৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে আজো উত্তাল সারাদেশ

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিলের দৃশ্য - ছবি : নয়া দিগন্ত

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার বিচার ও উগ্রবাদী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে আজো উত্তাল ছিল সারাদেশ।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা শহরে বিভিন্ন সংগঠন, আলেম সমাজ, সাধারণ মুসল্লি, তৌহিদী জনতার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম:
আলিফ হত্যার বিচার ও ইসকন নিষিদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি হেফাজতের

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার বিচার ও উগ্রবাদী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশে হেফাজত নেতারা বলেছেন, ‘ইসকন শুধু উগ্রবাদী সংগঠন নয়। এটি রাষ্ট্রদ্রোহী সংগঠন। তাদের কার্যক্রম দেখে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী নয়। বিদেশী এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে ইসকন। তাই এদেরকে নিষিদ্ধ করে সকল কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে।’

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জুমার নামাজ শেষে হেফাজতের হাটহাজারী উপজেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

এ সময় হেফাজতের উপজেলা সভাপতি মুফতি মুহাম্মদ আলী কাসেমীর সভাপতিত্বে উপজেলা হেফাজতের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এমরান সিকদার ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আসাদুল্লাহ আসাদের যৌথ সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম মেহেদী, মাওলানা শফিউল আলম, নূর মোহাম্মদ, মাওলানা হাফেজ আব্দুল মাবুদ, মোরশেদ আলম, মাওলানা, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইসমাইল, হাফেজ আমিনুল হক, মাওলানা জাহাঙ্গীর জাফরাবাদী, মাওলানা শাহজাহান হাবিবী, আবু তাহের রাজিব, মাওলানা হাফেজ মহিউদ্দিন, মো: রাশেদ, মাওলানা ফোরকান আলী, মাওলানা হাফেজ সাইফুল ইসলাম, মাওলানা মো: জিয়াউল হক প্রমুখ।

সমাবেশে হেফাজত নেতারা দাবি করে বলেন, ‘ইসকন একটি আন্তর্জাতিক উগ্রবাদী সংগঠন। তারা আদালতের কাজে বাধা দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে হত্যা করে তার প্রমাণ দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের দাবি, দ্রুততম সময়ে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আইনজীবীকে হত্যা করার দায়ে হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে হবে। এ সময় দাবি আদায়ে আরো কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন বক্তারা।’

বক্তারা আরো বলেন, ‘গ্রেফতার হওয়া চিন্ময়কৃষ্ণ দাস ওরফে চন্দনধর একজন সাম্প্রদায়িক, ভূমিদস্যু ও দেশদ্রোহী। হাটহাজারী মেখলে পুন্ড্ররিকধামে ধর্মীয় আচার শিখানোর নামে সে শিশু-কিশোরদের যৌন নির্যাতন চালানোর অসংখ্য প্রমাণ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ হয়েছে। এছাড়া সেখানে পতিত ফ্যাসিস্টের লালিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা আশ্রয় নিয়েছে মর্মে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। এ সময় চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি নিশ্চিত করা এবং হাটহাজারী মেখল ইউনিয়নে অবস্থিত পুন্ড্ররিকধামে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনার দাবি জানান বক্তারা।

এছাড়া চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে ভারতের নিন্দা প্রকাশের সমালোচনা করে বক্তারা বলেন, ‘বাংলাদেশে কাকে গ্রেফতার করবে, কাকে ছাড়বে এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। এখানে ভিন্ন কোনো রাষ্ট্র মাথা ঘামানোর অধিকার রাখে না। একজন রাষ্ট্রদ্রোহীর পক্ষে কথা বলে ভারত এ দেশে ঔপনিবেশবাদ কায়েম করতে চায়।’

হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী উপজেলার সভাপতি মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ আলী কাসেমী বলেন, ‘এ দেশে আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজীর স্থাপন করেছি। অথচ ভারতে মুসলমানরা যুগ যুগ ধরে নির্যাতিত-নিষ্পেষিত। ভারত নিজের দোষ ঢাকতে এ দেশে সংখ্যালঘুর খেলা খেলতে চাইছে। বাংলার জমিনে এ খেলা কখনোই সফল হবে না, ইনশাআল্লাহ।’

সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এমরান সিকদার বলেন,‘বিতাড়িত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার বিভিন্ন চক্রান্তের মাধ্যমে এ দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে অনন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করে আবারো দেশে ঢোকার পায়তারা করছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই, আমাদের শরীরে এক বিন্দু রক্ত থাকতে তা হতে দেবো না।’

হেফাজত নেতারা আরো বলেন, ‘আমরা সবসময় শান্তির পক্ষে। আমরা চাই হিন্দু-মুসলমান মিলে সুন্দর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ি। কিন্তু উগ্রবাদী ইসকন এই শান্তির পথে বার বার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে নিতে হলে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’

হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ ভাই দিল্লিবিরোধী যুদ্ধের প্রথম শহীদ। আমরা মৃত্যুকে ভয় পাইনা। তার রক্ত বৃথা যেতে দিবো না। আলিফয়ের শাহাদাতের মাধ্যমে যে দাবানল জ্বলে উঠেছে তা দিল্লি পর্যন্ত গড়াবে।’

বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে ডাকবাংলো থেকে বাসস্ট্যান্ড ও কলেজ গেট হয়ে হাটহাজারী মাদরাসার সামনে এসে দোয়ার মাধ্যমে সমাবেশ শেষ করে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সার্বিক নিরাপত্তা দিতে দেখা যায়।

বরিশাল:
উগ্রবাদী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে : চরমোনাই পীর

উগ্রবাদী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে মন্তব্য করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই দরবারের পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেছেন, ‘দেশের এই পরিস্থিতিতে সকল দলকে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে ঐক্যের বিকল্প নেই। ইসলাম, দেশ ও মানবতার পক্ষে আওয়াজ তুললে বাতিল শক্তি পালাতে বাধ্য হবে।’

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে চরমোনাই মাহফিল ময়দানে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত ছাত্র গণজমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘বাংলাদেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের দেশ নিয়ে ভারতের সংসদে আলোচনা হবে কেন? আমরা কি স্বাধীন দেশের নাগরিক নই?’

তিনি বলেন, ‘হিন্দুরা এ দেশের নাগরিক। তাদের ভালো-মন্দ আমরা দেখবো। এটা নিয়ে ভারতে আলোচনা হবে কেন?’

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল বশর আজিজীর সভাপতিত্বে গণজমায়েতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাসির উদ্দীন, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নেছার উদ্দীন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট বরকত উল্লাহ লতিফ, অ্যাডভোকেট হাছিবুল ইসলাম, জি এম রুহুল আমীন, শেখ ফজলুল করীম মারুফ, শরিফুল ইসলাম রিয়াদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।

এ সময় লাখো মুসল্লির এই জুমার নামাজের ইমামতি ও খুতবা দেন শায়খে চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আখেরি বয়ানের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী এ মাহফিল শেষ হবে।

চরমোনাই মাহফিল মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য কে এম শরীয়াতুল্লাহ জানান, ‘মাহফিলে আসা মুসল্লিদের মধ্যে বৃহস্পতিবার দু’জন বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। পরে তাদের জানাজা শেষে মাহফিলের অস্থায়ী হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সে করে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

ঝিনাইদহ :
আইনজীবী আলিফ হত্যার বিচার ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে ঝিনাইদহে হেফাজতের বিক্ষোভ

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যার বিচার ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জুমার নামাজের পর শহরের পায়রা চত্বরে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সামাবেশ করা হয়।

এ সময় মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক ঘুরে পায়রা চত্বরে এসে বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

বক্তারা বলেন, ‘ইসকন উগ্রবাদী সংগঠন। তারা অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করেছে। এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও অবিলম্বে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’

সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন হেফাজতের জেলা সভাপতি মুফতি আরিফ বিল্লাহ, সদর সভাপতি মাওলানা আবুল বাশার, মুফতি শায়েখ জুবায়ের আহমেদ, মুফতি মনিরুজ্জামান, নাজমুল ইসলাম, মাওলানা বইজিদ খান, মাওলানা আশিকুর রহমান প্রমুখ।

বান্দরবান :
ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বান্দরবানে ইমাম-মুয়াজ্জিন ও মুসল্লিদের বিক্ষোভ সমাবেশ

