কটিয়াদীতে ঐতিহ্যবাহী কুড়িখাই মেলা শুরু
- কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২১:০৪
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে শুরু হয়েছে ৪০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী কুড়িখাই মেলা। সোমবার শাহ শামসুদ্দিন বুখারির (রহ:) মাজারের ওরসকে ঘিরে আয়োজন করা হয় এ মেলার। ধর্মীয় উৎসব হলেও এতে অংশ নেন সর্বস্তরের মানুষজন। মেলার অন্যতম আকর্ষণ হলো মাছের হাট। মাছ ছাড়াও সাতদিন জুড়ে বেচাকেনা হয় কাঠের আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী।
সব মিলিয়ে কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হয় এ মেলায়। তবে মেলার বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে, শেষ দুদিনের বউ মেলা। ওই দুদিন এলাকার নারীরা মেলায় গিয়ে কেনাকাটা ও আমোদ-প্রমোদ করেন। মেলাকে ঘিরে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি শুরু হয়েছে পিঠাপুলি উৎসব। গ্রামের জামাইদের দেয়া হচ্ছে দাওয়াত। করা হচ্ছে আদর-আপ্যায়ন। সেই সঙ্গে নাইওর আসছে গ্রামের মেয়েরাও। সাত দিনের মেলার প্রথম দিন থেকেই নেমেছে মানুষের ঢল।
জানা গেছে, কটিয়াদী জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন মেলায় আসছে। মেলা ও ওরস ঘিরে এমন বিচিত্র মেলা ও উৎসব সাধারণত দেখা যায় না। তবে মেলায় মাছের হাটে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বড় বড় মাছ ওঠে। এসব মাছ চড়া দামে বিক্রিও হচ্ছে। স্থানীয়দের বিশ্বাস, এ মেলার বোয়াল মাছ খেলে এ বছরের জন্য বিপদ-আপদ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। তাই সামর্থ যেমনই হোক একটা বোয়াল মাছ কেনার ইচ্ছা সবারই থাকে। তবে শুধু বোয়াল নয়, সব ধরনের বড় মাছই মেলাতে পাওয়া যায়। মূলত দাওয়াতি জামাইরাই এসব মাছের মূলক্রেতা। তারা শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের খুশি করতে বড় মাছ কিনে নিয়ে যান।
কুড়িখাই গ্রামের এক থেকে দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন দোকানপাট বসেছে। বিশেষ করে কাঠের আসবাবপত্র, শিশুদের খেলনা, দৈনন্দিন পণ্যসামগ্রী, মেয়েদের সাজগোজের জিনিসপত্র। রয়েছে নানান স্বাদের খাবারের দোকান। মুড়ি, মিষ্টি, খৈ, জিলাপি, মোয়া। কী নেই সেখানে! এসবই দরদাম করে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। মেলাতে শিশুদের জন্যও রাখা হয়েছে পুতুলনাচ, সার্কাস, মোটরসাইকেল রেস নাগরদোলাসহ আরো নানা আয়োজন। এ সব দেখে শিশুদের পাশাপাশি বড়রাও আনন্দ পাচ্ছেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে এ মেলা।
মেলা কমিটির সদস্য শাহ তরিকুল ইসলাম তপু জানান, মাজার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান। মেলার দোকান বরাদ্দ থেকে যে আয় হয় তা ব্যয় করা হয় মাজার ও স্থানীয় মসজিদের উন্নয়ন কাজে।
কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এম. এ জলিল জানান, মেলার সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
কুড়িখাই মেলা কমিটির সভাপতি উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোছা. আকতারুন নেছা জানান, প্রায় চারশ বছর ধরে কুড়িখাই মেলাটি হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ মেলা এখন সর্বজনীন উৎসব ও ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে।
কথিত রয়েছে, শাহ শামসুদ্দিন বুখারি (রহ:) তিনজন সঙ্গী নিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী উজেলার মুমুরদিয়া ইউনিয়নের কুড়িখাই এলাকায় ইসলামধর্ম প্রচার শুরু করেন। তিনিই এ অঞ্চলে ইসলাম ধর্মের প্রথম প্রচারক। তার মৃত্যুর পর ভক্তরা মাজারকে ঘিরেই কুড়িখাই মেলার প্রবর্তন করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা