২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

যুবসমাজের শ্রম ও মেধায় গড়ে উঠতে পারে স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ : বিচারপতি আব্দুর রউফ

-

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’ কাল অতিক্রম করছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার বিশাল অংশটিই বর্তমানে কর্মক্ষম যুবসমাজ। মানবসম্পদে পরিণত করা গেলে তাদের শ্রম ও মেধায় গড়ে উঠতে পারে স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ।

তিনি আজ বুধবার বিকেলে আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে যুব উন্নয়ন সংসদ ঢাকার উদ্যোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জুম প্লাটফর্মে “সামাজিক অবক্ষয় ও আজকের যুব সমাজ” শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ এর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব মোহাম্মদ আবদুল মজিদ। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের প্রফেসর ড. যোবায়ের ইহসানুল হক। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদের সাবেক ডিন ও মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. চৌধুরী মাহমুদ হাসান, বাদশাহ্ ফয়সল ইনস্টিটিউট অধ্যক্ষ লে. কর্নেল এ কে এম মাকসুদুল হক পিএসসি (অব.), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এর সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাবেক সহঃ সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সাইফুর রহমান প্রমুখ। সেমিনার সঞ্চালনা করেন যুব উন্নয়ন সংসদ ঢাকার চিফ কো-অর্ডিনেটর মুহাম্মদ কামাল হোসাইন।

সভাপতির বক্তব্যে বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, ‘যুব’ বয়সের ব্যাপ্তি ১৫ থেকে ২৪ বছর। কিন্তু জাতীয় যুব নীতি অনুযায়ী বাংলাদেশে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের যুব হিসেবে গণ্য করা হয়। সেদিক থেকে বাংলাদেশ বর্তমানে ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’ কাল অতিক্রম করছে। অর্থাৎ বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার বিশাল অংশটিই বর্তমানে কর্মক্ষম যুবসমাজ। মানবসম্পদে পরিণত করা গেলে যাদের শ্রম ও মেধায় গড়ে উঠতে পারে স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ। আর যদি এই ডিভিডেন্ডকালে সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা না যায় তাহলে কয়েক দশক পর এ জনগোষ্ঠীই দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।’

তিনি বলেন, তরুণ-যুবকরা যেকোনো দেশের জন্যই মূল্যবান সম্পদ। জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি তাদের ওপরই নির্ভরশীল। জনশক্তি বা মানবসম্পদের মধ্যে সবচেয়ে উদ্যমী, সৃজনশীল, কর্মঠ, সক্রিয় ও মূল্যবান হিসেবে দেখা হয় যুব সম্পদকেই। কিন্তু তাদের মানবসম্পদে রূপান্তরে প্রয়োজন সঠিক ও মানসম্পন্ন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সুযোগ, স্বাস্থ্য ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যোগ্যতা অনুযায়ী পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান এবং অর্থনৈতিক ও সৃজনশীল কর্মোদ্যোগে উৎসাহিত করা। সবচেয়ে বেশি দরকার পর্যাপ্ত ক্ষমতায়নের মাধ্যমে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে তাদের সক্রিয় ভূমিকা পালনে সক্ষম করে গড়ে তোলা। এসব বাস্তবায়নে স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা প্রক্রিয়ায় যুবকদের সম্পৃক্ততা জরুরি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও পরবর্তী ইতিহাসের প্রতিটি অর্জনেই রয়েছে তরুণদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ৫২’-এর ভাষা আন্দোলন, ৬৯’-এর গণ অভ্যুত্থান, ৭১’-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ৯০’-এর গণ আন্দোলন, বর্তমান সময়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনসহ এখন পর্যন্ত গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার আদায়ের আন্দোলনে তরুণদের ভূমিকাই অগ্রণী। তরুণরাই ক্রীড়াঙ্গন, পর্বতশৃঙ্গ আরোহণ, বিজ্ঞান-প্রযুক্তির উদ্ভাবনের মতো আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জিং ক্ষেত্রে নেতৃত্ব প্রদান করে বাংলাদেশের জন্য গৌরব বয়ে আনছেন। সাম্প্রতিক বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগেও তরুণরাই জীবন বাজি রেখে অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে। মরণঘাতী কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবকালেও তরুণরা অসহায়, অসুস্থ মানুষের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করেছে। এ সময় কর্মহীনদের ত্রাণ ও খাদ্যসহায়তা, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা,  লাশ দাফনসহ সাহসী সব কাজেই ছিলেন এই যুবক-তরুণরা।