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে বান্দরবানে বিক্ষোভ সামাবেশ করেছেন ইমাম-মোয়াজ্জিন ও মুসল্লিরা।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে জুমার নামাজের পর জেলা শহরের মসজিদগুলো থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সামাবেশে করা হয়।

এ সময় শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে শহীদ আবু সাঈদ মুক্ত মঞ্চে এসে বিক্ষোভ সামাবেশ করা হয়েছে।

মাওলানা আলাউদ্দিন ইমামীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন বাজার শাহী জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা এহেছানুল হক আল মঈন, ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদসহ প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের হত্যাকারীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এ সময় উগ্রবাদী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানান বক্তারা।

খুলনা :
‘উগ্রবাদী ও সাম্প্রদায়িক সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে’

উগ্রবাদী ও সাম্প্রদায়িক সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে মন্তব্য করে খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, ‘বাংলাদেশে উগ্রবাদী সংগঠন ইসকনের আমদানী করেছে পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইসকন আমদানী করে তিনি যেমন এদেশে থাকতে পারেননি তেমনি তার প্রতিষ্ঠিত ইসকনের জায়গাও এদেশে হবে না। ইসকনের কার্যক্রম সাম্প্রদায়িক। তারা প্রকাশ্যে মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।’

বক্তারা আরো বলেন, ‘৯৫ ভাগ মুসলমানের দেশে ইসকনের কার্যক্রম চলতে পারে না। আমরা ইসকনের বিরুদ্ধে বার বার কথা বললেও সরকার সজাগ হয়নি। এবার সর্বোচ্চ আদালতের দিকে তাকিয়ে আছি। আদালত যদি ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে আলেম সমাজ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।’

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) খুলনার ডাকবাংলা চত্বরে জুমার নামাজ শেষে জেলা ইমাম পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।

এ সময় ইমাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ সালেহের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এ এফ এম নাজমুস সউদ, মাওলানা নাসির উদ্দিন কাসেমী, মাওলানা আ ন ম আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস ও মাওলানা মুশতাক আহমেদ।

সমাবেশে বক্তারা চট্টগ্রামে প্রকাশ্যে কুপিয়ে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার বিচার দাবি করে বলেন, ‘অন্তবর্তী সরকার অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যার বিচার করতে ব্যর্থ হলে তৌহিদী জনতা এর জাবাব দিবে। তারা অবিলম্বে ইসকনকে নিষিদ্ধসহ আলিফ হত্যার বিচারের দাবি জানান।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া :
‘উগ্রবাদী ইসকনের অপতৎপরতা এ দেশে চলতে দেয়া যাবে না’

উগ্রবাদী ইসকনের অপতৎপরতা এ দেশে চলতে দেয়া যাবে না মন্তব্য করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে তৌহিদি জনতার বিক্ষোভ মিছিলে আলেমরা বলেছেন, ‘হিন্দুরা এদেশের নাগরিক। তারাও নিজ নিজ জায়গায় তাদের ধর্ম পালন করবে। এতে কারো কোনো আপত্তি নেই। তবে ইসকন নামে উগ্রবাদী সংগঠনের অপতৎপরতা এ দেশে আর চলতে দেয়া যাবে না। অবিলম্বে বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।’

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জুমার নামাজের পর সরাইল বিকাল বাজার শাহী জামে মসজিদ থেকে এ বিক্ষোভ মিছিল বের হয়।

এ সময় আলেমরা চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানান।

উপজেলার প্রধান সড়কে বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।

এ সময় মাওলানা শেখ আমান উল্লাহ, মাওলানা কুতুব উদ্দিন ও মাওলানা মঈনুল ইসলামসহ অসংখ্য আলেম ও তৌহিদি জনতা মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেয়।

ময়মনসিংহ :
ইসকনকে নিষিদ্ধ না করলে আরো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি আলেমদের

ইসকনকে নিষিদ্ধ না করলে আরো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি আলেমদের মন্তব্য করে
ঈশ্বরগঞ্জে আইনজীবী আলিফ হত্যা ও উগ্রবাদী সংগঠন ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে এক বিক্ষোভ সমাবেশে আলেমরা বলেছেন, ‘ইসকন কোনো হিন্দু সংগঠন নয়, ইসকন একটি উগ্রবাদী সংগঠন। চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যা ৫ আগস্টের পরবর্তী ষড়যন্ত্রের অংশ। তাই আলেমদের সতর্ক থাকতে হবে।’

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী উপজেলা শাখার উদ্যোগে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়।

ঈশ্বরগঞ্জ মার্কাজ মসজিদের সামনে থেকে মিছিলটি বের হয়ে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কসহ পৌর শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে শেষে উপজেলা পরিষদের সামনে সমাবেশ শেষে মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়।

এ সময় জামিয়া গাফুরিয়া দারুসসুন্নাহ ইসলামপুর মাদরাসার মোহতামিম ও ইত্তেফাকুল উলামা ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুফতি মাহমুদুল হক আযীযী মোনাজাত পরিচালনা করেন। এ সময় আলেম ও বিক্ষুব্ধ তৌহিদী জনতা অংশ নেয়।

আলেমরা বলেন, ‘অ্যাভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যা করে ইসকন ইসলামকে হত্যা করেছে, মুসলমানদের হত্যা করেছে। ইসলাম শান্তির ধর্ম তাই আমরা কোনো অশান্তি সৃষ্টি করতে চাই না।’

আলেমরা আরো বলেন, ‘আমাদের রক্ত জান্নাতের বিনিময়ে মহান আল্লাহ তায়াআলা কিনে নিয়েছেন সুতরাং মুসলমানদের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আমরা যেকোনো মুহূর্তে রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি। আমাদের ইতিহাস ভুলে গেলে চলবে না। মুসলমান কারো রক্তচক্ষুকে ভয় পায় না। এ সময় আলেমরা উগ্রবাদী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি জানান।’

নবীনগর :
ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে নবীনগরে বিক্ষোভ

চট্টগ্রামে সাবেক ইসকন নেতা চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের সমর্থকদের হামলায় অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহতের প্রতিবাদ ও ইসকনকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিক্ষোভ মিছিল করেছেন তৌহিদী জনতা।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) জুমার নামাজের পরে নবীনগর এস আর জামে মসজিদের সামনে থেকে এ মিছিল শুরু হয়। এ সময় পৌর শহরে ঘুরে আলীয়াবাদ গোল চত্বরে এসে প্রতিবাদসভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় বক্তব্য দেন মাওলানা এনামুল হক কুতুবী, মাওলানা বেলায়েত উল্লাহ, মাওলানা আমির হোসেন, মাওলানা মকবুল হোসেন, মাওলানা মেহেদী হাসান, জালাল উদ্দিন মনির, আবুল বাসার প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ‌‘চট্টগ্রামে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম হত্যাকারীদের গ্রেফতারের মাধ্যমে সঠিক বিচার করতে হবে। একইসাথে বাংলাদেশ থেকে ইসকনকে দ্রুত নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে।’

সভা শেষে আইনজীবী সাইফুল ইসলামের রূহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।

খাগড়াছড়ি :
আইনজীবী আলিফ হত্যার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ

চট্টগ্রামে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার বিচার ও ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে খাগড়াছড়ির পানছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরের দিকে সর্বস্তরের মুসলিম তৌহিদী জনতার উদ্যোগে পানছড়ি বাজার কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে একটি মিছিল বের হয়। এ সময় গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ঘুরে জিয়া স্কয়ারের সামনে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

পানছড়ি বাজার কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা দলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‌‘অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম হত্যায় জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে উগ্রবাদী ইসকনের সকল কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। ইসকন দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি।’

বক্তারা আরো বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসররা বেশ তৎপর। কোনোভাবে যেন আমাদের সৌহার্দ্য ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট না হয়, সে ব্যাপারে সকলকে সচেতন থাকতে হবে।’

এ সময় বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী পানছড়ি উপজেলা শাখার সেক্রেটারি হাফেজ মো: নুরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নুরুল কায়েশ শিমুল, বাজার উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম, ইসলামি আন্দোলনের সভাপতি মো: আবু বকর, উপজেলা মডেল মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা সাব্বির মাহমুদ রশিদী প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement