ভয়ঙ্কর চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে গাজার শিশুরা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৫:১৯
গাজায় ওয়াফা এলওয়ানের পাঁচ বছর বয়সী ছেলে ভয়ঙ্কর চর্মরোগের কারণে ঘুমাতে পারছে না। সেখানে তাঁবুতে সে এবং তার সাত সন্তান আশ্রয় নিয়েছে। উদ্বিগ্ন মা বললেন, ‘আমার ছেলে সারারাত ঘুমাতে পারে না কারণ তার শরীরের চর্মরোগের চুলকানি বন্ধ হচ্ছে না।’
ছেলেটির পায়ে এবং পায়ের পাতায় টি-শার্টের নিচে সাদা এবং লাল ফুসকুড়ি এবং স্ক্যাবিস থেকে চিকেন ফক্স, উকুন, ইমপেটিগো এবং অন্যান্য ফুসকুড়িতে ত্বকের সংক্রমণে ভুগছেন- এমন অনেক গাজাবাসীর মধ্যে তিনি একজন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, গত ৭ অক্টোবর ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে বাস্তুচ্যুত গাজাবাসীকে এমন খারাপ পরিস্থিতিতে থাকার জন্য বাধ্য করা হয়েছে। এই ভূখণ্ডের দেড় লাখেরও বেশি মানুষ চর্মরোগে আক্রান্ত হয়েছে।
এলওয়ান বলেছেন, ‘আমরা মাটিতে, বালিতে ঘুমাই, যেখান থেকে কীট বেরিয়ে আসে।’
তার পরিবার মধ্য গাজার শহর দেইর আল-বালাহে সমুদ্রের কাছে একটি বালুকাময় স্থানে বসবাসকারী হাজার হাজার বাসিন্দার মধ্যে একজন। এলওয়ান বিশ্বাস করেন সংক্রমণ অনিবার্য।
‘আমরা আগের মতো আমাদের বাচ্চাদের গোসল করাতে পারছি না। জায়গাটি ধোয়া ও পরিষ্কার করার জন্য আমাদের জন্য কোনো স্বাস্থ্যবিধি এবং স্যানিটারি পণ্য নেই। কিছুই নেই।’
‘অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বলতেন ভূমধ্যসাগরে ধুতে। কিন্তু, যুদ্ধের ফলে যে দূষণ তৈরি হয়েছে তা মৌলিক সুযোগ-সুবিধাগুলোকে ধ্বংস করে রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সমুদ্র পুরোটাই নর্দমা। তারা এমনকি আবর্জনা এবং শিশুর ন্যাপকিনও সমুদ্রে ফেলে।’
ডব্লিউএইচও গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ৯৬,৪১৭টি স্ক্যাবিস এবং উকুন, চিকেন ফক্সের ৯,২৭৪টি, ত্বকে ফুসকুড়ির ৬০,১৩০টি এবং ইমপেটিগোর ১০,০৩৮টি সংক্রমণের রিপোর্ট করেছে।
দেইর আল-বালাহ ক্যাম্পে একটি অস্থায়ী ক্লিনিক পরিচালনাকারী ফার্মাসিস্ট সামি হামিদের মতে, স্ক্যাবিস এবং চিকেন পক্স উপকূলীয় ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।
দুই ছেলে ক্লিনিকে তাদের হাতে, পায়ে, পিঠে এবং পেটে ছড়িয়ে থাকা চিকেন পক্স-জনিত ফোস্কা এবং স্ক্যাব দেখায়।
বাস্তুচ্যুত হামিদ (৪৩) নিজে ওষুধের অভাবে চুলকানি প্রশমিত করার জন্য ছেলেদের ত্বকে ক্যালামাইন লোশন মাখেন। শিশুরা ‘গরম আবহাওয়া ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে’ এই চর্মরোগে ভুগছে।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডারসের (এমএসএফ) গাজার মেডিক্যাল কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ আবু মুগাইসিব এএফপি’কে বলেছেন, শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে বসবাস করছে। কারণ ‘তারা শিশু, বাইরে খেলবে, যে কোনোকিছু স্পর্শ করবে, না ধুয়ে কিছু খাবে।’
আবু মুগাইসিব বলেন, গরম আবহাওয়া ঘাম বাড়ায় এবং ময়লা জমে যা ফুসকুড়ি এবং অ্যালার্জির কারণ। ঘামাচি হলে সংক্রমণ হয়।
তিনি বলেছেন, ‘মানুষ আর ঘরে থাকে না, সঠিক স্বাস্থ্যবিধি নেই’।
এমএসএফ ডাক্তাররা লেশম্যানিয়াসিসের মতো অন্যান্য ত্বকের অবস্থার আবির্ভাবকে ভয় পান, যা সবচেয়ে মারাত্মক আকার হতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা