১১ অক্টোবর ২০২৪, ২৬ আশ্বিন ১৪৩১, ৭ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটে নৌ বাহিনী কর্মকর্তা নিয়োগে বিজ্ঞানীদের প্রতিবাদ

- ছবি : সংগৃহীত

দেশের একমাত্র সমুদ্র বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কক্সবাজারের বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (বোরি) মহাপরিচালক পদে নৌ বাহিনীর কর্মকর্তা কমডোর মো: মিনারুল হককে নিয়োগ দিয়ে গত ৭ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই খবর প্রকাশ হলে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক পদে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাকে নিয়োগের প্রতিবাদ জানিয়েছে সংস্থাটিতে কর্মরত সকল সমুদ্র বিজ্ঞানী ও কর্মচারিরা।

একইসাথে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটিতে শীর্ষ কর্মকর্তা পদে সংশ্লিষ্ট গবেষককে নিয়োগ দেয়া, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের পদোন্নতি ও পেনশন সুবিধা দেয়ার দাবি তুলেছেন। দাবি আদায় না হলে কর্মবিরতির মতো কর্মসূচিতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (বোরি) বিজ্ঞানী ও কর্মচারীরা।

বুধবার (৯ অক্টোবর) বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো এক স্মারকলিপিতে এই দাবি তুলে ধরেন তারা। স্মারকলিপিতে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির ৫২ জন বিজ্ঞানী ও কর্মচারী স্বাক্ষর করেছেন।

ছাত্র-জনতার বিপ্লবে নিজেদের পূর্ণ সমর্থন ছিল এবং চলমান রাষ্ট্র সংস্কারে নিজেদের একত্মতা রয়েছে জানিয়ে স্মারকলিপিতে তারা লিখেছেন, সম্প্রতি দেশে সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধান পরিবর্তন করা হচ্ছে, যা সরকারের একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। আমরা জানতে পেরেছি যে, বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে নৌ-বাহিনীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত এরকম জটিল ও নিবিড় সাইন্টিফিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানে একজন সামরিক কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হলে গবেষণা প্রতিষ্ঠান স্থবির হয়ে পড়বে এবং প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। বিধায় এই প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী একত্রিত হয়ে আবেদন জানাচ্ছি যে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানে মহাপরিচালক হিসাবে আমরা কোনো সামরিক কর্মকর্তা নিয়োগ চাই না। কোনো স্বনামধন্য বিজ্ঞানী, গবেষক, একাডেমিশিয়ান বা সিভিল প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা বা যোগ্য অন্য যেকোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ প্রদানে এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো আপত্তি নাই।’

সামরিক কর্মকর্তাকে গবেষণা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে জোর আপত্তি জানিয়ে স্মারকলিপিতে তারা আরো বলেন, ‘আমরা এই প্রতিষ্ঠানের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ আরো জোর দাবি জানাচ্ছি যে, এই প্রতিষ্ঠান স্থাপনের পর থেকে শূন্যপদ থাকা সত্ত্বেও এ পর্যন্ত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পদোন্নতি প্রদান করা হয়নি। তাছাড়া, নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হলেও বিদ্যমান অস্থায়ী/শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ করা হয়নি। প্রতিষ্ঠান সৃষ্টির পর থেকে অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী ব্লক পোস্টে কর্মরত আছে। এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো পেনশন সুযোগ নাই। তাছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জব সিকিউরিটি নাই। এ সকল দাবি পূরণের মাধ্যমে একটি স্বাভাবিক ও সহমর্মিতার পরিবেশ তৈরি করে দেশের স্বার্থে কাজ করার সুযোগ তৈরি করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’

দাবিগুলো পূরণ না হলে আন্দোলনসহ কর্মবিরতি পালন করতে আমরা বাধ্য হবেন বলেও স্মারকলিপিতে হুঁশিয়ারী দিয়েছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

M3M4M5


আরো সংবাদ



premium cement