জরুরি ব্যবহারে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ডব্লিউএইচও’র অনুমোদন

অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এটি এমন এক পদক্ষেপ, যা সংস্থাটিকে মহামারি হ্রাস করার জন্য জাতিসঙ্ঘের প্রকল্পের অংশ হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে টিকার লাখ লাখ ডোজ পাঠানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।

ডব্লিউএইচও সোমবার এক বিবৃতিতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয়ার কথা জানায়।

ডিসেম্বরে ফাইজার-বায়োএনটেক ভ্যাকসিন অনুমোদনের পরে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন ডব্লিউএইচও’র সবুজ সঙ্কেত পাওয়া দ্বিতীয় ভ্যাকসিন।

আজ ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সমর্থিত কোভ্যাক্স উদ্যোগে যোগ দেয়া দেশগুলোতে ভ্যাকসিনের কয়েক মিলিয়ন ডোজ সরবরাহের সূত্রপাত হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দ্রুত ভ্যাকসিন পৌঁছে দেয়ায় কোভ্যাক্স জোটের মূল লক্ষ্য।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা ডা. মেরিঞ্জেলা সিমো বলেন, ‘যে দেশগুলো এখনো পর্যন্ত ভ্যাকসিন পায়নি, তারা অবশেষে তাদের স্বাস্থ্যকর্মী এবং ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে ভ্যাকসিন দিতে শুরু করতে সক্ষম হবে।’

এর আগে কার্যকারিতা সংক্রান্ত বিতর্কের মধ্যেই ৬৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সীসহ সব প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য সম্প্রতি অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন অনুমোদন দেয় দক্ষিণ কোরিয়ার ওষুধ সুরক্ষা সংস্থা।

চূড়ান্ত পর্যালোচনা সভা শেষে ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক তৈরি ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন দেয় খাদ্য ও ওষুধ সুরক্ষা মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয় অস্ট্রাজেনেকার দুটি পূর্ণ ডোজ এই শর্তে অনুমোদন দিয়েছে যে ফার্মাসিউটিক্যাল ফার্মকে ১৮ বছরের বেশি বয়স্কদের জন্য তিন ধরনের ক্লিনিকাল ট্রায়াল সম্পর্কিত আরো তথ্য জমা দিতে হবে।

তবুও মন্ত্রণালয় ৬৫ বা তার বেশি বয়সের লোকদের এই টিকা দেয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছে। এর আগে পৃথক পর্যালোচনা প্যানেল জানিয়েছিল যে বেশি বয়সীদের জন্য এর কার্যকারিতা সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য নেই।

বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে কার্যকার হওয়ার মতো পর্যাপ্ত তথ্য নেই বলেই সিনিয়রদের জন্য অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবহার নিয়ে বিশ্বব্যাপী বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। গত সপ্তাহে, ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সির বিশেষজ্ঞ কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে এই ভ্যাকসিনটি ১৮ বা তার বেশি বয়সীদের জন্য ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছিল।

এদিকে, কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা ২৪ লাখ ছাড়িয়েছে। সেই সাথে শনাক্ত রোগী ১০ কোটি ৯১ লাখ অতিক্রম করেছে।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় (জেএইচইউ) থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাসে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ২৪ লাখ ৭ হাজার ৬০৭ জনে। এছাড়া, ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৯১ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ জনে।

চীনের উহানে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। গত ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে। এর আগে ২০ জানুয়ারি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।