আন্দোলনকারীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের দাবি আহত স্বাধীনের
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৩
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থী আরাফাত রূপান্তর স্বাধীন (২০)। গত ৪ আগস্ট আন্দোলন চলাকালীন আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে স্বাধীন আহত হন। তবে তিনি মারা যাননি। অলৌকিকভাবে বেঁচে আছেন।
জানা গেছে, পাবনা সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের দ্বীপচর গ্রামের ব্যবসায়ী মো: শুকুর আলী ও গৃহিণী রুপালি বেগম দম্পতির ছেলে স্বাধীন এবং স্বাধীন সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র।
গত ৪ আগস্ট ১১টার পর এডওয়ার্ড কলেজ গেট থেকে বৈষম্যবিরোধী মিছিল শুরু হয়। পরে আন্দোলনকারীরা মিছিলটি নিয়ে পাবনা প্রেসক্লাবের পাশে আব্দুল হামিদ রোডের ট্রাফিক মোড়ে অবস্থান নেয়। দুপুর ১২টার দিকে সমাবেশ স্থলের উত্তর দিক থেকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা গুলি শুরু করে। এ সময় নিলয় ও জাহিদুল শহিদ হন। শহিদ জাহিদুলের লাশ উদ্ধারের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন স্বাধীন। আহত স্বাধীনকে প্রথমে বেসরকারি শিমলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখানে স্বাধীনের শরীর থেকে বুলেট বের করার পর তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্বাধীন বর্তমানে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এ ব্যাপারে আহত আরাফাত রূপান্তর স্বাধীন বলেন, ‘আমি প্রথম থেকেই কোটা সংস্কার আন্দোলনে সম্পৃক্ত ছিলাম। গত ৪ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে আমি এডওয়ার্ড কলেজ গেটে অবস্থান করি। তারপর বৈষম্যবিরোধী বিশাল মিছিল বের হয়ে পাবনা প্রেসক্লাবের পাশে অবস্থান করে। দুপুর ১২টার দিকে সমাবেশ স্থলের উত্তর পাশে সদর থানার দিক থেকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি চালায়। এ সময় নিলয় ও জাহিদুল শহিদ হন। আহত জাহিদুলকে উদ্ধার করতে গেলে একটি বুলেট এসে আমার বাম চোয়ালে লাগে। এ সময় আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। আন্দোলনরত সহযোদ্ধারা আমাকে উদ্ধার করে পাশের বেসরকারি শিমলা হাসপাতালে ভর্তি করে। এখানে আমার শরীর থেকে বুলেট বের করা হয়। এরপর রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি বলেন, বর্তমানে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে আমার চিকিৎসা চলছে। অর্নাস প্রথম বর্ষ পরীক্ষার জন্য পাবনায় এসেছি, পরীক্ষা দিচ্ছি। আমি আমার সুচিকিৎসা নিশ্চিতের এবং আন্দোলনকারীদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে আহত আরাফাত রূপান্তর স্বাধীনের বাবা মো: শুকুর আলী বলেন, ‘আমার ছেলে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়ায় আমি খুশি। আমার ছেলের মুখে গুলি লেগে পিছন দিক দিয়ে বের হয়ে গেছে। এভাবে গুলিবিদ্ধ হয়ে কেউ সাধারণত বাঁচে না। আমার ছেলে এমন গুলিবিদ্ধ হয়েও আল্লাহর রহমতে অলৌকিকভাবে বেঁচে আছে। সিএমএইচ এ চিকিৎসা হচ্ছে। আমাদের সন্তানেরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গিয়ে নিহত ও আহত হয়েছে। দেশে যেন আর কোনো বৈষম্য না থাকে এটাই আমার চাওয়া।’
সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মো: নূরুল আলম জানান, ‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত স্বাধীন আমাদের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র। সে এবার অনার্স প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থী এবং পরীক্ষা দিচ্ছে। আমার জানা মতে স্বাধীন নম্র ভদ্র একজন শিক্ষার্থী। আমরা তাকে সার্বিক সহযোগিতা করছি।’
সূত্র : বাসস