ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতি ও অর্থনীতির ভবিষ্যৎ বিষয়ক সংলাপ
- ঢাবি প্রতিনিধি
- ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২:৩৮

ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোম্যাসির (আইআইএলডি) আয়োজনে ঢাকা ‘ট্রাম্প ২.০: হোয়াট ইট মিনস ফর সাউথ এশিয়া?’ শীর্ষক পলিসি ডায়ালগ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কূটনীতিক, নীতিনির্ধারক, গবেষক এবং ব্যবসায়ীরা অংশগ্রহণ করেন।
মঙ্গলবার (১৮ই ফ্রেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ড. আবদুল্লাহ ফারুক কনফারেন্স হলে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের সম্ভাব্য দ্বিতীয় মেয়াদে দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতা কেমন হতে পারে, সে বিষয়ে মতবিনিময় করেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তনের ফলে এ অঞ্চলে কি ধরনের চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ তৈরি হতে পারে, তা বিশদভাবে আলোচনা করা হয়।
ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোম্যাসির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব ড. মাহফুজুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আতাউর রহমান তালুকদার। আলোচনায় অংশ নেন সাবেক রাষ্ট্রদূত সাকিব আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, আইবিএ'র অধ্যাপক ড. রিদওয়ানুল হক, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র লেকচারার ওমর নাসিফ আবদুল্লাহ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার জাহিদুল ইসলাম মিয়াজি, বানিয়াস হারবারের সিইও সাদমান বিন কবির, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা জয়নুল ইসলাম এবং জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সাকিব সরকার।
সেমিনারে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোম্যাসির নির্বাহী পরিচালক শফিউল আলম শাহীন উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, বৈশ্বিক বিষয়ে অর্থবহ আলোচনা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্ব নেতৃত্বের পরিবর্তনশীল গতিপ্রবাহের মধ্যে টিকে থাকতে হলে আগেভাগেই সুপরিকল্পিত নীতি নির্ধারণ করা জরুরি।
মূল প্রবন্ধে আতাউর রহমান তালুকদার বলেন, ‘ট্রাম্প পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা বাড়তে পারে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশের সংস্কার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতে পারে। পাকিস্তান খুব বেশি লাভবান হবে না। যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে চীনের প্রভাব ঠেকাতে সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে পারে।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তা জয়নুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রাম্প এবং ইলন মাস্কের মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের অনিশ্চিত ভূমিকার কারণে বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক স্বনির্ভরতা অর্জনের পরিকল্পনা করতে হবে।’
উদ্যোক্তা সাদমান বিন কবির বলেন, ‘বাংলাদেশকে ট্রাম্প প্রশাসনের সাথে সরাসরি কূটনৈতিক ও ব্যবসায়িক যোগাযোগ বাড়িয়ে নিতে হবে।’ তিনি পরামর্শ দেন, বাংলাদেশ যদি যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্যযুদ্ধের সুযোগ নিয়ে বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারে, তবে শিল্পখাতে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সম্ভব।
সাকিব আলী বলেন, ‘ট্রাম্প বিশ্ব রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি সীমিত রাখতে চান। তার মেয়াদে যুদ্ধের সম্ভাবনা কম থাকতে পারে, তবে বাণিজ্যনীতির কঠোরতা বাড়বে, যা বিশ্ববাজারে মূল্যস্ফীতির কারণ হতে পারে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, ‘ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতি সুরক্ষাবাদী (protectionist), যা চীনের ওপর কঠোর অবস্থানের কারণে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় প্রভাব ফেলতে পারে। বাংলাদেশের উচিত আমদানি বৈচিত্র্যময় করা এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া।’
সরকারের নীতিনির্ধারকদের প্রতি আকর্ষণ করে আলোচনায় অংশ নেয়া বিশেষজ্ঞরা আরো বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়াকে নতুন বৈশ্বিক বাস্তবতায় খাপ খাইয়ে নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তিত নীতির সঙ্গে সমন্বয় করে কৌশল নির্ধারণ করতে হবে, যাতে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সুযোগ কাজে লাগানো যায় এবং ঝুঁকি কমানো সম্ভব হয়। এ সংলাপ থেকে উঠে আসা সুপারিশগুলো একটি নীতিনির্ধারণী প্রতিবেদনে সংকলিত হবে, যা সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারক, গবেষক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর কাছে পাঠানো হবে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা