সাদপন্থীদের বিচার দাবিতে ১০ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:৩৬
গাজীপুরের টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে হামলার ঘটনায় সাদপন্থীদের গ্রেফতার, বিচার ও নিষিদ্ধ করার দাবিতে আগামী ১০ জানুয়ারি দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং ২৫ জানুয়ারি দেশের প্রতিনিধিত্বশীল আলেমদের নিয়ে ওলামা সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছে মূলধারার তাবলিগ জামাত বাংলাদেশ শুরায়ে নেজাম অনুসারীরা।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) রাজধানীর কাকরাইল মারকাজ মসজিদে ‘ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ এবং দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দ’ ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শুরায়ে নেজামের পক্ষে মাওলানা নাজমুল হাসান এই ঘোষণা দেন।
‘টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে এর আগেও সাদপন্থীরা হামলা ও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন’ উল্লেখ করে মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী বলেন, ‘দেশের আলেম সমাজ ও দায়িত্বশীলরা সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে গড়িমসি দেখে যারপরনাই হতাশ হয়েছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্বকারীদের মধ্যে প্রথম সারির অপরাধীরা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একবার এমনই অতর্কিত হামলা চালিয়ে সাদপন্থীরা ইজতেমার মাঠে হত্যাকাণ্ডসহ প্রায় পাঁচ হাজার সাথীকে আহত করেছিল। কিন্তু সেই সরকারের প্রশ্রয়ে এত বড় অপরাধ করেও তারা নির্বিঘ্নে ছাড় পেয়ে যায়। আমরা মনে করি, যদি ২০১৮ সালে তাদের সেই হত্যা ও হামলার বিচার হতো, তাহলে ২০২৪-এর ডিসেম্বরে এই ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ড ঘটতো না ‘
এবারো যদি তারা ছাড় পেয়ে যায়, তাহলে ভবিষ্যতে আরো বড় দুর্ঘটনার জন্ম দিতে পারে ‘সাদপন্থীদের সাথে আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ‘অপশক্তির যোগসাজশ’ আছে দাবি করে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নাজমুল হাসান কাসেমী।
তিনি আরো বলেন, ‘সাদপন্থীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া হলে শুধু তাবলিগের কাজই নয়, বাংলাদেশ বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সরকারের কাছে ১৭ ডিসেম্বরে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’
তাবলিগ জামাতের একটি পক্ষ শূরায়ি নেজামের সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত ও খেলাফত মজলিসের নেতাদের উপস্থিতির বিষয়ে এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘এখানে তারা হেফাজতের নেতা হিসেবে নয়, আলেম-ওলামা হিসেবে এসেছেন। তাবলিগ জামাতের কার্যক্রম যদি ইসলাম ধর্মের কাজ হয়ে থাকে, তবে কোরআন ও সুন্নাহর বিষয়ে সিদ্ধান্ত আলেমরাই দেবেন। তাবলিগের দুই পক্ষের সমস্যা সমাধানে আলেমরা মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করেছেন। সরকারও চেষ্টা করছে।’
টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে। হামলা ও হত্যার শাস্তি হওয়া উচিত। তাবলিগের কাজ নিয়ে ভারতের একজন ব্যক্তির বিতর্কিত মন্তব্যে সে দেশে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের এ সমস্যা যেন বাংলাদেশে টেনে আনা না হয়। এখন বাংলাদেশে সবাই মিলেমিশে কাজ করলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তবে যারা হত্যায় জড়িত, তাদের বিচার হতেই হবে। হত্যাকাণ্ডের বিচার বিচারের জায়গায় আর আলোচনা আলোচনার জায়গায়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা খলিল আহমদ কোরাইশী, হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার শায়খুল হাদিস মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক, আল্লামা আব্দুল হামিদ মধুপুরী পীর, কওমি শিক্ষাবোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, জাতীয় দ্বীনি মাদরাসা বোর্ডের মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী, মুফতি কিফায়াতুল্লাহ আজহারী, মাওলানা লোকমান মাজহারী প্রমুখ শীর্ষ আলেমরা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা