ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার উদ্বেগজনক
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২২ মার্চ ২০২১, ১৭:০০
করোনাভাইরাস সংক্রমণের সবচেয়ে খারাপ সময় পার করেছে ভারত। গত সপ্তাহে দেশটিতে রেকর্ড ২ লাখ ৬০ হাজার ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যা গত বছর করোনা মাহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে বেশি।
ভারতে নতুন সংক্রমিত রোগীদের ৭০ শতাংশই দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে নতুন করে এ সংক্রমণের ঢেউ দেখা যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, নতুন প্রজাতির করোনাভাইরাসের কারণে এ সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু, নতুন প্রজাতির করোনাই সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য দায়ী এটা এখনো প্রমাণিত হয়নি।
ভারতে ১ কোটি ১০ লাখের বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন এবং এক লাখ ৬০ হাজার করোনা রোগী মারা গেছেন।
ভারতে দৈনিক সংক্রমণের হার ২০২১ সালের শুরুর দিকে কমে আসছিল। তখন দৈনিক সংক্রমণ ছিল ২০ হাজারের কম। যা গত সেপ্টেম্বরে ছিল ৯০ হাজারের বেশি।
কিন্তু, গত কয়েক সপ্তাহে করোনা সংক্রমণের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংক্রমণে মহারাষ্ট্র প্রদেশ সবার শীর্ষে। অন্যান্য প্রদেশগুলোর মধ্যে কেরেলা, পাঞ্জাব, কর্নাটক, গুজরাট , তামিল নাড়ু, হারিয়ানা ও মধ্য প্রদেশে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
মহারাষ্ট্র প্রদেশের রাজধানী মুম্বাইয়ের সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন তারা বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন জনবহুল এলাকা যেমন শপিং সেন্টার ও রেইল স্টেশনে দ্রুত করোনা পরীক্ষা করে দেখবেন।
ভারতে গত সপ্তাহে ১৫ থেকে ২১ মার্চের মধ্যে এক লাখ করোনা রোগী বেশি শনাক্ত হয়েছে এর আগের সপ্তাহগুলো থেকে।
হাজারো করোনা রোগীর চিকিৎসা করা বিশিষ্ট সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা: এ ফাতাহউদ্দিন বলেন, ‘করোনা সংক্রমণের এ বৃদ্ধি হতবাক করার মতো কিছু নয়।‘
তিনি আরো বলেন, এ বছরের শুরুর দিকে যখন করোনা সংক্রমণ কম ছিলো তখন এক ‘মিথ্যা আশাবাদী ধারণা’ সমগ্র দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। মানুষ মিথ্যাভাবে ভেবেছিল ভারতের মানুষেরা শক্ত রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করেছে। কিন্তু, বাস্তবে এমনটা হয়নি।
ডা.এ ফাতাহউদ্দিন আরো বিশ্বাস করেন, ‘টিকাদান কার্যক্রমের শুরু হওয়াও এ অবস্থার জন্য দায়ী । কারণ, সাধারণ মানুষ ভেবেছিল টিকা আসার সাথে সাথে স্বাভাবিক সময়ও ফিরে এসেছে।
কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থা থেকে অনেক দূরে। আসলে এটা একটি ভয়াবহ সময়। সমগ্র দেশে টিকা কার্যক্রম যেমন গণহারে প্রয়োগ করতে হবে। একইসাথে করোনার পরীক্ষা, করোনা রোগী অনুসন্ধান ও রোগীদের আলাদা করে রাখার বিষয়টিকেও গুরত্ব দিতে হবে।
চার কোটিরও বেশি ভারতীয় অন্তত এক ডোজ করোনার টিকা গ্রহণ করলেও সেটা দেশটির মাত্র চার ভাগ লোক।
সরকার ভাবছে জুলাইয়ের মধ্যে ২৫ কোটি ঝুঁকিপূর্ণ লোককে করোনার টিকা দেবে। এ পরিমান মানুষের টিকা দিতে প্রতিদিন অন্তত ৩০ লাখ লোককে টিকা দিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, টিকা প্রদানের হার বাড়ানো না হলে এ সময়েরে মধ্যে লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব নয়।
সূত্র : বিবিসি