পৃথিবীরতে দেখা যাবে ‘জেমিনিডস’ উল্কার বৃষ্টিপাত
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১১ ডিসেম্বর ২০২০, ১০:৩৫
আকাশ পরিষ্কার থাকলে পৃথিবীর যে কোন জায়গা থেকে দেখা যাবে জেমিনিডস উল্কার বৃষ্টিপাত। এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে ডিসেম্বর ২০১৭ সালে জাপান সাগরে রাস্কি দ্বীপ থেকে রাতের আকাশে তোলা জেমিনিডিস উল্কার বৃষ্টিপাতের দৃশ্য।
আকাশের দিকে তাকিয়ে হয়ত গত কয়েক মাসে আপনি অন্য উল্কার বৃষ্টি দেখে থাকতে পারেন, কিন্তু ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর যে উল্কা বৃষ্টি হতে যাচ্ছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন সেটা হবে ‘সব উল্কা বৃষ্টির রাজা’।
ধূমকেতুর রেখে যাওয়া ধুলিকণায় ভরা আস্তরণের মধ্যে দিয়ে যখন পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে, তখনই সাধারণত উল্কা বৃষ্টি ঘটে থাকে, বলছেন ব্রিটেনে গ্রেনিচের মানমন্দির, রয়াল অবজারভেটরির জ্যোতির্বিজ্ঞানী প্যাট্রিশিয়া স্কেলটন। কিন্তু জেমিনিডস উল্কার বৃষ্টিপাত ভিন্ন ধরনের। জেমিনিডস উল্কার বৃষ্টি হয় যখন ৩২০০-ফিটন নামে একটি গ্রহাণুর ছেড়ে যাওয়া ধুলিকণার আস্তরের মধ্যে দিয়ে পৃথিবী যায় বলেন তিনি।
অর্থাৎ প্রতি বছর, আমাদের এই পৃথিবী গ্রহ তার কক্ষপথে ঘোরার সময় যখনই মহাজগতে গ্রহাণু বা ধূমকেতুর ছেড়ে যাওয়া নানা ধরনের বর্জ্য পদার্থের মধ্যে দিয়ে যায়, তখনই আমরা রাতের আকাশে নানাধরনের চোখ ধাঁধাঁনো আলোর ছটা দেখতে পাই।
সেভাবেই ১৩ ও ১৪ই ডিসেম্বর আমরা দেখতে চলেছি জেমিনিডসের উল্কা বৃষ্টি। এসময় প্রতি ঘণ্ট্য় দেড়শর মত উল্কার ধারা বৃষ্টি হবে বলে জ্যোতির্বজ্ঞানীরা বলছেন। অর্থাৎ প্রতি ঘন্টায় আমরা ১৫০ আলোর ফোঁটার বিচ্ছুরণ দেখতে পাব। রাতের আকাশ যত অন্ধকার হবে, আলোর বিচ্ছুরণ তত চোখ ধাঁধাঁনো হবে। ২০১৭ সালে আমেরিকায় অ্যারিজোনার আকাশ থেকে জেমিনিডসের উল্কা বৃষ্টি যেভাবে দেখা গিয়েছিল
প্যাট্রিশিয়া আরো বলেন, ‘উল্কা যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে ঢোকে তখন তার গতি থাকে প্রতি সেকেন্ডে ৩৫ কিলোমিটার...সেটা প্রতি ঘন্টায় ১ লাখ ৩০ হাজার কিলোমিটারের সামান্য কম!
আপনি এই উল্কা বৃষ্টির সময় দেখতে পাবেন রাতের আকাশ আলোকিত হয়ে উঠছে হলুদ আলোর ছটায়, কখনও কখনও দেখবেন সবুজ বা নীল আলোর ঝিলিক। প্যাট্রিশিয়া বলছেন, উল্কার কণাগুলো পুড়ে গিয়ে আকাশে এদিক ওদিক ছিটকে পড়ার কারণে এই আলোর রোশনাই আমরা দেখি।
আকাশ যত অন্ধকার হবে, এই অসাধারণ সুন্দর আলোর রোশনাই তত বেশি উপভোগ করার সুযোগ হবে। এমনকি শহরে যারা থাকেন, কৃত্রিম আলোর কারণে আকাশের প্রাকৃতিক অন্ধকার যারা পুরো মাত্রায় পান না,তাদেরও এই আলোর ঝলকানি দেখার সুযোগ হবে।
যারা এই অভিনব আলোর খেলা উপভোগ করতে চান, তাদের জন্য বাড়তি সুখবর এবছর এই সময়ে পড়েছে অমাবস্যা, ফলে আকাশ প্রাকৃতিক কারণেই থাকবে অন্ধকার। এর আগে উল্কা বৃষ্টির সময় পূর্ণিমা থাকায় এই আলোর সৌন্দর্য কম উপভোগ করা গিয়েছিল।
সূত্র: বিবিসি