যমুনা নদীতে নির্মাণাধীন রেলসেতুতে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলবে নভেম্বরে
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৪৩
যমুনা নদীর ওপর রেলওয়ে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করার পরিকল্পনা করছেন।
বুধবার রেলসেতু প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো: মাসুদুর রহমান এ কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘সেতুর প্রায় ৯৬ শতাংশ নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। চার দশমিক আট কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটিকে আমরা নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি পরীক্ষামূলকভাবে এবং ডিসেম্বর মাসে আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু করার লক্ষ্য নির্ধারণ করে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।’
তিনি জানান, দু’লাইন বিশিষ্ট ডুয়েল গেজ সেতুটি ডব্লিউডি-১ এবং ডব্লিউডি-২ প্যাকেজে নির্মিত হচ্ছে। এটি হবে দেশের বৃহত্তম রেলসেতু।
তিনি আরো বলেন, সেতুটির সম্ভাব্য মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, যার মধ্যে ১৩ হাজার কোটি টাকা মূল সেতু নির্মাণে এবং তিন হাজার কোটি টাকা সেতু নির্মাণ-সংক্রান্ত অন্যান্য কাজে ব্যয় হবে।
প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণে জানা যায়, মূল সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে এবং ডব্লিউডি-২ প্যাকেজের শেষ পর্যায়ের কাজ চলছে।
রেলওয়ে সেতুটি নির্মিত হলে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, রেলওয়ে সেতুটি যমুনা বহুমুখী সেতুর ওপর চাপ কমাবে। একই সাথে উত্তরাঞ্চল থেকে আসা কৃষি পণ্যের পরিবহন সহজ হবে এবং পরিবহন ব্যয় কমবে, যা দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং ওই অঞ্চলের সামাজিক জীবনেও প্রভাব ফেলবে।
গ্যাস লাইন সুবিধা সম্বলিত দু’লাইন বিশিষ্ট ডুয়েল গেজ সেতুটি এক লাইন বিশিষ্ট যমুনা সেতু থেকে প্রায় ৩০০ মিটার উজানে নির্মিত হচ্ছে।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন অ্যাজেন্সি (জাইকা) মোট ব্যয়ের ৭২ শতাংশ সহজ শর্তে ঋণ হিসেবে অর্থায়ন করছে। যৌথ মালিকানাধীন জাপানের দু’টি প্রতিষ্ঠান ২০১৬ সালে নেয়া প্রকল্পটির মূল নির্মাণকাজ সম্পন্ন করছে।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে নয় হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় এবং ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল।
২০২০ সালে প্রকল্পটির ভৌত অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ হয় এবং ২০২১ সালের মার্চ মাসে সেতুর ভিত্তি নির্মাণের কাজ শুরু হয়।
প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, ‘রেলসেতুটি যমুনা নদীর উভয় পাশের মধ্যে নিরবিচ্ছন্ন যোগাযোগ নিশ্চিত করবে। সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে সারাদেশের সাথে উত্তরাঞ্চলের যোগাযোগ আরো উন্নত হবে।’
তিনি আরো বলেন, দেশের মোট দেশীয় উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতেও রেলওয়ে সেতুটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এই প্রকল্প কর্মকর্তা জানান, রেলওয়ে সেতুটি রাজধানীর সাথে দেশের পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেন চলাচলে বাংলাদেশ রেলওয়ের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করবে। এ সেতু ট্রেন চলাচলের বিলম্বতাও কমাবে।
তিনি আরো বলেন, নতুন রেলসেতুটিতে প্রতিদিন ৮৮টি ট্রেন চলাচল করতে পারবে। যেখানে যমুনা সেতুর এক লাইনের ওপর দিয়ে ২২ টি ডুয়েল গেজ ট্রেন চলাচল করতে পারে।
সূত্র : বাসস