২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

হিমালয়ের ঘাতক পবর্ত নিয়ে ভয়ানক তথ্য

হিমালয়ের ঘাতক পবর্ত নিয়ে ভয়ানক তথ্য
হিমালয়ের ঘাতক পবর্ত নিয়ে ভয়ানক তথ্য - ছবি : সংগৃহীত

হিমালয়ের এভারেস্টের কাছে হিমবাহ অতি দ্রুত গলতে শুরু করায় বেরিয়ে আসছে বহু অভিযানকারীর লাশ। পবর্তারোহীদের জন্যে অন্যতম আকর্ষণীয় একটি স্থান এই হিমালয়- কিন্তু এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এভারেস্টে পৌঁছানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে ক্রমশই। সুতরাং কতটা মারাত্মক এই এভারেস্ট এবং হিমালয়ের অন্য শৃঙ্গগুলোর সাথে তুলনায় কী পাওয়া যায়?

এভারেস্টে মৃত্যু
রেকর্ড বলছে এই পর্বতশৃঙ্গ জয় করতে গিয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন মাত্র ২৮০ জন। যদিও এই মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে, তবে মৃত্যুর হার- অর্থাৎ যারা বেস ক্যাম্পের ওপরে আরোহণের সময়ে মারা গেছেন তাদের অনুপাত ১%।

২০১০ সাল পর্যন্ত, এভারেস্টে মৃত্যুর সংখ্যা ৭২জন এবং ৭৯৫৪ জন বেস ক্যাম্পের ওপরে আরোহণ করেছেন। বেশিরভাগ মৃত্যু ঘটেছে তুষার ধস বা পতনের কারণে, আর এসব কারণ লাশ উদ্ধারেও বাধা সৃষ্টি করে বলে জানানো হয়।

এছাড়া পর্বত আরোহণ সংক্রান্ত শারীরিক সমস্যার কারণেও পর্বতারোহীরা মারা যেতে পারেন। যাকে অ্যাকিউট মাউন্টেন সিকনেস বলা হয়, যার লক্ষণের মধ্যে রয়েছে মাথা ঘোরা, বমি এবং মাথা ব্যথা।

অ্যালান আরনেট, একজন পেশাদার পর্বতারোহী। তিনি এভারেস্ট এবং কেটু (K2) বা মাউন্ট গুডউইন-অস্টিন এ আরোহণের তুলনা করেছেন। ঝুঁকিগুলো স্পষ্ট হলেও তিনি মনে করেন যে এভারেস্ট শৃঙ্গে আরোহণ হিমালয়ের অন্যান্য অংশের তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ।

এভারেস্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এই ক্ষেত্রে মূলত ভালোভাবে ব্যবহৃত রুট মেনে চললেই হয়। সেই পথে প্রচুর অবকাঠামো রয়েছে, আছে চা ঘর, আরও রয়েছে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে উদ্ধারের সুবিধা। পাকিস্তানে এমন কিছু পর্বত রয়েছে যেখানে আপনি সামরিক হেলিকপ্টারের ওপরও নির্ভর করতে পারবেন।

ঘাতক পর্বত
পাকিস্তানে সম্প্রতি দুটি মৃত্যুতে পর্বত আরোহণের এই ঝুঁকি আরও বেশি আলোচনায় উঠে এসেছে। ব্রিটিশ পর্বতারোহী টম ব্যালার্ড এবং তার ইটালীয় সঙ্গী ড্যানিয়েল নর্দি হিমালয়ের একটি শৃঙ্গ 'নাঙ্গা পর্বতে' ওঠার চেষ্টা চালানোর সময় মারা যান। এই শৃঙ্গটি 'ঘাতক পর্বত' নামে কথিত।

টম-এর মা, অ্যালিসন হারগ্রেভস মারা যান এর আগে কেটু (K2) আরোহণের সময়ে, যেটিকে পৃথিবীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শিখর হিসেবে বিবেচনা করা হয়, আর এ ঘটনাও ঘটেছে পাকিস্তানে।

পৃথিবীতে ৮ হাজার মিটার বা ২৬,০০০ ফিট উচ্চতার পর্বত শৃঙ্গের সংখ্যা মোট ১৪টি। তার মধ্যে 'নাঙ্গা পর্বত' এবং 'কে টু'-কে সবচেয়ে কঠিন 'আট হাজারি' পর্বত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

পাকিস্তানে পর্বত আরোহণের সফল প্রচেষ্টা ও মৃত্যুবরণের পরিসংখ্যান সহজে পাওয়া যায় না। তবে, আরনেট এবং অন্যান্য পর্বতারোহীরা হিসেব করে দেখিয়েছেন, নাঙ্গা পর্বত শিখরে ৩৩৯টি সফল অভিযান করা সম্ভব হয়েছে এবং মারা গেছেন ৬৯ জন।

হিসেবে, প্রতি পাঁচটি সফল অভিযানের বিপরীতে মৃত্যু ঘটেছে একজনের। কেটু, পার্শ্ববর্তী কারাকোরাম পর্বতমালারও কিছু অংশ, যেটি কিনা সবচেয়ে বিপদজনকগুলোর একটি, সেই শৃঙ্গে পৌঁছাতে ৩৫৫টি সফল অভিযান সম্পন্ন হয়েছে। আর মৃত্যু ঘটেছে ৮২ জনের।

হিমালয় জুড়ে কী ঘটে
বেশিরভাগ হিমালয় অভিযান অবশ্য পাকিস্তান থেকে করা হয় না। শৃঙ্গগুলোতে অভিযান চালানো হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে নেপাল অংশ থেকে এবং সে অংশেই এ সংক্রান্ত পরিসংখ্যান অনেক বিস্তারিত সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। আর এ কাজে বিশেষভাবে ধন্যবাদ পাবার অধিকার রাখেন সাংবাদিক এলিজাবেথ হাওলি।

তার হিমালয় ডাটাবেজে এভারেস্টসহ এই অঞ্চলের ৪৫০টির বেশি শৃঙ্গে আরোহণের সফল বা ব্যর্থ অভিযানের রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়েছে।

এই হিমালয় ডাটাবেজে কেবলমাত্র সফল অভিযানের হিসেবই রাখেনি। একইসাথে যারা বেস ক্যাম্প অতিক্রম করতে পারেননি তাদের কাছ থেকেও পর্বতের ভয়াবহতার নানা তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। যে ব্যাপারগুলো পাকিস্তান অংশে করা হয়নি।

১৯৫০ সাল থেকে বিগত এক দশকে মৃত্যুর হার ৩% থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ০.৯% এ। এটি এই অঞ্চলে বেস-ক্যাম্পের ওপরে যারা উঠেছেন তাদের বিবেচনায় নিয়ে।


আর নেপালের পেশাদার পর্বতারোহী যারা সহযোগী হিসেবে কাজ করেন- শেরপা নামে পরিচিত, তাদের মারা যাবার হারও ১.৩% থেকে কমে হয়েছে ০.৮%।

২০১০ সাল পর্যন্ত হিমালয় ডাটাবেজের রেকর্ডে দেখা যায়, বেস ক্যাম্প ছাড়িয়ে উঠেছেন এমন আরোহণকারীদের মধ্যে মৃত্যু ঘটেছে ১৮৩ জনের। এই সময়ের মধ্যে ২১,০০০ জন এই পর্বতমালায় অভিযান চালিয়েছেন।

২০১০ সালের পর, ইয়ালুং কাং শৃঙ্গে ওঠার সময় তিনজনের মৃত্যু ঘটে।

এই চূড়ান্ত পর্বতারোহণের সামগ্রিক সংখ্যাটি ছোট। তবে যেটি দেখা যায় যেসব শৃঙ্গে আরোহণের সংখ্যা কম সেগুলো হয়তো সবচেয়ে প্রাণঘাতী।


আরো সংবাদ



premium cement
আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন গাজীপুরে বাসে বিদ্যুতায়িত হয়ে নিহত মাহিন বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি চলতি সপ্তাহে হবে ৪৭তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি! ববিতে ‘সোচ্চার স্টুডেন্টস নেটওয়ার্ক’ এর যাত্রা শুরু মতামত গ্রহণে ওয়েবসাইট চালু করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন কপ-২৯ সম্মেলনে ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র ও এলডিসি’র ‘ওয়াকআউট’ আলোচনায় 'না' ভোট এবং 'ভোট রিকল' হাসানের জোড়া উইকেটের পরও ৩০০ পার করলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ খাসিয়াদের বর্ষবিদায় উৎসব ‘খাসি সেং কুটস্নেম’ অনুষ্ঠিত শিক্ষার্থীদের বিতর্কিত করে অভ্যুত্থান ব্যর্থ প্রমাণের অপচেষ্টা চলছে : উপদেষ্টা নাহিদ ফরিদপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শামীম তালুকদার গ্রেফতার

সকল