামনে খেলতে গিয়ে বজ্রপাতের আঘাতে দুই স্কুলছাত্র গুরুতর আহত হয়। পরে আহত দুই ছাত্রকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। শনিবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
লালমোহনে নিহত মাসুমা বেগম ওই ওয়ার্ডের খোরশেদ দরবেশ বাড়ির শাহাবুদ্দিনের স্ত্রী। তিনি এক সন্তানের জননী। আহত নুরে আলম একই বাড়ির খোরশেদ দরবেশের ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেলে বৃষ্টির সময় হাঁস-মুরগী ঘরে আনতে গেলে বজ্রপাতে মাসুমা বেগমের মৃত্যু হয়।
অপর দিকে বৃষ্টির মধ্যে মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতের আঘাতে নুরে আলম আহত হন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো: মিলন।
এদিকে মনপুরায় বাড়ির সামনে খেলতে গিয়ে বজ্রপাতের আঘাতে দুই স্কুলছাত্র গুরুতর আহত হয়। পরে আহত দুই ছাত্রকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। শনিবার বিকেল ৪টায় উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়নের চরফৈজুদ্দিন গ্রামের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কাঞ্চনের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
বজ্রপাতে আহত দুই ছাত্র হলেন গোমাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ও চরফৈজুদ্দিন গ্রামের বাসিন্দা কাঞ্চনের ছেলে আল-আমিন (১০) ও কলাতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ও কলাতলী চরের বাসিন্দা মো: আলমের ছেলে ফাহিম (১২)। তারা দু’জন সম্পর্কে চাচাতো ভাই।
আল-আমিনের বাবা কাঞ্চন জানান, আমার ভাইয়ের ছেলে ফাহিম কলাতলীচর থেকে বাড়িতে বেড়াতে আসে। বিকেল বেলায় বৃষ্টিতে বাড়ির উঠানে দু’জন ফুটবল খেলছিল। এই সময় বজ্রপাতের আঘাতে দু’জন জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা: নাইম হাসনাত জানান, বজ্রপাতের আঘাতে আহত দু’জনকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে তাদের মধ্যে আল আমিনের অবস্থা গুরুতর।