জুলাই আন্দোলনে নিহতের সংখ্যা ১৪০০ জন
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:৩৭, আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৬:৪৩
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রায় এক হাজার চার শ’ জন মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) প্রতিবেদনে ওঠে এসেছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে ওএইচসিএইচআর এ তদন্ত পরিচালনা করে।
তদন্ত প্রতিবেদনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার দ্বারা সংগঠিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্বিচারে গ্রেফতার, নির্যাতন এবং অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের মতো নানা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উঠে এসেছে।
সেসব ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাথে যুক্ত বিভিন্ন গোষ্ঠী, সংগঠন এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা জড়িত ছিল বলে প্রতিবেদনটিতে তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘তৎকালীন সরকার এবং তার নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থা, আওয়ামী লীগ, এর সহিংস গোষ্ঠী ও সংগঠনের সাথে একত্রিত হয়ে পরিকল্পিতভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ছিল। যার মধ্যে রয়েছে কয়েক শ’ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, হাজার হাজার বিক্ষোভকারীকে গুরুতরভাবে শারীরিক নিপীড়ন ও বলপ্রয়োগ, ব্যাপক হারে নির্বিচারে গ্রেফতার ও আটক এবং নির্যাতনসহ অন্যান্য ধরনের নিপীড়ন।’
‘ওএইচসিএইচআর যুক্তিসঙ্গত কারণে বিশ্বাস করে, রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং নিরাপত্তা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরিকল্পনা, সমন্বয় এবং নির্দেশনায় এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো ঘটেছিল।’
প্রতিবেদনের আরেকটি অংশে বলা হয়েছে, ‘ওএইচসিএইচআরের অনুমান, বিক্ষোভ চলাকালে প্রায় ১৪০০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই মিলিটারি রাইফেল এবং প্রাণঘাতি মেটাল প্যালেটস লোড করা শটগানে নিহত হয়েছেন। এই ধরনের শটগান সাধারণত বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে থাকে। বিক্ষোভে কয়েক হাজার মানুষ গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন, কেউ কেউ স্থায়ীভাবে আজীবনের জন্য কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন।’
এতে আরো বলা হয়, সে সময় ১১ হাজার সাত শ’জনেরও বেশি মানুষকে গ্রেফতার এবং আটক করা হয়েছিল। আন্দোলনে নিহতদের মধ্যে প্রায় ১২-১৩ শতাংশ ছিল শিশু।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনী শিশুদের টার্গেট করে হত্যা করেছে, ইচ্ছাকৃতভাবে পঙ্গু করেছে, নির্বিচারে গ্রেফতার, অমানবিকভাবে আটক-নির্যাতন এবং অন্যান্য ধরনের নিপীড়ন করেছে।
‘বিশেষ করে, শুরুর দিকে বিক্ষোভের সম্মুখসারিতে থাকা নারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনী এবং আওয়ামী লীগ সমর্থকরা মারাত্মকভাবে আক্রমণ করেছে। নারীরা যৌন ও লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন, যার মধ্যে ছিল লিঙ্গ-ভিত্তিক শারীরিক সহিংসতা ও ধর্ষণের হুমকি। কয়েকটি ডকুমেন্ট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ সমর্থকদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে।’
সূত্র : বিবিসি