২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের মহাসম্মিলন দেখা যাবে ২১ ডিসেম্বর

বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের মহাসম্মিলন দেখা যাবে ২১ ডিসেম্বর - সংগৃহীত

বৃহস্পতি এবং শনি শেষবার সবচেয়ে কাছাকাছি এসেছিল ৩৯৭ বছর আগে গ্যালিলেই তার টেলিস্কোপ আবিস্কার করার অল্প কয়েক বছর পর। কিন্তু এবারে তারা পুরো মিলে যেতে চলেছে যা অভিনব একটি প্রক্রিয়া।

‘আকাশ পরিস্কার থাকলে বৃহস্পতি আর শনি গ্রহকে সবচেয়ে সহজে দেখা যায়,’ বলেছেন গ্রেনিচে রয়াল অবজারভেটরির আরেকজন জ্যোতির্বিদ এড ব্লুমার।

এই গ্রহ দুটির মহা সম্মিলন বলতে বোঝানো হয়, যখন তারা একে অপরের একেবারে সামনাসামনি আসে এবং যখন দেখে মনে হয় তারা দুজনে পুরো এক হয়ে গেছে এবং সম্মিলিতভাবে একক একটা গ্রহ হিসাবে আকাশে জ্বলজ্বল করছে। আর ঠিক সেটাই ঘটতে চলেছে ২১শে ডিসেম্বর। এড বলছেন, "এই দুটি 'প্রদক্ষিণরত গ্রহ' বৃহস্পতি ও শনি মহাকাশে এত কাছাকাছি আসবে যে মনে তারা যেন একে অপরকে স্পর্শ করে আছে।"

খালি চোখে দেখে মনে হবে দুটি গ্রহের মধ্যে তফাৎ মাত্র ০.১ ডিগ্রিরও কম, অর্থাৎ তারা একই জায়গায় দাঁড়িয়ে। এটা মহাজগতে আমাদের দৃষ্টিপথের কেরামতি। বর্তমানে পৃথিবী ও বৃহস্পতির মধ্যে দূরত্ব ৮০ কোটি কিলোমিটারের বেশি। বৃহস্পতি ও শনির মধ্যেও দূরত্ব প্রায় একইরকম। কিন্তু এই দুটি বিশাল গ্রহকে আমাদের রাতের আকাশে দেখা যায় একটু একটু করে পরস্পরের কাছে সরে আসতে, তারপর একটা সময় আমাদের দেখে মনে হয় তারা মিলে এক হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘তাদের এই মিলন দেখতে দারুণ লাগবে, বিশেষ করে তাদের এক হয়ে যাবার আগের ও পরের কয়েক দিন দেখা যাবে কীভাবে তারা কাছে আসছে এবং কীভাবে তাদের বদল ঘটছে।’

অবশ্যই জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং মহাকাশ বিষয়ে উৎসাহীদের জন্য এটা দারুণ একটা ব্যাপার। বায়নোকুলার বা ছোট টেলিস্কোপ থাকলে এমনকী বৃহস্পতির চারটি চাঁদও দেখা যায় - আইও, ইউরোপা, গ্যানিমিড এবং ক্যালিস্টো। এই চাঁদগুলোকে গ্যালিলিয়ান চাঁদও বলা হয়। কারণ ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলেই ১৬১০ সালে তার সদ্য আবিষ্কৃত টেলিস্কোপ দিয়ে এই চাঁদগুলোর প্রথম দেখা পান।

শনি ও বৃহস্পতি একই লাইনে চলে আসে প্রতি ১৯.৬ বছরে একবার। ‘কিন্তু এবারের এই মিলন অতি বিরল ঘটনা, কারণ ২০২০র ডিসেম্বরে যা ঘটছে তার কাছাকাছি একটা মিলন এর আগে ঘটেছিল ১৭শ শতাব্দীর গোড়ায়।’

শেষ বার শনি ও বৃহস্পতির এত কাছাকাছি আসার ঘটনা ঘটেছিল ৩৯৭ বছর আগে। ১৬২৩ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানী মি. গ্যালিলেই টেলিস্কোপ আবিস্কার করার তিন বছর পরে।

তিনি বলেন, ‘যারা গ্রহ নক্ষত্র দেখতে উৎসাহী তাদের জন্য এটা সাংঘাতিক উদ্দীপ্ত হবার মত ঘটনা, কারণ জীবদ্দশায় এ প্রক্রিয়া দেখতে পাওয়া খুবই বিরল অভিজ্ঞতা।’

আকাশ পরিস্কার থাকলে খুব সহজে এই মহা মিলন দেখা যাবে। যখন সম্মিলিতভাবে তারা অতি উজ্জ্বল জ্যোতি বিকীরণ করবে। তবে দেখতে চাইলে কিন্তু ঘড়ির দিকে আপনাকে নজর রাখতে হবে। কারণ এই বিরল প্রক্রিয়া দেখা যাবে মাত্র এক ঘন্টা। তারপরই দিকবলয়ে ডুবে যাবে এই দুটি গ্রহ। দেখতে চাইলে ২১ ডিসেম্বরের আগে ঠিক জেনে নিন আকাশের কোথায় এই দুটি গ্রহ দেখা যায়: দক্ষিণ পশ্চিম দিগন্তে কিছুটা নিচের দিকে, সূর্যাস্তের আধ ঘন্টা পর এই দুই গ্রহকে খুঁজে পাবেন। সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement