ভোরের কাগজ খুলে দেয়ার দাবিতে কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪০
'ভোরের কাগজে’র কার্যালয় খুলে দেয়া, পত্রিকার প্রকাশনা অব্যাহত রাখাসহ বকেয়া পরিশোধের দাবিতে রাজধানীর কাকরাইলে কর্ণফুলী গ্রুপের প্রধান কার্যালয় এইচআর ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সংবাদকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতারাও অংশ নিয়ে ভোরের কাগজের বন্ধ কার্যালয় খুলে দেয়ার দাবি রেখেছেন; না হলে পত্রিকার মালিক সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীকে তার অন্যান্য ব্যবসা বাণিজ্য গুটিয়ে ফেলতে হবে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।
‘ভোরের কাগজ’ কর্ণফুলী গ্রুপের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর মালিবাগে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ে এক নোটিশ টানিয়ে ৩৩ বছরের পুরনো এ সংবাদপত্রটির বন্ধ ঘোষণা করা হয় গত সোমবার।
ওই নোটিসে বলা হয়, “ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ এর ১২ ধারা অনুযায়ী মালিকের নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন যা ২০-০১-২০২৫ ইং তারিখ থেকে কার্যকর হবে।"
পররদিন মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন দাবি মেনে নিতে মালিকপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন। অন্যথায় মালিক পক্ষের অফিস ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই ঘোষণা অনুয়ায়ী দুপুরে এইচআর ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন সংবাদপত্রটির কর্মীরা।
সেখান থেকে প্রতিষ্ঠানের সংবাদকর্মীরা 'ন্যায্য পাওনাসহ' ভোরের কাগজ বন্ধের পেছনের 'ষড়যন্ত্রকারীদের' আইনের আওতায় আনারও দাবি জানিয়েছেন।
এ সময় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, "ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষকে বলতে চাই, অন্যায়তো অনেক করেছেন। গত ১৫ বছর ধরে আপনার যে অন্যায় করছেন, আমরা সেগুলো টেনে আনতে চাই না। জুলাই আন্দোলন বিপ্লবীদের আপনারা সন্ত্রাসী বানানোর চেষ্টা করেছেন। আমরা সেই কথাগুলো ভুলে যেতে চেয়েছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম নতুন বিপ্লবী সরকারের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে আদর্শ গণমাধ্যম হয়ে উঠবেন। কিন্তু আপনারা সাংবাদিকদের পাওনা না বুঝিয়ে দিয়ে অফিস বন্ধ করে দিয়েছেন।"
তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই প্রত্যেকটা গণমাধ্যম থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের সরিয়ে দিন। সেই কাজটি না করে সাবের হোসেন পত্রিকার প্রায় ১ হাজার সংবাদকর্মীর পাওনা না দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন।"
সাবের হোসেন চৌধুরীকে উদ্দেশ করে করে ডিইউজের সভাপতি বলেন, "আপনারা গণভবনে দিয়ে দেখুন। শেখ হাসিনার অন্যায়ের জন্য সেখানকার প্রত্যেকটি ইট মানুষ খুলে নিয়ে গেছে। শুধু এইচআর ভবন নয়, আপনার প্রত্যেকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ইট এদেশের জনগণ খুলে নিয়ে যাবে। আপনারা ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীদের সাথে আলোচনা করে পত্রিকাটি খুলে দিন। তাদের দেনাপাওনা বুঝিয়ে দিন। তা না হলে সামনের দিনে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিবো।"
দৈনিক নয়া দিগন্তের চিফ রিপোর্টার ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেছেন, “এভাবে বিনা নোটিশে একটা পত্রিকা অফিস বন্ধ করা যায় না। আপনারা জানেন দীর্ঘদিন এদেশে একটি ফ্যাসিস্ট সরকার গণমাধ্যমে ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে। সেই নিপীড়ন থেকে আমরা মাত্র বেরিয়ে এসেছি। এখন আমাদের কাজের স্বাধীনতা, লেখার এবং বাকস্বাধীনতার সুযোগ এসেছে। ঠিক সেই মুহূর্তে একজন ফ্যাসিস্ট সাবের হোসেন এভাবে তার পত্রিকাটি বন্ধ করে দিয়েছে। এটা খুবই ন্যাক্কারজনক।"
তিনি বলেন, "আমরা সাবের হোসেন চৌধুরীকে বলতে চাই, আপনি দীর্ঘদিন এই পত্রিকাকে ব্যবহার করে বিভিন্নভাবে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন। সংবাদপত্রের আইন অনুযায়ী পত্রিকার সকলকর্মীদের পাওনা পরিশোধ করে দিন। আর যদি পাওনা পরিশোধ না করেন, তাহলে এখানে আপনার কোনো ব্যবসা-বাণিজ্য চলতে দেয়া হবে না।"
এ সময় ডিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদ খান, সাবেক সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম কাগজী, নির্বাহী সদস্য আব্দুল্লাহ মজুমদার, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক আবু বক্কর মিয়া, ভোরের কাগজের প্রধান প্রতিবেদক খোন্দকার কাওছার হোসেন, সাহিত্য সম্পাদক কবি সালেক নাছির উদ্দিন, যুগ্ম বার্তা সম্পাদক মুকুল শাহরিয়ারসহ সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা