স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বাঁচাবে পরিবেশ, বাঁচবে পৃথিবী
- বিবিসি বাংলা
- ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১০:১৩, আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১০:২৩
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, শরীরের গঠন অনুপাতে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে একজন মানুষের 'ওয়াটার ফুটপ্রিন্ট' সর্বোচ্চ ৫৫% পর্যন্ত কম হতে পারে বলা হয় ঐ গবেষণায়। ইতালি, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যের মানুষের খাদ্যাভ্যাসের ওপর ভিত্তি করে করা হয়েছে এই গবেষণা।
একদিনে একজন মানুষের মোট ব্যবহৃত পানি ও তার জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সবধরনের পণ্য ও সেবা উৎপাদনে যে পরিমাণ পানি ব্যবহৃত হয় তার যোগফলকে সাধারণত ঐ ব্যক্তির 'ওয়াটার ফুটপ্রিন্ট' হিসেবে প্রকাশ করা হয়। শুধু খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমেই ওয়াটার ফুটপ্রিন্ট অনেকাংশে কমিয়ে আনা যায়।
গবেষকরা বলছেন স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ব্যক্তিকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি খাদ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত পানির পরিমাণ কমানোর পেছনেও ভূমিকা রাখে।
ইউরোপিয়ান কমিশনের জয়েন্ট রিসার্চ সেন্টারের গবেষক ডেভি ভ্যানহাম বলেন, ‘মূল বার্তাটি হচ্ছে, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হলে শুধু যে আপনি সুস্থ থাকবেন তা'ই নয়, তখন আপনার প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদনে গড়ে আগের চেয়ে কম পানি প্রয়োজন হওয়ার কারণে আপনার ওয়াটার ফুটপ্রিন্টও কমে যাবে।’
গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য
যুক্তরাজ্যে মানুষের খাদ্য গ্রহণের (দেশে উৎপাদিত ও রপ্তানিকৃত) বিপরীতে ওয়াটার ফুটপ্রিন্টের পরিমাণ জনপ্রতি দিনে ২,৭৫৭ লিটার। জার্মানিতে যা ২,৯২৯ লিটার ও ফ্রান্সে ৩,৮৬১ লিটার।
মাংস ও সব ধরণের খাদ্য উপাদান সহ নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের ফলে খাবার উৎপাদনে পানির ব্যবহার ১১-৩৫% পর্যন্ত কমানো যেতে পারে।
খাদ্য তালিকায় মাংস বাদ দিয়ে মাছ ও তেলবীজ জাতীয় খাদ্যকে প্রাধান্য দিয়ে খাদ্য তালিকা তৈরি করলে পানি ব্যবহারের মাত্রা ৩৩-৩৫% পর্যন্ত কমানো যেতে পারে।
স্বাস্থ্যকর নিরামিষাশী আহারের ফলে পানি ব্যবহারের হার ৩৫-৫৫% পর্যন্ত কমানো যেতে পারে।
পৃথিবীতে সুপেয় পানির উৎস দিনদিন কমে আসছে।
আর দ্রুতবেগে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জীবনধারার পরিবর্তন ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন কীভাবে পানি বাঁচাবে?
পানি ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার জন্য পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই নানা ধরণের প্রচারণা চালানো হয়।
কিন্তু খাদ্য উৎপাদনে কি পরিমাণ পানি ব্যবহৃত হয় সেবিষয়ে যথেষ্ট পরিমাণ সচেতনতা তৈরি হয়নি মানুষের মধ্যে।
পশুপালনে বিপুল পরিমাণ পানি প্রয়োজন হয়।
তেল, চিনি ও চর্বিজাতীয় খাবার উৎপাদনেও অনেক পানি প্রয়োজন হয়; কিন্তু ফলমূল ও শাকসবজি উৎপাদনে পানি ব্যবহৃত হয় অপেক্ষাকৃত কম।
মানুষের বর্তমান খাদ্যাভ্যাস ও গবেষকদের সুপারিশকৃত খাদ্যাভ্যাসে সাপেক্ষে খাদ্য উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট পানি ব্যবহারের মাত্রার তারতম্য পর্যালোচনা করে তৈরি করা হয়েছে গবেষণাটি।
তবে গবেষকরা স্বীকার করেন যে মানুষকে খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনে অনুপ্রাণিত করা মোটেও সহজ কাজ নয়।
মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্য অস্বাস্থ্যকর খাবারে উচ্চমাত্রায় শুল্ক আরোপ সহ সবধরনের খাদ্যের গুণাগুণ সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করার মত নান পদ্ধতি অবলম্বন করা যেতে পারে বলে সুপারিশ করেন গবেষকরা।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস
২০ আগস্ট ২০১৭
সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এজন্য খাবারের পরিকল্পনা করতে হবে এমনভাবে, যাতে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকবে। খাদ্যের এসব উপাদানই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এবার দেখা যাক কী কী খাবারে এসব খাদ্য উপাদান আছে। কম চর্বিযুক্ত দুধ, চর্বিবিহীন দুধ বা দই অথবা দুগ্ধজাত খাবারে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম রয়েছে।
তাজা ফল যেমন- আপেল, কলা অথবা শাকসবজিতে আছে পটাসিয়াম। টমেটোতেও আছে বেশি পটাসিয়াম। বেশি ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায় দানাশস্য বা গোটাশস্যজাতীয় খাবারে, বিচিজাতীয় খাবারে, বাদাম, শিমের বিচি বা মটরশুটি, ডাল, ছোলা, লাল চালের ভাত, লাল আটা, আলুÑ এসব খাবারে। এ ছাড়া সবুজ শাকসবজি, টমেটো, তরমুজ, দুধ ও দইয়েও অনেক ম্যাগনেসিয়াম আছে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ জন্য প্রতিদিন খেতে হবে কম চর্বিযুক্ত দুধ বা চর্বিবিহীন দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার। প্রতিদিন একটি করে আপেল বা আপেলের রস অথবা একটি কলা খেতে হবে। তবে ফলের রসের চেয়ে আস্ত ফলই খাওয়া ভালো। খাবারের সাথে পর্যাপ্ত শাকসবজি অথবা ফলমূল খেতে হবে। দানাশস্য অথবা দানাশস্য থেকে উৎপাদিত খাবার খেতে হবে প্রতিদিন তিন-চার মুঠো।
এ ছাড়া খেতে হবে প্রতিদিন কিছু কিছু বিচিজাতীয় খাবার (রান্না করে অথবা রান্না ছাড়া)। এ ধরনের খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে উচ্চ রক্তচাপ থেকে অনেকটাই নিরাপদে থাকা যায় বলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা