‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:৪০, আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৪:৪২
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিদেশী গণমাধ্যমের সাংবাদিক ও ভুক্তভোগীদের নিয়ে ‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন করেছেন।
আজ বুধবার রাজধানীতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাবের হেডকোয়ার্টারে অবস্থিত আয়নাঘরসহ তিনটি স্থান পরিদর্শন করেন।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে গুমের শিকার ব্যক্তিদের এসব স্থানে আটকে রাখা হতো বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
কাউকে কাউকে আট-নয় বছরও আটকে রাখা হয়েছিল বলে নিজের ফেসবুকে লিখেছেন তিনি।
পরে সাংবাদিকদের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা একটা বিভৎস দৃশ্য। মানুষের মনুষ্যত্ববোধ বলে যে কোনো জিনিস আছে সেটার থেকে বহু দূরে গভীরে নিয়ে গেছে। নৃশংস অবস্থা প্রতিটি জিনিস যে হয়েছে এখানে। যতটা শুনি অবিশ্বাস্য লাগে যে এটা কি আমাদেরই দেশ, আমাদেরই জগৎ?’
‘বিনা কারণে জঙ্গি আখ্যায়িত করে মানুষকে তুলে এনে এসব টর্চার সেলে নির্যাতন করা হতো’ বলে উল্লেখ করেছেন অধ্যাপক ইউনূস।
“এখন শুনি সারা বাংলাদেশ জুড়েই আরো সাত শ’-আট শ’ আয়নাঘর আছে। আমার ধারণা ছিল শুধু এখানেই আছে। এগুলার সংখ্যাও নিরূপন করা যায় না, কতটা জানা আছে, কতটা অজানা আছে,” বলেন তিনি।
গুম কমিশনকে এসব আয়নাঘর আবিষ্কার করার জন্য ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত বলে একটা কথা আছে না, গত সরকার এই আইয়ামে জাহেলিয়াতকে প্রতিষ্ঠিত করে গেছে সর্বত্র।’
গুম কমিশনের প্রতিবেদনে এই আয়নাঘরের ডকুমেন্টেশন বাধ্যতামূলক করা হবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস।
একইসাথে যারা এ ধরনের কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিল তাদের বিচার করা হবে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা। এসব তথ্য-প্রমাণ সিলগালা করে রাখা হবে এবং বিচারের জন্য ব্যবহৃত হবে বলেও জানান তিনি।
দু’জন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এবং নাহিদ ইসলাম নিজেরাও এই আয়নাঘরে বন্দি ছিলেন এবং তারা ওই রুম চিহ্নিত করেছেন বলে জানান।
উপস্থিত ভুক্তভোগী কয়েকজনের সাথে কথা বলেছেন বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
শেখ হাসিনার আমলে গুমের শিকার জামায়াতে ইসলামীর নেতা মরহুম গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী এবং দলটির কেন্দ্রীয় নেতা মরহুম মীর কাশেম আলীর ছেলে আহমেদ বিন কাশেম এ সময় তাদের সাথে ছিলেন।
এ সময় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান, উপদেষ্টা মাহফুজ আলমও উপস্থিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম ও গুম কমিশনের সদস্য নুর খানও সেখানে ছিলেন।
সূত্র : বিবিসি