প্রবন্ধ উপস্থাপক প্রফেসর ড. যোবায়ের ইহসানুল হক বলেন, হাজার হাজার বছর ধরে মানুষের সমাজগুলো কোন না কোন ধর্ম দ্বারা প্রভাবিত। তাই সমাজে প্রচলিত বা সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য বিষয়গুলো অনেকক্ষেত্রে ধর্মাশ্রয়ী। সামাজিক ও সামাজিকতার মত আরেকগুচ্ছ পরিভাষা হল নৈতিক ও নৈতিকতা, যার অর্থ হল নীতিসংক্রান্ত, নীতির সাথে সম্পর্কিত, ন্যায়-অন্যায়, কর্তব্য- অকর্তব্য বিচার ইত্যাদি। অর্থাৎ নীতি ও নৈতিকতার তুলনায় দ্যোতনার বিচারে সামাজিক ও সামাজিকতা প্রশস্ততর। কিন্তু দু’টো শব্দেই যখন নেতিবাচকতা আরোপ করা হয় তখন অর্থের পার্থক্যের সীমারেখা বহাল রেখেও নেতিবাচকতায় প্রায় সমান্তরাল অবস্থানে পৌঁছে যায়। তাই অসামাজিক ক্রিয়াকলাপ ও অনৈতিক কর্মকা- সমানভাবে ঘৃণিত, পরিতাজ্য ও অগ্রহণযোগ্য।

উল্লেখ্য, আজ ১২ আগষ্ট, ‘আন্তর্জাতিক যুব দিবস’। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুব সংগঠন সহ দেশ বিদেশের নানা প্রান্তে যথাযথ মূল্যায়নের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে দিবসটি। তারুণ্যের বিকাশ ও উন্নয়নে ১৯৯৮ সালে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে অনুষ্ঠিত জাতিসঙ্ঘের ‘ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অব মিনিস্টার রেসপনসিবল ফর ইয়ুথ’ ১২ আগস্টকে ‘আন্তর্জাতিক যুব দিবস’ হিসেবে উদ্যাপনের প্রস্তাব করে। পরের বছর ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক যুব দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিনটি পালন করা হচ্ছে। সেই ধারাবাহিকতায় দিবসটি উপলক্ষে যুব উন্নয়ন সংসদ ঢাকা জুম প্লাটফর্মের মাধ্যমে আজ এই ভার্চুয়াল সেমিনারের আয়োজন করে। বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement
মণিপুরে আরো ১০ হাজার জওয়ান পাঠাচ্ছে ভারত সরকার এক-তৃতীয়াংশ ইহুদি-আমেরিকান কিশোর হামাসের প্রতি 'সহানুভূতিসম্পন্ন' সব সংস্কার শেষে নির্বাচনের পক্ষে ৬৫.৯ ভাগ মানুষ সোনার দেশ- এটিই হবে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ জুলাই বিপ্লবে আহত বাবুকে নেয়া হচ্ছে থাইল্যান্ড সৈন্যের বিনিময়ে উত্তর কোরিয়াকে ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে রাশিয়া! প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে বাংলাদেশ বছরে ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের দাবি বাংলাদেশ অরবিসের সাথে কাজ করতে আগ্রহী : অধ্যাপক ইউনূস ঢাবি সিন্ডিকেটে এখনো বহাল আওয়ামীপন্থী শিক্ষকরা হাসিনা বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করতে দিগন্ত টেলিভিশনসহ অসংখ্য গণমাধ্যম বন্ধ করেছে : ফখরুল

সকল