আমিরাতে ক্ষমা পাওয়া সেই প্রবাসীদের আল্টিমেটাম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিক্ষোভ করে সাজা পেয়েছিলেন ৫৭ বাংলাদেশী। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ অনুরোধে তাদের সাজা স্থগিত করে দেশটির সরকার। এরপর দেশে ফিরে আসেন সেই প্রবাসীরা। এখন তারা প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের দাবি জানিয়ে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছেন। না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। নিজেদের ক্ষতিগ্রস্ত দাবি করে এই আল্টিমেটাম দিয়েছেন তারা।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবে প্রবাসীরা হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে মিছিল করে এবং রেমিট্যান্স বন্ধের কর্মসূচি পালন করেন। মিছিলকে কেন্দ্র করে সে দেশে (আমিরাতে) অনেককে গ্রেফতার করা হয় এবং রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় সাজা দেয়া হয়। এ ঘটনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য দেশে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা মিছিলের সাথে সম্পৃক্ত অথবা সম্পৃক্ত নয় কিন্তু স্বৈরাচারী সরকারের সমালোচনাকারী এ রকম অনেকের নামের তালিকা তৎকালীন অ্যাম্বাসেডরের মাধ্যমে সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে জমা দেয়।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তালিকার সূত্র ধরে সে দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আমাদের কাউকে ফোন করে ডেকে নিয়ে আবার কাউকে বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেফতার করে। এরপর দীর্ঘ দিন তাদের হেফাজতে ও পরবর্তীতে জেলে রাখে। জেলে নেয়ার পর উচ্চ আদালতের মাধ্যমে ১০ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে। পরবর্তী সময়ে প্রধান উপদেষ্টার ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় আমরা কয়েক শ’ প্রবাসী মুক্ত হয়ে বাংলাদেশে ফেরত আসতে পেরেছি। এ জন্য আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে কৃতজ্ঞ।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী খালেদ সাইফুল্লাহ, হাফেজ মুহাম্মদ, জাহাঙ্গীর আলম, মাইনুদ্দীন বাবু, মুহাম্মদ পারভেজ প্রমুখ।

তাদের অভিযোগ, কিন্ত কঠিন সময়েও প্রবাসী শ্রমিকদের পাশে সরকার বা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তেমন কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ দেখা যায়নি। এমনকি উপদেষ্টাও সঙ্কট সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। গত ২৮ ডিসেম্বর প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে প্রবাসীদের ৫০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়, কিন্তু তাতে প্রবাসীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এর প্রেক্ষাপটে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ২৯ ডিসেম্বর সাতজন প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানান। সে মোতাবেক তারা উপস্থিত হলেও উপদেষ্টা সাক্ষাৎ করেননি।