২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

স্বামী-স্ত্রীর একসাথে কাজ করা কতটুকু মজার?

জেমস স্যাভিল ও তার স্ত্রী লরা গোল্ড -

এবারের অর্থনীতিতে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী তিনজনের মধ্যে দু'জনই একে অন্যের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ। সুতরাং আপনি যার জীবনের অংশীদার তার সাথে কাজের অংশীদারিত্বটা কেমন?

যুক্তরাজ্যের সাউদাম্পটনের ৩৪ বছর বয়সী শ্যন ও'ল্যারি তার স্ত্রী ক্লেয়ারের সাথে কাজ করাটা পছন্দই করেন।

তবে এর একটি নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে- বলছিলেন ও'ল্যারি, "আমরা দু'জনেই নেতৃত্ব দেয়ার ব্যাপারে খুব শক্তিশালী চরিত্র, আর এটি অনেকসময় হয়ে দাঁড়ায় ক্ষমতার লড়াই।"

৩৩ বছর বয়সী ক্লেয়ার ২০১৮ সালে শ্যনের প্লাম্বিং ব্যবসার অংশীদার হন এবং এখন ব্যবসার বিপণন এবং হিসেব দেখাশুনা করেন।

শ্যন বলছেন, তিনি এমন কারো সাথে করতে পছন্দ করেন যাকে তিনি পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারেন। আর ক্লেয়ার বলছেন, তিনি ব্যবসায় এমন দক্ষতা এনেছেন যা শ্যনের অভাব ছিল। আর এটিকে লাভজনক করে তুলতেও সহায়তা করেছেন।

অবশ্য খুব চাপের কর্পোরেট চাকরি ছেড়ে শ্যনের ব্যবসায় এসে নিজের পরিবারকে আরো সময় দিতে পারছেন বলে বিষয়টি সব অর্থেই লাভজনক হয়েছে বলে মনে করেন ক্লেয়ার।

যাই হোক, পরিচালনার ক্ষেত্রে দু'জনের বিপরীত পদ্ধতির কারণে অফিসেও কয়েকবার 'উত্তপ্ত অবস্থার' সৃষ্টিও হয়েছিল। যদিও কর্মীদের সামনে কখনও তা নয়।

ক্লেয়ার বলেন, বাস্তববাদী হয়েও শ্যনের অতি নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা অনেক সময়ই বিরক্তি তৈরি করতো। তবে তিনি কখনো কখনো নিজে থেকেই পিছু হটে শ্যনকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতেন।

এসথার ডুফলো এবং অভিজিৎ ব্যানার্জী তাদের সহকর্মী মাইকেল ক্রেমারের সাথে অর্থনীতিতে নোবেল জিতেছেন। ডুফলা-অভিজিতের বিয়ে হয় ২০১৫ সালে।

যুক্তরাজ্যে প্রায় ১৪ লাখ দম্পতি একসাথে ব্যবসা পরিচালনা করছেন, সফটওয়্যার সংস্থা ফ্রি এজেন্টের এক সমীক্ষায় পাওয়া গেছে এমন তথ্য।

এটিও অবাক হওয়ার মতো নয় যে, অনেক জুটিই মনে করেন একসাথে কাজ করতে গেলে নানাবিধ দ্বন্দ্ব তাদের কর্মজীবনে প্রভাব ফেলবে, তাদের মধ্যকার সম্পর্কও নষ্ট হবে।

তবে ৪২ বছরের জেমস স্যাভিল তার স্ত্রী লরা গোল্ডসহ আরো দু'জন অংশীদারের সাথে যোগাযোগ সংস্থা গোল্ডব্যাগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বেশিরভাগ সমস্যারই মোকাবিলা করতে পেরেছেন।

"একসাথে কাজ করার অনেক বাধা রয়েছে, তবে আমরা শিখেছি আমাদের কাজ ও সম্পর্ককে পৃথক করতে," বলছিলেন স্যাভিল। "আপনাকে বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে পারষ্পারিক শ্রদ্ধা একটি বড় বিষয়। আমাকেও বুঝতে হবে যে আমার স্ত্রী কিছু কাজ আমার চেয়েও ভালো করতে পারে। আর সে তা করেছেও।"

"অধিকাংশ মানুষই তাদের কাছের মানুষের সাথে কাজের সময় চিৎকার করে। তবে আমাদের মধ্যে এট হয়েছে সমস্যা সমাধানের অংশ। সুতরাং এর সুবিধা ও অসুবিধা উভয়ই রয়েছে।"

একটি দাতব্য সংস্থা ক্লিনিকার প্র্যাকটিসের প্রধান আমান্ডা মেজর বলেন, "অনেক দম্পতির সফলভাবে একসাথে কাজ করার সাথে সাথে কিছু বিষয় তীব্র হয়ে উঠতে পারে। তবে তাদের নিজেদের কাজের জায়গাগুলো স্পষ্ট করতে হবে এবং নিজেদের সক্ষমতার ওপর ভিত্তি করে দায়িত্বের ক্ষেত্রগুলিতে সম্মতি জানাতে হবে।"

এসব দম্পতিদের সহকর্মীদের সামনে একে অন্যকে নিয়ে উপহাস করা এড়ানো উচিত। এড়িয়ে চলা উচিত গৃহস্থালি বিষয় নিয়ে বিতর্ক এবং উচিত পক্ষপাতিত্ব প্রদর্শন থেকে বিরত থাকা।

"প্রতি সপ্তাহেই কিছু সময় নিজেদের মতো করে কাটানো উচিত। কিছু চমৎকার সময় কাটানো দরকার অফিসের বিভিন্ন বিষয়ের বাইরে," বলছিলেন মিজ আমান্ডা।

- বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement