অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে দুরে থাকার কৌশল জানুন
- বিবিসি
- ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৩৬, আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ১০:৪২
বর্তমান ব্যস্ত সময়ে অনেকে ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করেন। আর শিশুদের খাদ্য তালিকায় তো এখন বেশিরভাগই থাকে এই জাতীয় খাবার। তাদের এই খাদ্যাভাস দুর করতে হলে প্রথমে অভিভাবকদের এই সব অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে হবে। তবে তা কীভাবে?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, চারটি উপায় মেনে চললে আপনার মন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে উৎসাহী হবে।
ইয়েল ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক নিজেদের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখেছেন, অতি সাধারণ কয়েকটা কৌশল গ্রহণের মাধ্যমে মানুষ তার অস্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের প্রবণতাকে অনেকাংশেই কমিয়ে আনতে পারে।
গবেষকরা মনে করছেন, কোন খাবার নিয়ে আমরা যেভাবে ভাবি, সেই ভাবনাটাই খাদ্যাভ্যাসের ইতিবাচক বদল ঘটাতে পারে এবং মেদ কমাতে সহায়ক হতে পারে।
গবেষকরা নিচের এই চারটি কৌশলের কথা বলেছেন।
১. অস্বাস্থ্যকর খাবার নিয়ে নেতিবাচক ভাবুন :
গবেষকেরা একদল মানুষকে খাদ্য গ্রহণের আগে সেই খাবার সম্পর্কে মাত্র ছয় সেকেন্ড নেতিবাচক ভাবনা ভাবতে বলেছেন।
এই ছয় সেকেন্ডের মধ্যে ভাবনাটা যে কোনো বিষয়েই হতে পারে। যেমন: খাবারটা কতটা অস্বাস্থ্যকর, খাবারের স্বাদটা কেমন, দেখতে কেমন ইত্যাদি।
মাত্র কয়েক সেকেন্ডের এই ভাবনার ফলে, মানুষের মধ্যে খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে আগ্রহ অন্তত ২০ শতাংশ কমে যায়।
খাদ্য গ্রহণের ক্ষেত্রে নিজের আগ্রহকে নিয়ন্ত্রণ করাটা অত্যন্ত জরুরি। এর মাধ্যমেই খাদ্যাভ্যাস পাল্টানো ও অতিরিক্ত ওজন কমানো সম্ভব।
২. স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে ভাবুন :
অস্বাস্থ্যকর খাবার নিয়ে মাত্র ছয় সেকেন্ড যেভাবে ভাবার কথা বলা হয়েছিল, তেমনি একই পরিমাণ সময় ধরে স্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কেও ভাবতে বলা হয়েছে।
এক্ষেত্রেও দারুণ ফল পাওয়া গেছে। অন্তত ১৪ শতাংশ মানুষের খাবারে আগ্রহ বেড়েছে বলে জানিয়েছে।
৩. অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়াতে মনকে প্রশিক্ষণ দিন :
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এটিও জানার চেষ্টা করেছেন যে, অস্বাস্থ্যকর খাবার না গ্রহণ করার বিষয়ে নিজের মস্তিষ্ককে আগে থেকেই কোনো প্রশিক্ষণ দেয়া যায় কিনা।
গবেষকেরা বলছেন, অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে কত ধরণের নেতিবাচক প্রভাব পরে এই নিয়ে ১৫ মিনিট ধরে চিন্তা করতে হবে।
চিন্তা করা পর তাদের স্বাস্থ্যকর ও অস্বাস্থ্যকরের মধ্যে যে কোন একটি খাবার বাছাই করার সুযোগ দেয়া হয়।
এক্ষেত্রে দেখা যায় অন্তত ৭.৬ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবারটাই বাছাই করেছে।
৪. স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে মনকে প্রশিক্ষণ দিন :
গবেষকেরা আবারো আগের মতই একদল মানুষকে স্বাস্থ্যকর খাবারের বিষয়ে ছবি দেখান, এ বিষয়ে কিছু পড়তে দেন।
স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণের ফলে কী কী সুবিধে পাওয়া যাবে এই নিয়ে আলোচনা করেন।
এরপর যখন ওই গ্রুপের মানুষদেরকে খাবার বাছাই করার স্বাধীনতা দেয়া হয় তখন অন্তত ৫.৪ ভাগ মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার পছন্দ করেছে।
'ছোট্ট পরিবর্তনও অনেক গুরুত্বপূর্ণ'
পার্থক্যটা যত সামান্যই হোক এর একটি বড় প্রভাব থাকে।
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণায় যারা অংশ নিয়েছিলেন, প্রশিক্ষণের পর যখন তারা খাবার বাছাই করেছে দেখা গেছে গড়-পড়তায় তারা অন্তত ১০৭ ক্যালরি কম গ্রহণ করেছেন।
১০৭ ক্যালরি খরচ করতে হলে সাধারণত কাউকে অন্তত ১০ মিনিট দৌড়াতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়টির সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক এবং এই গবেষণার অন্যতম গবেষক হেডি কোবার বলেছেন, "স্বল্প সময়ের একটা সামান্য প্রশিক্ষণেরও গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রয়েছে। এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে এটা স্থূলতার চিকিৎসার সমতুল্য।"
"যারা ডায়েট করে, দেখা যায় ডায়েটের মাধ্যমে কমানো সেই ওজন তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে পুনরায় ফিরে আসে।"
তাই, অল্প-স্বল্প করে হলেও নিত্য দিনের খাবারে ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কমানোর কৌশলটা অত্যন্ত কার্যকরী কৌশল হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে বলে গবেষকরা মনে করছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা